আইপিএল ২০২০ নিলামে দলে খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় যোগ করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। প্যাট কামিন্স এবং ইয়ন মর্গ্যানের মতো প্লেয়ারের উপর মোটা টাকা খরচ করেছে শাহরুখের দল।
শুধু তাই নয়, এ বারে দলে রয়েছে আরও চমক। বরুণ চক্রবর্তীর মতো তরুণ রহস্য স্পিনারকে যেমন দলে নেওয়া হয়েছে, তেমন আবার মহারাষ্ট্রের প্রবীণ তাম্বের মতো আইপিএলের ইতিহাসে প্রবীণতম ক্রিকেটারকে নিয়েও চমকে দিয়েছে কেকেআর। ৪৮-এর এই স্পিনারকে ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দলে নিয়েছে নাইট রাইডার্স।
অন্য দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করে, মোটা টাকা খরচ করে যে সমস্ত ক্রিকেটার নিয়ে দল সাজিয়েছে নাইট রাইডার্স, তাতে দুবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নের (২০১২ ও ২০১৪) দিকে শুরুতেই পাল্লা বেশ ভারী। স্কোয়াডে রয়েছেন ২৩ জন ক্রিকেটার। তাঁদের মধ্যে থেকে কোন ১১ জনকে নিয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী দল বানাতে পারবে নাইট রাইডার্স? কেমন হতে পারে তাদের সেরা একাদশ? দেখে নেওয়া যাক।
সুনীল নারিন: বেশ কয়েক বছর ধরে নাইটদের অন্যতম ভরসার ক্রিকেটার। ক্যারিবিয়ান এই স্পিনার-অলরাউন্ডার নাইট রাইডার্সে থেকে গিয়েছেন সাড়ে ১২ কোটি টাকার বিনিময়ে। বোলার নারিনের পাশাপাশি ওপেনিংয়েও নারিন ঝড়ের দিকে তাকিয়ে থাকবে কেকেআর।
শুভমান গিল: পঞ্জাবের শুভমান গিলকে কলকাতা নাইট রাইডার্স রেখে দিয়েছিল ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। শুভমান দেশের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিশতরান করেছেন। নারিনের সঙ্গে ওপেনিংয়ে তাঁকে নামাতে পারে নাইট রাইডার্স।
নীতীশ রানা: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রানমেশিন বলে পরিচিত নীতীশ রানা। ২০১৮ সালে তাঁকে প্রথম দলে নেয় নাইট। দিল্লির এই অলরাউন্ডারকে কলকাতা নাইট রাইডার্স রেখে দিয়েছে ৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তিনি পার্টটাইম স্পিনারও।
ইয়ন মর্গ্যান: ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যানের নিলামে দর উঠেছে ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। তাঁকে রীতিমতো লড়াই করে ছিনিয়ে নিয়েছে কেকেআর। দলের চার নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যাবে তাঁকে। মিডল অর্ডারের ছক্কা হাঁকানো ব্যাটসম্যান তিনি।
দিনেশ কার্তিক: গত মরসুমের মতো দীনেশ কার্তিক এ বারও কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক থাকছেন। ভারতীয় এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের জন্য ৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে শাহরুখের দল। তাঁর দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই কর্তাদের মনে।
রাহুল ত্রিপাঠি: ২০১৮-১৯ মরসুমে রনজি ট্রফিতে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন মহারাষ্ট্রের রাহুল ত্রিপাঠি। আইপিএল-এ এর আগে তিনি পুণে এবং রাজস্থানের হয়ে খেলেছেন। এ বছর খেলবেন কলকাতার হয়ে। নিলামে তাঁর দর উঠেছিল ৬০ লক্ষ টাকা। তিনি ব্যাট করতে পারেন ছ’নম্বরে।
আন্দ্রে রাসেল: ইনি এমন একজন খেলোয়াড়, যাঁর আলাদা করে কোনও পরিচিতির দরকার নেই। সারা বিশ্বের যে কোনও টি২০ দলের কাছেই তিনি সম্পদ। তবে গত কয়েক মরসুম ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাতেই রয়েছে এই সম্পদ। ক্যারিবিয়ান এই অলরাউন্ডারকে নাইটরা রেখে দিয়েছিল সাড়ে ৮ কোটি টাকায়। তিনি থাকতে পারেন ৭ নম্বরে।
প্যাট কামিন্স: নিলামে ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার ভাইস ক্যাপ্টেনকে এ বার সাড়ে ১৫ কোটি টাকায় কিনে ফেলেছে নাইট রাইডার্স। ফলে পাঁচ বছর পরে আবার কলকাতার হয়ে খেলবেন তিনি। দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস অনেক যুদ্ধ করেও তাঁকে দলে নিতে পারেনি।
শিভম মাভি: গত মরসুমের মতো এ বারও শিবম মাভি খেলবেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। উত্তরপ্রদেশের এই তরুণ পেসারের উপর ভরসা রেখেছে দল। তাঁর জন্য ব্যয় করেছে মোট ৩ কোটি টাকা।
কুলদীপ যাদব: দলের স্পিন আক্রমণে নাইটদের অন্যতম প্রধান শক্তি এ বার কুলদীপ যাদব। তিনি খেলছেন ৫ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। গত বারে তাঁর পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল ছিল না। তা সত্ত্বেও কুলদীপের উপরে ভরসা রেখেছে দল।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ: দুই মরসুম আগে চোট পাওয়া কমলেশ নাগরকোটির বদলে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে মাঠে নামিয়েছিল নাইটবাহিনী। প্যাট কামিন্সের সঙ্গে তিনিও দলের হয়ে দুর্দান্ত পেসার হয়ে উঠবেন, আশা নাইট রাইডার্সের। তাঁকে ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রেখেছে দল।
এ ছাড়া নাইট দলে আর যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা হলেন কমলেশ নাগরকোটি, তামিলনাড়ুর এম সিদ্ধার্থ, পেসার হ্যারি গার্নি, মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যান সিদ্ধেশ লাদ, নিউজিল্যান্ডের বোলার লকি ফার্গুসন, মহারাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান ও উইকেটরক্ষক নিখিল নায়েক, কেরলের বোলার সন্দীপ ওয়ারিয়র, উত্তরপ্রদেশের ব্যাটসম্যান রিঙ্কু সিংহ, অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার ক্রিস গ্রিন এবং ব্রিটিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ক্রিকেটার টম ব্যান্টন।