শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ২৮ রান। হায়দরাবাদ অধিনায়ক বল তুলে দিলেন ১৮ বছরের কাশ্মীরি ছেলেটির হাতে। সামনে অভিজ্ঞ ধোনি এবং ব্যাটে বলে ঝড় তোলা স্যাম কারেন। শুরুতে চাপে পড়ে গেলেও, ওভারের মাঝে ঠিক নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে, চেন্নাইকে আটকে জয় নিশ্চিত করেন আবদুল সামাদ।
কে এই আবদুল সামাদ? এবারের আইপিএলে দিল্লির বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে সামাদের। পারভেজ রাসুলের পর দ্বিতীয় কাশ্মীরি ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক ঘটে গত বছরের ডিসেম্বরে উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে।
সামাদের বাবা মহম্মদ ফারুক ছিলেন ভলিবল প্লেয়ার। পরবর্তী সময় শারীরিক শিক্ষার প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন। ভলিবল ছাড়াও ক্লাব লেভেলে ক্রিকেটও খেলেছেন ফারুক। বাড়িতে খেলাধূলার প্রচলন ছিলই। বাবার সুত্রেই তাই ছোটবেলাতেই সুযোগ আসে এমএ স্টেডিয়াম কোচিং সেন্টারে রণধীর সিংহ মানসের কাছে প্রশিক্ষণের।
রঞ্জিতে জম্মু কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি বেশ কিছু নতুন ক্রিকেটারের হদিশ দিয়েছে ভারতকে। পারভেজ রাসুল সুযোগ পেয়েছিলেন ভারতীয় দলের হয়েও। সামাদ নজর কাড়েন তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য।
১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ইতিমধ্যেই তাঁর সংগ্রহ ৫৯২ রান। রয়েছে দু’টি শতরান। স্ট্রাইক রেট ১১২.৯৭। এই স্ট্রাইক রেটই নজর কাড়ে হায়দরাবাদ দলের।
ব্যাটে যেমন রান রয়েছে, দলের প্রয়োজনে তাঁর লেগ ব্রেকও ভরসা জুগিয়ে এসেছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়েছেন চারটি উইকেট।
আবদুল সামাদকে খুঁজে পেয়েছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান। জম্মু কাশ্মীর দলের মেন্টর থাকার সময় তিনি বেশ কিছু নতুন প্লেয়ার খুঁজে আনেন। যাঁদের মধ্যে অন্যতম সামাদ।
২০ লক্ষ টাকায় তাঁকে আইপিএলে কিনে নেয় হায়দরাবাদ। তাঁকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল ন্ তা প্রথম চার ম্যাচেই বুঝিয়ে দেন তিনি।
চার ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র দুটো। করেছেন ৪৮ রান। স্ট্রাইক রেট ১৬৫.৫১। তিনটি লম্বা ছয় বুঝিয়ে দিয়েছে, সুযোগ পেলে তিনি ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন।
এই লড়াকু কাশ্মীরি তরুণ এবারের আইপিএলে নিজেকে মেলে ধরতে পারলে সুযোগ আসতে পারে ভারতীয় দলেও। আইপিএলে নিজেদের প্রমাণ করেই ভারতীয় দলে নিজেদের মেলে ধরেছেন হার্দিক, বুমরারা।