২০১৮ সালের শেষে হঠাৎই টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে যায় একটা নাম। বরুণ চক্রবর্তী। কে তিনি? কেন তাঁকে বিশাল টাকায় কিনল পঞ্জাব?
৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় তাঁকে নিয়েছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। বিস্ময়-স্পিনারকে নিয়ে তৈরি হয় বিস্ময়। যদিও প্রথম ম্যাচে ৩৫ রান দিয়ে আর সুযোগ আসেনি খেলার। পরে আঙুলে চোটের জন্য বাড়ি ফিরে যেতে হয় আইপিএলের মাঝ পথেই।
ভেঙে পড়েছিলেন বরুণ। কর্ণাটকের বাড়িতে ফের গ্রাস করেছিল হতাশা। ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটে আকর্ষণ থাকলেও সুযোগ পেতেন না। দলে থাকার জন্য কখনও উইকেটকিপিং করেছেন, কখনও পেস বোলিং। সফল হতে পারছিলেন না কিছুতেই।
নিজেকে হঠাৎই আবিষ্কার করেন ‘গলি ক্রিকেট’-এ। ছ’টা বলের কোনওটা লেগস্পিন, কোনওটা অফস্পিন করছেন। সেই সঙ্গেই ফ্লিপার, ক্যারম বল, স্লাইডার ও টপস্পিন করতে পারছেন। স্পিনার হিসেবে তামিলনাড়ুর চতুর্থ ডিভিশনে খেলতে শুরু করেন বরুণ।
এমনই সময় মত বদল। হঠাৎই সিদ্ধান্ত নেন তিনি আর্কিটেক্ট হবেন। পাঁচ বছর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার পরে আর্কিটেক্ট হিসেবে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে শুরু করেন বরুণ।
যদিও মাঠ ছেড়ে বেশি দিন থাকতে পারেননি। ২০১৬-এ চাকরি ছেড়ে তামিলনাড়ুর দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলার সিদ্ধান্ত নেন। সেখান থেকেই তিনি নজর কাড়েন টিএনপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির। এর পরে সুযোগ আসে আইপিএলেও। কিন্তু শুরুতেই ব্যর্থতা হতাশ করে দেয় তাঁকে।
কথা বলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক দিনেশ কার্তিকের সঙ্গে। ব্যক্তিগত অনুশীলনে তিনি ডেকে পাঠান বরুণকে। বুঝতে পারেন, সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর মধ্যে। ক্রিকেট ছাড়তে বারণ করেন তাঁকে।
মূলত কার্তিকের উদ্যোগেই কেকেআরে বরুণ। কলকাতা বরাবরই বিস্ময়-স্পিনারদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে বাড়তি আগ্রহ দেখিয়েছে।
এবারের দলেও তাই সুনীল নারিন, কুলদীপ যাদবদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল বরুণ চক্রবর্তীকে।
দুই ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে নারিনদের পাশে থেকে বরুণ বুঝিয়ে দিলেন, এবারে তিনি অনেক বেশি পরিণত। ‘দাদা’ কার্তিকের মান রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর।