AIFF

সুনীলদের জন্যেও যদি একজন সৌরভ বা দ্রাবিড় থাকতেন! আক্ষেপ প্রাক্তনদের

ভারতের ক্রিকেট এগিয়ে গেলেও সে ভাবে এগোতে পারছে না ভারতীয় ফুটবল। এই জায়গাতেই আক্ষেপ প্রাক্তন ফুটবলার ও প্রশাসকদের।

Advertisement

জাগৃক দে

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:১২
Share:

সুনীলদের জন্যেও সৌরভ, দ্রাবিড়ের মতো প্রশাসক চান প্রাক্তনরা।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। চোট আঘাত সমস্যায় অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার খেলতে না পারলেও তরুণরাই জয় এনে দিয়েছেন ভারতকে। টি নটরাজন, ঋষভ পন্থ, মহম্মদ সিরাজরা দেশে ফিরে বীরের মর্যাদা পেয়েছেন। ভারতের ক্রিকেট এগিয়ে গেলেও সে ভাবে এগোতে পারছে না ভারতীয় ফুটবল। এই জায়গাতেই আক্ষেপ প্রাক্তন ফুটবলার ও প্রশাসকদের। ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তৈরিতে রাহুল দ্রাবিড়ের মতো ছোটদের কোচ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মত দক্ষ প্রশাসক আছেন। এখানেই প্রাক্তনদের আক্ষেপ, ফুটবলেও যদি একজন সৌরভ বা দ্রাবিড় থাকতেন।

Advertisement

সুরজিৎ সেনগুপ্ত: অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন কোনও দিনই প্রাক্তন ফুটবলারদের সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি। ফুটবল যাঁরা চালান, তাঁরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চান। এটা ক্ষতি করছে ভারতীয় ফুটবলের। ক্রিকেটে একের পর এক নতুন তারকা উঠে আসছে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল দলে সেভাবে নতুন মুখ আসছে না। আসলে প্রশাসনে থাকা ব্যক্তিরা ভাল ফুটবলার নয়, তাঁদের অনুগত কাউকে চান। এখন উত্তর পূর্ব ভারত থেকেই ফুটবলার উঠে আসছে। অন্য অংশ থেকে সেভাবে ফুটবলারদের পাওয়া যাচ্ছে না। সঠিক ভাবে অ্যাকাডেমি গড়ে তোলা হচ্ছে না। ফলে, ভাল ফুটবলার তৈরি হচ্ছে না।

সুব্রত ভট্টাচার্য: নিয়ামক সংস্থা ঠিক করে স্কাউটিং করতে পারছে না। রাজ্য সংস্থা হোক, বা এআইএফএফ কেউই সে ভাবে ব্যবস্থা নেননি। জেলা থেকে ফুটবলার তুলে আনা হচ্ছে না। তবে আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ভাল কাজ করছেন। তাঁকেও কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এখন শুনছি অনেক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁকে ঠিক করে কাজ করতে দিচ্ছেন না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। প্রাক্তন ফুটবলারদের ব্যবহার করেনি এআইএফএফ। তাই ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রিকেটে এটা ভাল ভাবে হয়েছে। তাই তারা সফল।

Advertisement

সুভাষ ভৌমিক: ক্রিকেটে যে ভাবে অনেকদিন আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এগোন হয়েছে, ফুটবলে সেটা হয়নি। ফলে সমস্যায় পড়েছে ভারতীয় ফুটবল। শুধু ফুটবল নয়, অন্য সমস্ত খেলাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় ক্রিকেটে জগমোহন ডালমিয়ার মতো প্রশাসক ছিলেন। আর এখন বিসিসিআইয়ের মসনদে রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনিও খুবই দক্ষ একজন অধিনায়ক এবং বর্তমানে দক্ষ প্রশাসকও। খেলার সময়েও সৌরভ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেন। এখনও বোর্ডের দায়িত্ব পেয়েও তাই করছেন। ফলে ভারতীয় ক্রিকেট সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। ফুটবলেও এমনটাই দরকার। তবে সবসময় প্রাক্তন খেলোয়াড়দেরই প্রশাসনে আসতে হবে, এমন মানে নেই। দক্ষ কাউকে দরকার। এই মরসুমে আইএসএলে অনেক নতুন ফুটবলার উঠে আসছে। তাদের ধরে রাখতে হবে। এদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে হবে। তবেই ভাল ফল আসবে। আইপিএলে মহম্মদ সিরাজ, টি নটরাজনরা খেলে। ফলে আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করার সুযোগ পায়। ফলে, হীনমন্যতা কেটে যায়। আইএসএলেও এটা হচ্ছে। আমি এই আইএসএল দেখে আশাবাদী।

শ্যাম থাপা: ভারতীয় ফুটবলে প্রাক্তন ফুটবলারদের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তাঁরা ফুটবলটা ভাল বোঝেন। ক্রিকেটে যেমন হয়েছে, ফুটবলেও তেমনটা হওয়া খুব জরুরি। অভিজ্ঞতা একটা বড় ব্যাপার। সেখানে বারবার লাইসেন্সের কথা বলা হয়। কিন্তু যাঁরা লাইসেন্স পাচ্ছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা কতটা সেটা বোঝা দরকার।

প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়: ফুটবলের মক্কা আগে বলা হত কলকাতাকে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের ফুটবলাররাই উঠে আসছেন। এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা। একবারও প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। শুধুই স্বজন পোষণ চলছে।

রঞ্জিত বাজাজ: আমার মনে হয় এটা পুরোপুরি এআইএফএফ-এর ব্যর্থতা। ভারতে যোগ্য লোক নেই, এমনটা একেবারেই নয়। অনেক মানুষ আছেন যাঁরা দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে, এই ধরনের অ্যাকাডেমির কোচকে অবশ্যই ভারতীয় হতে হবে, যাতে ভারত সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান তাঁর থাকে। ডেভলপমেন্ট অফিসার নিয়োগ করা যেতে পারে, যাঁর কাজ হবে এই অ্যাকাডেমির উন্নতি করা। ক্ষমতা থাকলেও ফেডারেশন কর্তারা কিছুই করেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement