তিন উইকেট নিয়ে ব্যাঙ্গালোরের সফলতম বোলার চহাল। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
জেতার জন্য সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দরকার ছিল ১৬৪ রান। শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ১৫৩ রানে থামল তারা। বিরাট কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর জিতল ১০ রানে।
রান তাড়ার শুরুতেই অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে হারিয়েছিল হায়দরাবাদ। দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে রান আউট হন নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা ওয়ার্নার (৬)। দ্বিতীয় ওভারে ১৮ রানে পড়েছিল প্রথম উইকেট। সেখান থেকে দ্বিতীয় উইকেটে মণীশ পাণ্ডের সঙ্গে জনি বেয়ারস্টো যোগ করেন ৭১ রান। হায়দরাবাদের দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ৮৯ রানে। যুজভেন্দ্র চহালের বলে আউট হন মণীশ (৩৩ বলে ৩৪)।
বেয়ারস্টোর পঞ্চাশ আসে ৩৭ বলে। ১৪ ওভারের শেষে সানরাইজার্সের রান ছিল দুই উইকেটে ১০৮। ফলে, ৩৬ বলে দরকার ছিল ৫৬ রান। হায়দরাবাদের তৃতীয় উইকেট পড়ল ১২১ রানে।চহালের চতুর্থ ওভারে বোল্ড হলেন বেয়ারস্টো (৪৩ বলে ৬১)। যাতে ছিল ছয়টি চার ও দুটো ছয়। তৃতীয় উইকেটে প্রিয়ম গর্গের সঙ্গে বেয়ারস্টো যোগ করেছিলেন ৩২ রান। বেয়ারস্টো যখন ফিরলেন তখন সানরাইজার্সের ২৮ বলে দরকার ছিল ৪৩ রান। পরের বলেই চহালের গুগলিতে বোল্ড বিজয় শঙ্কর (০)। হ্যাটট্রিকের সামনে ছিলেন চহাল। কিন্তু হ্যাটট্রিক হয়নি। তবে মাত্র ১৮ রানে তিন উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচে ফেরালেন ব্যাঙ্গালোরকে। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি হায়দরাবাদ।
পরের ওভারে ফিরলেন প্রিয়ম গর্গও। তিনি বোল্ড হলেন শিবম দুবের বল ব্যাটে লাগিয়ে স্টাম্পে টেনে এনে। (১৩ বলে ১২)। ওই ওভারেরই শেষ বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন অভিষেক শর্মা (৭)। শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ২৯ রান। কিন্তু ১৮তম ওভারে নবদীপ সাইনির বলে বোল্ড হলেন ভুবনেশ্বর কুমার (০) ও রশিদ খান (৬)।
মিচেল মার্শের চোট এই ম্যাচে ভোগাল হায়দরাবাদকে। বোলিংয়ের সময় চার বলের বেশি করতে পারেননি তিনি। ব্যাট করতে নামলেন আট উইকেট পড়ার পর। বোঝাই যাচ্ছিল অস্বস্তি হচ্ছে। প্রথম বলেই লোপ্পা ক্য়াচ দিয়ে ফিরলেন তিনি। শিবমের বলে তাঁর ক্যাচ ধরলেন কোহালি। শেষ ওভারে ডেল স্টেন ফেরালেন সন্দীপ শর্মাকে (৯)। দুই বল বাকি থাকলে শেষ হল হায়দরাবাদের লড়াই। তবে জিতলেও আরসিবির ফিল্ডিং নিয়ে প্রশ্ন থাকল। বেশ কয়েকবার ক্যাচ পড়ল। ডিআরএস নেওয়ার ক্ষেত্রেও মুন্সিয়ানার অভাব থাকল বিরাট কোহালির সিদ্ধান্তে।
আরও পড়ুন: ট্র্যাজিক হিরো হয়েই মাঠ ছাড়তে হল ময়াঙ্ককে
আরও পড়ুন: আম্পায়ারের ‘ওয়ান শর্ট’ রানের সিদ্ধান্তে শুরু বিতর্ক
টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সানরাইজার্স অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। এর আগে প্রতিযোগিতার প্রথম দুই ম্যাচেও টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চেন্নাই ও পঞ্জাব। সেই পথেই হেঁটেছিলেন ওয়ার্নার। বিরাট কোহালির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৬৩ রান। এক সময় মনে হচ্ছিল ১৮০ রানের কাছাকাছি পৌঁছবে স্কোর। কিন্তু তা হয়নি। মাঝের ওভারে আটকে গিয়েছিলেন আরসিবি ব্যাটসম্যানরা।
প্রথম উইকেটেই বড় রানের ভিত গড়েছিলেন দুই ওপেনার দেবদূত পাদিকাল ও অ্য়ারন ফিঞ্চ। ১০ ওভারে দু’জনে যোগ করেছিলেন ৮৬ রান। আরসিবি-র প্রথম উইকেট পড়েছিল ৯০ রানে। বিজয় শঙ্করের বলে ৪২ বলে ৫৬ করে ফিরেছিলেন পাদিকাল। বাঁ-হাতির এটাই ছিল কেরিয়ারের প্রথম আইপিএল ম্যাচ। হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে তিনি নিয়েছিলেন ৩৬ বল। তাঁর ইনিংসে ছিল আটটি চার। সঙ্গে সঙ্গেই ফিরেছিলেন ফিঞ্চ (২৭ বলে ২৯)। দুই ওপেনারকে আউটের পর লড়াইয়ে ফিরেছিল সানরাইজার্স।
এর পর তৃতীয় উইকেটে বিরাট কোহালি ও এবি ডিভিলিয়ার্স যোগ করেছিলেন ৩৩ রানে। কিন্তু কোহালিও বেশিক্ষণ থাকেননি। নটরাজনের বলে বড় শট নিতে গিয়ে ১৩ বলে ১৪ করে ফিরেছিলেন তিনি। ১২৩ রানে পড়েছিল তৃতীয় উইকেট। সেখান থেকে টেনেছিলেন সেই ডিভিলিয়ার্স। তাঁর পঞ্চাশ এসেছিল ২৯ বলে। ৩০ বলে ৫১ করে রান আউট হয়েছিলেন তিনি। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি চার ও দুটো ছয়।