আইপিএলে প্রথম উইকেট নেওয়ার পরে তুষার দেশপাণ্ডে।অভিষেক ম্যাচে নজর কাড়লেন।
পারল না রাজস্থান রয়্যালস। দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ১৩ রানে হার মানতে হল স্টিভ স্মিথের দলকে। এই ম্যাচ জিতে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় ফের শীর্ষে দিল্লি। এক সময়ে এক নম্বরেই ছিল শ্রেয়াস আইয়ারের দল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হেরে দু’নম্বরে নেমে গিয়েছিল তারা। দুবাইয়ে জয়ের ফলে হারানো জায়গা আবার ফিরে পেলেন শিখর ধওয়নরা।
৯ অক্টোবর দিল্লির কাছে ৪৬ রানে হেরে গিয়েছিল রাজস্থান। সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ ছিল স্টিভ স্মিথদের। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ জিতে নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল রাজস্থান শিবির। কিন্তু দিল্লির ১৬১ রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান থামল ১৪৮ রানে।
টস জিতে এ দিন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি অধিনায়ক। ম্যাচের দ্বিতীয় অর্ধে পিচ মন্থর হতে পারে। সেই কারণে প্রথমে ব্যাট নেয় দিল্লি।
জোফ্রা আর্চার শুরু থেকেই গতির ঝড় তোলেন। ম্যাচের প্রথম বলেই পৃথ্বী শ-র উইকেট ভাঙেন তিনি। ব্যাট ও প্যাডের মধ্যে অনেকটাই ফাঁক ছিল পৃথ্বীর। গতির বিরুদ্ধে দিল্লি ওপেনারের দুর্বলতা প্রকট হল। প্রথম বলে দিল্লির ওপেনারকে ফেরানোর পরে বিহু নেচে উদযাপন করলেন ইংল্যান্ডের পেসার।
আরও পড়ুন: দলে এক স্পিনার, আইপিএলে বিদেশিদের নিয়ে তৈরি সেরা একাদশে নেই নারিন-রাসেল
নিজের দ্বিতীয় ওভারে দিল্লির ইনিংসে ফের আঘাত হানেন আর্চার। তাঁকে মারতে গিয়ে উথাপ্পার হাতে ধরা পড়েন অজিঙ্ক রাহানে (২)। পর পর দু' উইকেট হারিয়ে চাপ অনুভব করতে শুরু করে দিল্লি। কিন্তু বহু যুদ্ধের দুই সৈনিক ধওয়ন ও শ্রেয়াস দিল্লির ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার কাজ শুরু করেন। ধওয়ন ৩৩ বলে ৫৭ রান করে আউট হন শ্রেয়াস গোপালের বলে। ক্রিজে জমে যাওয়ার পরে ধওয়ন কেন যে রিভার্স সুইপ করতে গেলেন, তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। সেই সময়ে দলের প্রয়োজন ছিল তাঁকে। অথচ বাঁ হাতি ওপেনার নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন। শ্রেয়াস আইয়ার ৪৩ বলে ৫৩ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন। কার্তিক ত্যাগী ফেরান তাঁকে। শেষের দিকে মার্কাস স্টোইনিস (১৮) ও ক্যারি (১৪) দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে দিল্লি করে সাত উইকেটে ১৬১ রান। ৪ ওভার বল করে আর্চার নেন ৩টি উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন রাজস্থানের দুই ওপেনার জস বাটলার ও বেন স্টোকস। নরতিয়ের বলে বোল্ড হন বাটলার (২২)। অশ্বিনের স্লোয়ারে ঠকে যান অধি্নায়ক স্মিথ (১)। স্টোকস ও সঞ্জু স্যামসন ৪৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। অভিষেক ম্যাচে খেলতে নেমে তুষার দেশপাণ্ডে নজর কাড়েন। নিজের প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন বেন স্টোকসকে (৪১)। অন্য দিকে অক্ষর পটেল বোল্ড করেন সঞ্জু স্যামসনকে (২৫)। উথাপ্পার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন রিয়ান পরাগ (১)। শেষ ২ ওভারে জেতার জন্য রাজস্থানের দরকার ছিল ২৫ রানে। ১৯ তম ওভারে রাবাদা দেন কেবল ৩ রান। আউট করেন বিপজ্জনক আর্চারকে (১)।
শেষের দিকে বড় শট খেলতে দক্ষ আর্চার। ব্যাটে বলে ঠিকঠাক হলে তাঁর শটগুলো আছড়ে পড়ে গ্যালারিতে। রাবাদার অভিজ্ঞতার কাছে এ দিন তাঁকে হার মানতে হল। এ বারের টুর্নামেন্টে রাহুল তেওয়াটিয়া অসম্ভবকে সম্ভব করে রাজস্থানকে জয় এনে দিয়েছিলেন। এ দিন ১৪ রানে অপরাজিত থাকলেন। কিন্তু জেতাতে পারলেন না দলকে। শেষ ওভারে রাজস্থানের দরকার ছিল ২২ রান। তুষার দেশপাণ্ডে রান আটকে রেখে দিল্লিকে এনে দিলেন জয়। শেষ ওভারে শ্রেয়াস গোপালের উইকেটও নিলেন তিনি। তাঁর ওভার থেকে আসে মাত্র ৮ রান। এই জয় কতটা মধুর তা দিল্লি কোচ রিকি পন্টিংয়ের শরীরী ভাষা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।