বিরাট কোহলী ফাইল চিত্র
ওভাল-জয়ের ২৪ ঘণ্টা পরে ভারতীয় দল এবং অধিনায়ক বিরাট কোহালিতে মুগ্ধ বিশ্বের প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। শেন ওয়ার্ন, নাসের হুসেন থেকে স্টিভ হার্মিসন— সবার মুখেই শোনা যাচ্ছে কোহালি এবং ভারতীয় দলের স্তুতি। পাশাপাশি আরও একটা ব্যাপারের জন্য আলোচনায় উঠে এসেছেন ভারত অধিনায়ক। তাঁর অভিনব উৎসব-ভঙ্গির জন্য।
কী সেই উৎসব? সোমবার ইংল্যান্ডের ওপেনার হাসিব হামিদের উইকেট পড়ার পরে দেখা যায় কোহালি দর্শকদের দিকে তাকিয়ে শিঙা বাজানোর ভঙ্গি করছেন। তখন বোঝা যায়নি এই বিশেষ উৎসবের কারণ কী। পরে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায়। ওই ভঙ্গি করে গ্যালারিতে থাকা ইংল্যান্ডের সমর্থক বাহিনী ‘বার্মি আর্মি’-কে জবাব দিচ্ছিলেন কোহালি।
এর আগে ইংল্যান্ড সমর্থকরা নানা ভাবে ভারতীয় দলকে বিদ্রুপ করেছিলেন। এমনকি, কোহালিও তাঁদের বিদ্রুপের শিকার হয়েছিলেন। সেই বিদ্রুপের জবাবই ওভালে দিয়েছেন কোহালি। তবে এই নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। ইংল্যান্ডের প্রচারমাধ্যমের একটা অংশ মনে করছে, ভারত অধিনায়ক কাজটা ঠিক করেননি। আবার ভারতীয় সমর্থকদের অনেকের ধারণা, উচিত জবাবই দিয়েছেন কোহালি। গণমাধ্যমে তাঁরা ভারত অধিনায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।
এরই মাঝে সম্প্রচারকারী টিভি চ্যানেলে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্পিনার ওয়ার্ন বলেছেন, ‘‘বিরাট টেস্ট ক্রিকেটকে ভালবাসে। ও বুঝিয়ে দিয়েছে, টেস্টে ভাল কিছু করাই ওর প্রধান লক্ষ্য। কোনও সন্দেহ নেই, ভারত এই মুহূর্তে ক্রিকেটবিশ্বের একটি মহাশক্তিশালী দেশ এবং বিরাটের মতো মহাতারকা আর কেউ নেই। সেই বিরাটই বলছে, টেস্ট ক্রিকেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’’ এখানেই শেষ নয়। ওয়ার্ন এও বলেন, ‘‘দলের মধ্যে একটা বিশ্বাস এনে দিয়েছে বিরাট। এই বিশ্বাসটা অত্যন্ত জরুরি। বিরাট যত দিন আছে, টেস্ট ক্রিকেট বেঁচে থাকবে। দয়া করে অনেক, অনেক দিন খেলে যাও বিরাট।’’ তিনি এও মন্তব্য করেছেন, ভারত এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা টেস্ট দল।
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন তাঁর কলামে লিখেছেন, অধিনায়ক কোহালি যা ছুঁয়েছেন, তা-ই সোনা হয়ে যাচ্ছে। নাসেরের মন্তব্য, ‘‘ওভালের পিচে সিমারদের জন্য প্রায় কিছুই ছিল না। আর রবীন্দ্র জাডেজার বাঁ-হাতি স্পিনের জন্য সামান্য ক্ষত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতেও কোহালি ঠিক ইংল্যান্ডের ১০টি উইকেট ফেলার রাস্তা বার করে ফেলে। ও যা ছুঁয়েছে, তা-ই সোনা হয়ে গিয়েছে।’’
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন পেসার হার্মিসন আবার ভারতীয় দলের খেলায় পুরনো অস্ট্রেলীয় মেজাজ দেখতে পাচ্ছেন। স্টিভ ওয় এবং রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে এই ভারতের তুলনা টেনেছেন হার্মিসন। প্রাক্তন ইংল্যান্ড পেসারের কথায়, ‘‘ওই অস্ট্রেলিয়া দল শেষ দিনে বিপক্ষকে চূর্ণ করে দিত। শেষ দিনে সবাই যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ত, ওদের আসল খেলাটা বেরিয়ে আসত।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে, এই ভারতীয় দলটাও সে দিকে এগোচ্ছে। ওরা একই ভাবে প্রতিপক্ষকে চূর্ণ করে দিচ্ছে। বিপক্ষের উপরে আধিপত্য বিস্তার করছে।’’