ক্রিস ডোনাল্ডসন। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
কলকাতার সংসারে এ বার অলিম্পিক স্প্রিন্টার!
দীনেশ কার্তিকের দলে স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ হিসেবে এসেছেন ক্রিস ডোনাল্ডসন। ৪৫ বছর বয়সি নিউজিল্যান্ডের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন ১৯৯৬ ও ২০০০ অলিম্পিকে। ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালে কমনওয়েলথ গেমসেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসে ১০০মিটার ও ২০০ মিটারে তিনি হয়েছিলেন সপ্তম। ১৯৯৭ সালে গ্রিসে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ২০০ মিটারে উঠেছিলেন সেমিফাইনালে। ২০০৫ সালে ৪০০ মিটার রিলে রেসে ডালাস রবার্টস, ডেভিড ফালেলিলি ও জেমস ডলফিনের সঙ্গে ডোনাল্ডসেনের গড়া জাতীয় রেকর্ড নিউজিল্যান্ডে এখনও অটুট।
বিখ্যাত হলিউডি পরিচালক রজার ডোনাল্ডসনের ছেলে এখন কলকাতা নাইট রাইর্ডাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিনদের শেখাচ্ছেন দ্রুত দৌড়নোর রকমারি কৌশল। একসময় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তখন কিউয়িদের অধিনায়ক ছিলেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ২০১৫ সালে সেই জুটির সময় বিশ্বকাপে রানার্স হয়েছিল ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’রা। কলকাতার প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়ে ম্যাকালাম তাই ডেকেছিলেন তাঁকে। ক্রিস ডোনাল্ডসন সেই প্রস্তাবে না বলেননি।
কী শেখাচ্ছেন তিনি? আবু ধাবি থেকে তিনি বলেছেন, “ফিল্ডিং থেকে শুরু করে সীমানায় পৌঁছে ডাইভ দিয়ে বল থামানো, রান আউট করার মতো বিষয়গুলোর ক্রিকেটে বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রথম দুই মিটার দৌড়নোর সময় কতটা গতি বাড়ানো যায়, সেটা অনেক তফাত গড়ে দেয়। আমরা এটা নিয়েই খাটছি।” কেকেআরের উইকেটের মাঝে দৌড়, বোলারদের রান-আপ, ইত্যাদিতেও তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলে আশাবাদী তিনি। ডোনাল্ডসন বলেছেন, “আমূল পরিবর্তন করতে চাইছি না। কারণ, এখানে যারা আছে, তারা সবাই নিজের কাজে খুব দক্ষ। কিন্তু ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড সমস্ত ধরনের মুভমেন্টের সঙ্গে জড়িত। মানুষের নড়াচড়া ও লাফানোর সঙ্গে এটা যুক্ত। যে স্কিলগুলো আমি শিখেছি, তা কাজে লাগাতে পারব বলে মনে করছি সেই কারণেই। দৌড়নোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকলে আমি সাহায্যে আসতেও পারব। রান-আপকে আরও কার্যকরী করে তুলতে পারব। ল্যান্ডিংয়ের সময় বায়ো-মেকানিক্সের দিকেও লক্ষ্য রাখতে পারব।”
আরও পড়ুন: এই আইপিএল ক্রিকেটারদের কাছে অগ্নিপরীক্ষা, বলছেন লক্ষ্মণ
আরও পড়ুন: ‘আইপিএলে ভাল করলে তা লোকের চোখে পড়বেই’
নাইট শিবিরের তরুণ পেসার শিবম মাভি বলেছেন, “দারুণ সব এক্সারসাইজ করাচ্ছেন উনি।” আর এক পেসার কমলেশ নাগারকোটি বলেছেন, “একবার তাকিয়েই উনি বলে দিতে পারেন কার কোথায় শক্তি আর কোন জায়গায় জোর দিতে হবে।”
কেকেআর এর আগেও ক্রিকেটের বাইরের ক্ষেত্র থেকে সাপোর্ট স্টাফ এনেছে। স্পোর্টস সাইকোলজিস্ট ও প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার রুডি ওয়েবস্টার ২০১২ সালে মেন্টাল স্কিলস কোচ হয়ে এসেছিলেন। সে বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মানো সুইস অভিযাত্রী মাইক হর্নও যুক্ত ছিলেন দলের সঙ্গে। সে বারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শাহরুখের ফ্র্যাঞ্চাইজি।
দায়িত্ব নেওয়ার পর কোভিডের কারণে থমকে গিয়েছিল ক্রিকেটের দুনিয়া। ডোনাল্ডসন তখন জুম কলে এমন সেশন দিতেন যা হোটেলের ঘরে বা বাড়িতে বসেই করা যায়। লক্ষ্য ছিল, লকডাউনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যেন ছন্দে ফিরতে সময় না লাগে। কলকাতার মেন্টর অভিষেক নায়ার ওয়েবসাইটে বলেছেন, “ইন্ডোরে সময় কাটানোর সময় এই ওয়ার্ক আউটগুলো দারুণ কাজে এসেছে।” আর স্বয়ং ডোনাল্ডসন বলেছেন, “লকডাউনের শেষের দিকে ক্রিকেটাররা একেবারে তৈরি হয়ে উঠেছিল। আমরা অনেক হোমওয়ার্ক দিয়েছিলাম ওদের যাতে ক্রিকেটীয় ও শারীরিক দিক দিয়ে ওরা শক্তপোক্ত থাকে।”