অক্টোবরে এটিকে আনছে হয়তো তোরেসকেও

বিশ্ব ফুটবলের আকাশ আরও খুলে দেবে এটিকে

স্পেনের মাঠে এটিকে ফুটবলাররা আইএসএল ট্রফি নিয়ে ঘোরার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউসে আনন্দবাজারের মুখোমুখি প্রধান অংশীদার সঞ্জীব গোয়েন্কাস্পেনের মাঠে এটিকে ফুটবলাররা আইএসএল ট্রফি নিয়ে ঘোরার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউসে আনন্দবাজারের মুখোমুখি প্রধান অংশীদার সঞ্জীব গোয়েন্কা

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৭
Share:

প্রশ্ন: দিন পনেরো বাদে চেন্নাইয়ে আপনাদের এ বারের প্রথম আইএসএল ম্যাচ। তৈরি?
সঞ্জীব: অবশ্যই। টিম তো পুরোদমে স্পেনে ট্রেনিং করছে।
প্র: সাধারণ ভাবে একটা কথা আছে উইনিং কম্বিনেশন বদলানো হয় না। অথচ এটিকেতে প্রচুর বদল। কী প্রশাসনিক স্তরে, কী মাঠে। চ্যাম্পিয়ন টিমে এত বদল হবে কেন?
সঞ্জীব: আমাদের কোচ হলেন হাবাস। উনিই টিমের বস। উনি যেহেতু ডেলিভার করেছেন, ওঁর সমস্ত পরামর্শ আমরা মেনে নিয়েছি। উনি যা যা বলেছেন আমরা একটাও তর্ক করতে যাইনি।
প্র: কিন্তু হাবাসকে নিয়েও তো নানা রকম বিতর্ক উঠেছে। শোনা গিয়েছে উনি না-ও থাকতে পারেন।
সঞ্জীব: একটা কথা বুঝতে হবে হাবাস স্পেনের মানুষ। ওঁর একটা বিরাট ভাষা সমস্যা রয়েছে। তাঁকে সেট্ল ডাউন করার সময় দিতেই হবে। সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে তিনি এসেছেন। রাতারাতি সব ঠিকঠাক চলতে শুরু করবে, এটা হয় না।
প্র: হাবাস যদি বস্ হন তা হলে ভাইচুং কী? আপনারা ব্যারেটোকে সরিয়ে এ বার টিমের সঙ্গে ভাইচুংকে আনলেন কেন?
সঞ্জীব: ভাইচুং কোচিং স্টাফের মধ্যে নেই। ভাইচুং হল অ্যাডভাইসর। ও যে ভাবে ভারতীয় প্লেয়ারদের চেনে, হাবাসের পক্ষে সেটা সম্ভবই নয়। ইন্ডিয়ান প্লেয়ারদের চুলচেরা বিশ্লেষণের জন্যই ভাইচুংকে আনা হয়েছে।
প্র: ভাইচুং তা হলে ব্যারেটোর মতো সহকারী কোচ নন?
সঞ্জীব: একেবারেই না।
প্র: বদল শুধু তো মাঠে নয়, আপনাদের মালিকানা স্তরেও অনেক পরিবর্তন। শোনা যাচ্ছে আপনাকে ঘিরে এটিকের নতুন সৌরজগত ঘুরছে।
সঞ্জীব: আমি অস্বীকার করব না। গত বছর আমি একটু ব্যাকসিট নিয়েছিলাম। যদিও আমার শেয়ারহোল্ডিং পজিশন পার্টনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল। তবুও আমি সামনে আসার জন্য হুড়োতাড়া করিনি। এ বার আমার শেয়ারহোল্ডিং শতকরা প্রায় ফিফটি পার্সেন্ট। আমি এ বার অনেক বেশি সক্রিয়। এ বারে গত বারের মতো নয়।

Advertisement

প্র: ময়দানে জল্পনা হচ্ছে সেটার প্রয়োজন হল কেন?

সঞ্জীব: প্রয়োজন হল কারণ গত বছর অনেক বেশি খরচ হয়ে গিয়েছিল। এটা আমার বলা উচিত হচ্ছে কি না জানি না। কিন্তু অনেকগুলো খাতে এমন সব খরচ হয়েছে যা কন্ট্রোল করা উচিত ছিল। কোনও মতেই চাই না গত বারের পরিস্থিতি এ বারে আসুক। তাই পয়সা-কড়ির ব্যাপারটা যতটা কন্ট্রোল করা যায়, করছি।

Advertisement

প্র: শোনা যাচ্ছে ট্রফি জিতে উঠেও আপনাদের প্রফিট হয়নি। বরঞ্চ সামান্য লোকসান হয়েছে।

সঞ্জীব: সামান্য নয়। প্রচুর টাকা লোকসান হয়েছে। লাখ-লাখ টাকা।

প্র: এখানেই আশঙ্কা জিতে উঠেও যদি এত টাকা ক্ষতি হয়, তা হলে তো কয়েক বছর রক্তাক্ত হতে হতে ফ্র্যাঞ্চাইজি তার ব্যবসাই তুলে নেবে।

সঞ্জীব: না, তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। আমি এটিকে সমর্থকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা থাকার জন্যই এসেছি। জানি প্রথম পাঁচ-ছ’বছর লোকসানের মুখই দেখব। তার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি। আমাদের যাবতীয় লগ্নি লং টার্মের কথা ভেবে।

প্র: স্পেনের মাঠে এটিকের ছেলেরা ট্রফি নিয়ে ঘুরলেন। ভেবে কেমন লাগছে?

সঞ্জীব: আমরা তো এটাই ওদের দিতে চেয়েছি। শুধু এ বার বলে নয়, আগামী পাঁচ-সাত বছরে ক্রমাগত বিশ্ব ফুটবলের আসল দরজাগুলো আমরা ভারতীয়দের জন্য খুলে দিতে চাই। যাতে তারা দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তর নয়, একেবারে রিয়েল আকাশে গিয়ে পড়ে।

প্র: এটিকের সমর্থকেরা এ বার খেলা দেখতে গিয়ে নতুন কী পাবেন?

সঞ্জীব: মাঠ যদিও আমাদের নয়, টার্ফের কোয়ালিটি আমরা অনেক বেটার করার চেষ্টা করেছি। গ্যালারির উন্নতি করেছি। গত বারের তুলনায় আশা করা যায় স্টেডিয়াম ঘিরে পরিবহন ব্যবস্থা আরও ভাল থাকবে। হোল আইডিয়াটাই হল ফ্যানদের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানো। কলকাতার সঙ্গে একটা অদ্ভুত কানেক্ট হয়ে গিয়েছে আমাদের টিমের। ফ্যানদের কথা ভেবে আরও বেশি করে আমাদের ম্যাচে বিশ্ব ফুটবলের তারকাদের টানছি। পেলে আসবেন। রুনি আসবে। ফের্নান্দো তোরেস আসতে পারে অক্টোবরে আমাদের হোম ম্যাচে। সব মিলিয়ে প্রোমোশন সাপোর্টারদের ভালই লাগবে মনে হয়।

প্র: কেকেআরের বিরুদ্ধে কলকাতার একটা অভিযোগ আছে। যেটা এটিকে সম্পর্কেও সত্যি। তা হল শুধু খেলার সময়টুকু ছাড়া শহরে তাদের আর কোনও অস্তিত্ব দেখা যায় না। যে দেড়-দু’মাস খেলা চলে তখনই যাবতীয় কাজকর্ম। এর বাইরে কোনও পুজো-পার্বণ, কোনও উৎসব, কোনও কিছুতে কলকাতার সঙ্গে যোগ নেই।

সঞ্জীব: আমরা সেটা করতে চাই না। কেকেআরে ওটা হয়। মালিকরা শহরের বাইরের লোক। আমরা এখানে থাকি। আর ২৪ X৭ X ৩৬৫ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাই।

নতুন টিম জার্সি নিয়ে সঞ্জীব গোয়েন্‌কা

প্র: সেটা হয়েছে কোথায়? আইএসএল শেষ হওয়ার পর কোথাও এটিকের কোনও অংশগ্রহণ দেখা যায়নি।

সঞ্জীব: সেটা পেশাদার সিইও আসামাত্র হবে। তার কাজই হবে সারা বছর নানা এটিকে সম্পর্কিত অ্যাক্টিভিটিজে সমর্থকদের আগ্রহ জিইয়ে রাখা।

প্র: শোনা গিয়েছিল মরসুমের আগেই আপনাদের নতুন সিইও এসে যাবেন। এখনও তার কোনও দেখা নেই।

সঞ্জীব: মনে হচ্ছে এ মরসুমটা এ ভাবেই চলবে। পার্টনারশিপে সবাই একমত না হলে অনেক কিছু করতে চাইলেও করা যায় না।

প্র: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কী খবর? নতুন এত কিছু পাল্টাপাল্টির মধ্যে তাঁরও কি অবস্থান বদলাচ্ছে?

সঞ্জীব: সৌরভ হল রিয়েল চ্যাম্পিয়ন। ও যেমন এটিকেকে ঘিরে যাবতীয় উন্মাদনাকে একত্রিত করেছে, সেই ভূমিকাতেই থাকবে। কিন্তু আমি কাছ থেকে দেখার পর বলব, জনপ্রিয়তার চেয়েও বেশি আমাকে মুগ্ধ করেছে সৌরভের চিন্তা করার ধরন। টিম এবং ম্যানেজমেন্ট ঘিরে ওর ইনপুটগুলো আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় লেগেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement