টোকিয়ো অলিম্পিক্সে তাপপ্রবাহ আটকাতে অভিনব আয়োজন

গত বছর টোকিয়োর তাপপ্রবাহ ১২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। কুড়ি বছরে প্রথম টোকিয়ো শহরের মাসিক গড়পড়তা তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এক বছর পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে ধরে নিয়েই এগোচ্ছেন আয়োজকরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩০
Share:

স্বস্তি: গরম থেকে বাঁচতে জলীয় বাষ্প তৈরির কেন্দ্রে এক দর্শক। এএফপি

ঠিক এক বছর পরেই শুরু হবে জগৎসভায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করার লড়াই— ২০২০ টোকিয়ো অলিম্পিক্স। অথচ এখন থেকেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা আয়োজকদের। দুশ্চিন্তা বছরের এই সময়ে টোকিয়োর দহন।

Advertisement

গত বছর টোকিয়োর তাপপ্রবাহ ১২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। কুড়ি বছরে প্রথম টোকিয়ো শহরের মাসিক গড়পড়তা তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এক বছর পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে ধরে নিয়েই এগোচ্ছেন আয়োজকরা। কী ভাবে এই প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচা যায়, তার উপায় খুঁজতে তাই একাধিক পরীক্ষা চালাচ্ছেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আয়োজকরা। কোথাও সরাসরি ট্যাঙ্ক থেকে জল ছেটানো হচ্ছে, কোথাও গরমের হাত থেকে বাঁচার পরীক্ষা চলছে বাতানুকূল তাঁবুর মাধ্যমে।

বৃহস্পতিবার একটি আন্তর্জাতিক ভলিবল প্রতিযোগিতায় এই পরীক্ষা চালানো হয়। এ দিন প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৭৫ শতাংশ আর্দ্রতা ছিল টোকিয়োয়। এই পরিবেশই পরীক্ষার জন্য আদর্শ মনে করেন আয়োজকরা। ঠান্ডা জল ছড়ানোর পাশাপাশি দর্শকদের হাতে পাখা ও টাওয়েল তুলে দিতে কাজে লাগানো হয় প্রায় দেড়শো স্বেচ্ছাসেবককে।

Advertisement

‘‘আমরা তো আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। তাই বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে অতীত অভিজ্ঞতার সাহায্যে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। তবে রোদের হাত থেকে বাঁচতে কয়েকটি জায়গায় কৃত্রিম ছায়া বা জলীয় বাষ্পের কুয়াশা তৈরি করলেও গোটা এলাকায় সেই ব্যবস্থা রাখা কঠিন,’’ বলেছেন ২০২০ টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ডেলিভারি অফিসার হিদেমাসা নাকামুরা। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘অলিম্পিক্সের সময় অ্যাথলিট, দর্শক, স্বেচ্ছাসেবক, বিদেশি দর্শক, বৃদ্ধ, বাচ্চারা থাকবেই। অনেকেরই আলাদা করে নানা চাহিদা থাকে। আমরা এদের সবার দিকেই সাহায্যের হাত বাঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।’’ নাকামুরা আরও যোগ করেন, ‘‘চেক পয়েন্টেগুলোতে যেন দর্শকদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে না হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। আমরা দর্শকদের অনুরোধ করব নিজের সঙ্গে যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র রাখুন যাতে দীর্ঘ লাইন এড়ানো যায়।’’

টোকিয়ো অলিম্পিক্স আয়োজকরা শুধু দমকলের ইঞ্জিনের আকারের জলীয় বাষ্প তৈরির কেন্দ্র, বাতানুকূল তাঁবুই নয়, পাশাপাশি ফুল দিয়েও এলাকা সাজানোর কাজ করছেন। আয়োজকদের মতো এতে গরমে কাহিল না হয়ে ‘মানসিক’ ভাবেও তাজা থাকা যায়। টোকিয়োর পরিবেশ বিশেযজ্ঞ কেন ওয়াকাবায়াশি বললেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে সব নির্ভর করছে। দর্শকদের গরমের হাত থেকে বাঁচাতে আমরা সব রকম চেষ্টা করব। তার পাশাপাশি দর্শকদেরও আমরা উৎসাহ দেব গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার বিভিন্ন উপায় মাথায় রাখুন অর্থাৎ যথেষ্ট পরিমাণে জল সঙ্গে রাখা, টুপি পরে আসা।’’

আয়োজকেরা অলিম্পিক্সে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কী ভাবে রক্ষা পাওয়া যায় সেই পরীক্ষাও করছে। বিচ ভলিবল দেখতে গিয়ে চলতি সপ্তাহে যেমন দু’জন দর্শক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অলিম্পিক্সেও এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রাথমিক চিকিৎসক দল কী ভাবে অবস্থা সামলায় সেটাও দেখে নেওয়ার মহড়া চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement