সফল: বৃহস্পতিবার দিল্লির পথে সস্ত্রীক নীতীশ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে টানা দু’ম্যাচে সফল নীতীশ রানা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে করেন ৬৮ রান। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ৬৩ রান করে রান সংগ্রহকারীর তালিকায় শীর্ষে। মাথায় বসেছে অরেঞ্জ ক্যাপ। এই নীতীশ রানাকেই দু’বছর আগে দিল্লির ওয়ান ডে দল থেকে বাদ দিচ্ছিলেন কেপি ভাস্কর।
সে সময় অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর ও বিজয় দাহিয়া মিলে প্রতিবাদ করে নীতীশকে দলে রাখেন। বর্তমানে দিল্লির অধিনায়ক নীতীশ। সেই সঙ্গে কলকাতা নাইট রাইডার্সের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। দিল্লির দল থেকে বাদ পড়ার সময় একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন নীতীশ। সেই সময় গম্ভীর ও দাহিয়া মিলে বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেন।
বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে ফোনে দাহিয়া বলেন, ‘‘একজন ক্রিকেটার তখনই বড় হয়, যখন তাঁর উপর আস্থা রাখা হয়। আমি আর গম্ভীর সেই কাজটাই করেছিলাম। ২০১৫-’১৬ মরসুমের রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিল ও। আমি আর গম্ভীর বার বার ওকে সেই মরসুমের কথা মনে করিয়ে দিতাম। ওর উপর ভরসা রাখা হয়েছে বলেই আজ ও এই জায়গায় দাঁড়িয়ে। তার ফল ভোগ করছে আজকের কেকেআর।’’
প্রাক্তন ভারতীয় উইকেটকিপার জানিয়েছেন, দিল্লির এলবি শাস্ত্রী মাঠে দিনের পর দিন ছয় মারার অনুশীলন করতেন নীতীশ। নেটে ব্যাট না করে মাঝের পিচে চলে যেতেন বড় শট নেওয়ার অনুশীলন করার জন্য। দাহিয়া বলেন, ‘‘ও খুব জেদি ছেলে। যেটা করবে ঠিক করে সেটা করেই ছাড়ে। আগে নেটে কিছুতেই ব্যাট করতে চাইত না। খালি মাঝের পিচে স্থানীয় স্পিনারদের নিয়ে বড় শট নেওয়ার অনুশীলন করতে যেত। সেখান থেকেই ‘স্কোয়ার অব দ্য উইকেটে’ (আড়াআড়ি শট নেওয়ার দক্ষতা) খেলা রপ্ত করে।’’
সাধারণত স্পিনারদের সামলানোর জন্য আড়াআড়ি শট নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োজন। দাহিয়ার দাবি, ছোটবেলা থেকেই সেই কৌশল রপ্ত করেছে দিল্লির এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। তাঁর কথায়, ‘‘বরাবরই স্পিনারদের বিরুদ্ধে সফল। তাই মিডল অর্ডারেই ব্যাট করানো হত ওকে। মানসিক ভাবেও খুব শক্তিশালী ও। যে কোনও পজিশনে ব্যাট করার ক্ষমতা রয়েছে। কেকেআরের হয়েই তো প্রথম ম্যাচে ওপেন করে রান পেল।’’
দাহিয়া যদিও মনে করেন, দল যদি নীতীশের উপর ভরসা না রাখে তা হলে ওর পক্ষে এত ভাল খেলা সম্ভব নয়। প্রাক্তন উইকেটকিপারের ব্যাখ্যা, ‘‘আমিও কলকাতায় কাজ করেছি। শাহরুখ খানকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমি জানি, ও কী ভাবে দলের প্রত্যেককে উদ্বুদ্ধ করে। কেকেআর দলের সংস্কৃতি একটাই, তরুণ ক্রিকেটারদের উপর ওরা ভরসা রাখে। তার ফলও পায়।’’ নীতীশ যে ম্যাচের পরিস্থিতি খুব ভাল বুঝতে পারেন, তা প্রথম দুই ম্যাচেই প্রমাণ করে দিয়েছেন। দিল্লির প্রাক্তন কোচকে এটাই সব চেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে। দাহিয়ার কথায়, ‘‘বিপক্ষের যে বোলার সব চেয়ে বড় শক্তি, নীতীশ তাকেই আক্রমণ করার চেষ্টা করে। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে যেমন অশ্বিনকে আক্রমণ করেছিল। তেমনই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ও আক্রমণ করেছিল রশিদ খানকে। আশা করি, প্রথম দুই ম্যাচে ও যে ভাবে ব্যাট করে অরেঞ্জ ক্যাপ আদায় করেছে। প্রতিযোগিতার শেষেও যেন এই টুপি ওর মাথাতেই থাকে।’’