IPL 2020

সেরা অশ্বিন, রাজস্থান রয়্যালসকে ৪৬ রানে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এল দিল্লি ক্যাপিটালস

শ্রেয়াস আয়ারের দিল্লি ক্যাপিটালস জিতল ৪৬ রানের বড়সড় ব্যবধানে। একইসঙ্গে ছয় ম্যাচে ১০ পয়েন্টে উঠে এল তালিকার শীর্ষে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শারজা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ১৯:২৪
Share:

ম্যাচের সেরা অশ্বিনকে অভিনন্দন সতীর্থদের। ছবি: আইপিএল।

দুশোর বেশি টার্গেট ছিল না। শারজার ছোট মাঠে করতে হত ১৮৫। কিন্তু তার পরও ধুঁকতে দেখা গেল রাজস্থান রয়্যালসকে। ১৯.৪ ওভারে ১৩৮ রানে শেষ হল লড়াই। শ্রেয়াস আয়ারের দিল্লি ক্যাপিটালস জিতল ৪৬ রানের বড়সড় ব্যবধানে। একইসঙ্গে ছয় ম্যাচে ১০ পয়েন্টে উঠে এল তালিকার শীর্ষে।

Advertisement

রান তাড়ায় রাজস্থানের ইনিংসে প্রথম আঘাত হেনেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মাঁকড়ীয় নয়, এ বার অন্য ভাবে জস বাটলারকে ফেরালেন তিনি। অফস্পিনারকে মারতে গিয়ে স্কোয়ার লেগে ক্যাচ তুলেছিলেন ওপেনার। যা ধরেছিলেন শিখর ধওয়ন। ৮ বলে ১৩ করে আউট হয়েছিলেন বাটলার। ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারে এক উইকেট হারিয়ে উঠেছিল ৪১।

তিনে নামা অধিনায়ক স্টিভ স্মিথও বেশিক্ষণ থাকেননি। নর্তিয়ের বলে ডিপ স্কোয়ার মিডউইকেটে সামনে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় তাঁর ক্য়াচ ধরলেন শিমরন হেটমায়ার। ১৭ বলে ২৪ রান করে ফিরেছিলেন স্মিথ। ৮.১ ওভারে ৫৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছিল রাজস্থান।

Advertisement

রাজস্থানের তৃতীয় উইকেট পড়েছিল ১০.৩ ওভারে, ৭২ রানে। চারে নামা সঞ্জু স্যামসন (৯ বলে ৫) এই ম্যাচেও রান পেলেন না। প্রথম দুই ম্যাচে রানের পর তাঁর ব্যাট শান্তই থাকল এখনও পর্যন্ত। মার্কাস স্টোয়নিসের বলে হেটমায়ারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন তিনি। চতুর্থ উইকেট পড়েছিল এর পরই। ১১.২ ওভারে দলীয় ৭৬ রানে ফিরেছিলেন মহীপাল লোমরোর (২ বলে ১)। অশ্বিনের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে শর্ট কভারে অক্ষয় প্যাটেলকে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। চার ওভারে ২২ রানে দুই উইকেট নিয়েছিলেন অশ্বিন।

দুই উইকেট নিলেন স্টোয়নিসও। বাঁ-হাতি ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল একদিক আগলে রেখে টানছিলেন দলকে। কিন্তু মারতে গিয়ে স্টোয়নিসকে উইকেট দিলেন তিনি। ৩৬ বলে ৩৪ করে হলেন বোল্ড। ১২.১ ওভারে ৮২ রানে পড়ল রাজস্থানের পঞ্চম উইকেট। পরের ওভারে পড়ল ষষ্ঠ উইকেট। অক্ষর প্যাটেলের বলে কাগিসো রাবাদাকে ক্যাচ দিলেন অ্যান্ড্রু টাই (৬ বলে ৬)। ৯০ রানে ষষ্ঠ উইকেট পড়ার পর সপ্তম উইকেট পড়েছিল ১০০ রানে। রাবাদার বলে শ্রেয়াস আয়ারকে ক্য়াচ দিলেন জোফ্রা আর্চার (৪ বলে ২)।

এই পরিস্থিতি থেকে লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন রাহুল তেওয়াটিয়া। কিন্তু, শেষ ওভারে ৪৯ রান তোলা অসম্ভব ছিল। আর রাবাদার প্রথম ডেলিভারিই মারতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনলেন তিনি। ২৯ বলে ৩৮ রানে ফিরলেন তিনি। ১৩৬ রানে পড়ল রাজস্থানের নবম উইকেট। দশম উইকেট পড়ল কয়েক বল পরে। রাবাদার বলে উইকেটকিপার ঋষভ পন্থকে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন বরুণ অ্যারন (২ বলে ১)। দিল্লির সফলতম বোলার রাবাদা (৩-৩৫)। তবে অশ্বিন-স্টোয়নিসই মাঝের পর্বে ভাঙন ধরিয়েছিলেন।

তার আগে দিল্লি ক্যাপিটালস আট উইকেট হারিয়ে থেমে গিয়েছিল ১৮৪ রানে। জোফরা আর্চার-সহ বাকিদের দুরন্ত বোলিংয়ে দুশোর আগেই আটকে গেল ইনিংস। টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। ফলে, শারজায় প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল শ্রেয়াস আয়ারের দিল্লি ক্যাপিটালস। কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা। দ্বিতীয় ওভারে জোফ্রা আর্চারের বলে যশস্বী জয়সওয়ালকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন শিখর ধওয়ন (৪ বলে ৫)।

আর এক ওপেনার পৃথ্বী শ (১০ বলে ১৯) ফিরেছিলেন পঞ্চম ওভারে। তিনিও আর্চারের শিকার। বোলারকেই লোপ্পা ক্যাচ দিয়েছিলেন পৃথ্বী। ৪২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছিল দিল্লি। এর আগে পড়েছিল পৃথ্বীর ক্যাচ। বরুণ অ্য়ারনের বলে ফাইন লেগে কার্তিক ত্যাগী ফেলেছিলেন তাঁকে। কিন্তু, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না পৃথ্বী।

দিল্লির তৃতীয় উইকেট পড়েছিল ৫০ রানে। অধিনায়ক শ্রেয়াস আয়ার (১৮ বলে ২২) রান আউট হয়েছিলেন। যশস্বীর সরাসরি থ্রোয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারে দিল্লি তিন উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ৫১।

আরও পড়ুন: আইপিএলে খারাপ ফর্মে ধোনি, কন্যা জিভাকে ধর্ষণের হুমকি

আরও পড়ুন: সবচেয়ে বড় ফ্যান, রাহুল ত্রিপাঠিকে দেখিয়ে শাহরুখকে বললেন কার্তিক, দেখুন ভিডিয়ো​

দিল্লির চতুর্থ উইকেট পড়েছিল ৭৯ রানে, ৯.৪ ওভারে। শ্রেয়াসের পর ফের রান আউট হলেন ঋষভ পন্থ (৯ বলে ৫)। শর্ট মিড উইকেটে বল ঠেলেছিলেন মার্কাস স্টোয়নিস। নন-স্ট্রাইকার প্রান্ত থেকে এগিয়ে গিয়েছিলেন পন্থ। আর ফিরতে পারেননি ক্রিজে। ১০ ওভারের শেষে বোর্ডে উঠেছিল ৮৭ রান।

এই অবস্থায় দিল্লির ইনিংসের দায়িত্ব পড়েছিল স্টোয়নিসের উপর। পাঁচে নেমে সহজাত মেজাজে দলকে টানছিলেন তিনি। কিন্তু, রাহুল তেওয়াটিয়ার শেষ ওভারে সহজ ক্যাচ দিলেন স্মিথকে। ৩০ বলে ৩৯ করে ফিরেছিলেন তিনি। ১০৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছিল দিল্লি। মাঝের ওভার গুলোয় লেগস্পিনার রাহুল তেওয়াটিয়া আগাগোড়া চাপে রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানদের। তাঁর চার ওভারে উঠল মাত্র ২০ রান। স্টোয়নিসের মূল্যবান উইকেটও নিলেন তিনি।

শারজা মানেই ছোট মাঠ। আর বড় স্কোর। এ বার গড় স্কোর দুশোরও বেশি। তাই ফের ২০০ রানের খেলা হতে পারে বলে মনে করছিল ক্রিকেটমহল। কিন্তু, দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউ বড় রান পেলেন না। ছয়ে নামা শিমরন হেটমায়ার (২৪ বলে ৪৫) চালাচ্ছিলেন ভাল। কিন্তু, তিনিও পঞ্চাশের এ পাশে থেমে গেলেন। কার্তিক ত্যাগীকে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন সীমানায়। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসে ছিল পাঁচটি ছয় ও একটি চার। ১৪৯ রানে পড়েছিল দিল্লির ষষ্ঠ উইকেট।

সপ্তম উইকেটে ৩২ রান য়োগ করে অক্ষর পটেল ও হর্ষল পটেল এর পর ভদ্রস্থ করেন ইনিংস। অক্ষর (৮ বলে ১৭) ফিরলেন দলীয় ১৮১ রানে, টাইয়ের বলে। হর্ষল ফিরলেন (১৫ বলে ১৬) ১৮৩ রানে। দিল্লি শেষ ওভারে তুলল মাত্র তিন রান। জোফরা আর্চার যথারীতি সফলতম বোলার। চার ওভারে ২৪ রানে তিন উইকেট নিলেন তিনি।

এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালস পাঁচ ম্যাচের মধ্যে জিতেছিল চারটিতে। আট পয়েন্টে তারা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। জিতে তারা উঠে এল একে। অন্যদিকে, রাজস্থান রয়্য়ালস পাঁচ ম্যাচে জিতেছিল মাত্র দুটিতে। চার পয়েন্টে তারা ছিল সাতে। হারের পর তারা সাতেই থাকল।রাজস্থান রয়্যালস দলে দুটো পরিবর্তন হয়েছিল। বরুণ অ্যারন ও অ্যান্ড্রু টাই এসেছিলেন দলে। বাদ পড়েছিলেন অঙ্কিত রাজপুত ও টম কুরান। দিল্লি ক্যাপিটালস দলে অবশ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে, অজিঙ্ক রাহানেকে বসে থাকতে হয়েছিল ডাগ আউটেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement