ছবি: পিটিআই।
অনেক আশা জাগিয়ে শুরু হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের আইপিএল অভিযান। কিন্তু শেষ হল, টি এস এলিয়টের ভাষায় যাকে বলে, ‘‘সাড়া জাগিয়ে নয়, মিনমিন করে।’’
প্রথম ১০ ম্যাচে সাতটাতে জয় পাওয়ার পরে মনে হচ্ছিল, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার জন্য আমরা পুরোপুরি তৈরি। এও মনে হচ্ছিল, এ বার হয়তো কাঙ্ক্ষিত আইপিএল ট্রফিটা আরসিবি জিততে পারবে। ২১ অক্টোবর আমরা আট উইকেটে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারিয়েছিলাম। তার পর থেকে পাঁচটা ম্যাচ খেলেছি। পাঁচ বার টস হেরেছি, পাঁচ বার আগে ব্যাট করেছি। পাঁচ বারই প্রত্যাশিত রান তুলতে পারিনি স্কোরবোর্ডে। আর পাঁচটা ম্যাচেই হেরে গিয়েছি। এর পরে হতাশায় ডুবে যাওয়াই স্বাভাবিক।
এলিমিনেটরে সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ভাল লড়াই হয়েছিল। প্রায় সমান-সমান অবস্থায় থাকা ম্যাচটা কয়েকটা ব্যাপারের জন্য ঘুরে গেল। আমরা ধরে রেখেছিলাম, আবু ধাবির মন্থর পিচে ১৪০ রান যথেষ্ট হবে। কিন্তু ১৩১ রানের বেশি করতে পারিনি। তার পরেও আমাদের তিন স্পিনার— যুজ়বেন্দ্র চহাল, ওয়াশিংটন সুন্দর এবং অ্যাডাম জ়াম্পা দারুণ বল করে আরসিবিকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল।
রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় চাপে পড়ে গিয়েছিল হায়দরাবাদ। সেই সময়েও ম্যাচটা যে কোনও দিকে যেতে পারত। কিন্তু দু’জন আন্তর্জাতিক অধিনায়কের ঠান্ডা মাথা এবং দক্ষতা হায়দরাবাদকে জিতিয়ে দেয়। কেন উইলিয়ামসন এবং জেসন হোল্ডার। এই দু’জনের জন্য হায়দরাবাদ এখনও ফাইনালের লড়াইয়ে আছে। আর আমরা বাড়ির পথে চললাম।
দিনের পরে যেমন রাত আসে, আমাদের পারফরম্যান্সের পরেও তেমন সমালোচনার ঝড় এসেছে। আমাদের মাঝের দিকের ব্যাটিং এবং শেষের দিকের বোলিং নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। তবে এটা মাথায় রাখা উচিত যে, ২০১৬ সালের পরে আমরা প্রথম প্লে-অফে উঠলাম। দল হিসেবেও আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি। সাইমন কাটিচের কোচিংয়ে আমাদের প্রস্তুতিটাও দারুণ হয়েছিল। জৈব সুরক্ষা বলয়ে আমরা সবাই একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম।
অবশ্যই এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমরা সেটা করবও। তবে আমি বিশ্বাস করি, ২০২১ আইপিএলের জন্য আমরা মজবুত একটা ভিত তৈরি করতে পেরেছি। যার ওপর দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যাবে। পরের আইপিএলটা খেলার জন্য আমি কিন্তু মুখিয়ে আছি।
সব কিছু ঠিক থাকলে, চার মাসের কিছু সময় পরেই ২০২১ সালের আইপিএল শুরু হয়ে যাবে। এই আইপিএলে ২১ অক্টোবর, মানে কেকেআর ম্যাচের দিন যেখানে শেষ করেছিলাম, সেখান থেকে আবার লড়াইটা শুরু করার অপেক্ষায় থাকব আমরা।
ব্যক্তিগত দিক দিয়ে বলব, এ বারের এই বিশেষ আইপিএলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। ভারত এবং বিশ্ব জুড়ে লক্ষ, লক্ষ মানুষের মনে আনন্দের ছাপ ফেলেছে এই প্রতিযোগিতা।
এই সময়টা আমাদের জন্য খুব কঠিন। অনেকের জন্য ভীষণই দুঃখের। ভাল থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন। ধন্যবাদ। (টিসিএম)