পরিচয় গোপন করে ভারতের এক মহিলা খেলোয়াড় বিশ্বকাপে নামলেন নেপালের হয়ে। —প্রতীকী ছবি।
জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে অন্য দেশের হয়ে বিশ্বকাপে নেমে পড়লেন এক ভারতীয় বক্সার। এমনই ঘটনা ঘটেছে মহিলাদের বক্সিং বিশ্বকাপে। নেপালের হয়ে ৫২ কেজি বিভাগে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। পরিচয় গোপন রাখতে বদলে ফেলেছেন নামও। বিষয়টি জানাজানি হতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন।
অভিযুক্ত মহিলা বক্সারের নাম হেমলতা। ভারতীয় বক্সিং সংস্থায় তাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিএক্স ৫০২৯। ২০২১ সালে লাইট ফ্লাইওয়েট (৪৮ থেকে ৫০ কেজি) বিভাগে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন দিল্লির বক্সার। জাতীয় বক্সিংয়ে একই বিভাগে শেষ আটে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম স্থান পেয়েছিলেন পয়েন্টের বিচারে। ২০২১ সালের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে হেমলতা হেরে গিয়েছিলেন পূজা বিষ্ণোইয়ের কাছে।
সেই হেমলতাই জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে বিশ্বকাপে নেমেছেন নেপালের হয়ে। পরিচয় গোপন রাখতে নাম পরিবর্তন করে করেছেন অঞ্জলি তেলি। বিশ্বকাপের আসরে নেপালের মহিলা বক্সার হিসাবে ইতিহাসও গড়েছেন তিনি। সে দেশের প্রথম বক্সার হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের আসরে জয় পেয়েছেন। ৫২ কেজি বিভাগের প্রথম রাউন্ডে হারিয়েছেন ডমিনিকা প্রজাতন্ত্রের মিগুয়েলিনা গার্সিয়াকে। সোমবার দ্বিতীয় রাউন্ডে তাঁর প্রতিপক্ষ বিশ্বের ১০ নম্বর হাইতির মেরি স্টার্লিং ক্যাথরিন। কিন্তু সেই ম্যাচে হেমলতা ওরফ অঞ্জলির নামা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
প্রথম রাউন্ডে জিতলেও পরিচয় লুকিয়ে অন্য দেশের প্রতিনিধিত্ব করে ধরা পড়ে গিয়েছেন হেমলতা। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থা। বিষয়টি জানানো হয়েছে ভারত এবং নেপালের বক্সিং সংস্থাকেও। দোষ প্রমাণ হলে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত হতে পারেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী কোনও বক্সার চাইলে অন্য দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে তাঁকে কিছু নিয়ম মানতে হয়। আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থার নিজস্ব বা অনুমোদিত কোনও প্রতিযোগিতায় এক জন বক্সার প্রথম যে দেশের হয়ে অংশ গ্রহণ করেন, তাঁকে নাগরিকত্বের ভিত্তিতে সেই দেশের বক্সার হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। অন্য কোনও দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হলে সেই দেশের নাগরিকত্ব নিতে হয়। এবং প্রথম দেশের হয়ে শেষ বার প্রতিনিধিত্ব করার অন্তত তিন বছর পর দ্বিতীয় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। হেমলতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কোনও নিয়মই মানেননি। নেপালের নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণও দাখিল করতে পারেননি তিনি।