'দাদার কীর্তি' দেখে 'ভাই' সিরাজের আলিঙ্গন। ছবি - টুইটার
বিরাট কোহালি যখন ব্যক্তিগত ৬২ রানে ফিরলেন, তখন স্কোরবোর্ডে ৭ উইকেটে ২০২ রান। এর কিছুক্ষণ পর কুলদীপ ও ইশান্ত দ্রুত আউট হয়ে গেলেন। বোর্ডে দেখাচ্ছে ৯ উইকেটে ২৩৭ রান। অথচ রবিচন্দ্রন অশ্বিন দাঁড়িয়ে ৮০ রানে। দশ নম্বর ব্যাটসম্যান মহম্মদ সিরাজকে বুঝিয়ে কি আদৌ টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চম শতরান সারতে পারবেন? সেটাই ছিল বড় প্রশ্ন। তবে অশ্বিন দাদা’র মত সিরাজকে আগলে একেবারে মারমুখী মেজাজে সেরে ফেললেন কেরিয়ারের পঞ্চম শতরান। ঘরের মাঠে অবশ্য প্রথম। ফিরলেন মাত্র ১৪৮ বলে ১০৬ রান করে। ইনিংস সাজানো ছিল ১৪টি বাউন্ডারি ও ১টি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। দলের রান তখন ২৮৬।
তাই তো ‘দাদার কীর্তি’র সময় নন-স্ত্রাইকার থেকে আনন্দের লাফ দিলেন ডানহাতি জোরে বোলার। যখন ব্যাট করতে আসেন, তখন দল ১০৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে। এরপর প্রতি আক্রমণ করে অধিনায়কের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৯৬ রান। তবে লড়াইয়ের এখানেই শেষ নয়। দশম উইকেটে সিরাজকে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন ৪৯ রান, যা মহা মুল্যবান। তাই তো দিনের শেষে ‘ভাই’ সিরাজকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন অশ্বিন।
বললেন, “এর আগে ইশান্তকে সঙ্গে নিয়ে টেস্টে শতরান আছে। তাই আমি জানতাম সিরাজকে কিভাবে আগলে রেখে স্কোর বোর্ড চালু রাখতে হবে। সিরাজ আমার কথা শুনে সাহায্য করে গেল। আমি তো ওর ব্যাটিং দেখে চমকে গিয়েছি। বলের লাইনে এসে দারুণ খেলছিল। একবারের জন্যও মনে হয়নি যে দশ নম্বর ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ক্রিজে আছি। আশা করি সাজঘরে বসে থাকা সতীর্থরাও ওর ব্যাটিং দেখে মজা পেয়েছে। আমার শতরানের সময় ওর লাফ দেখে তো হেসেই ফেলেছিলাম। তাই সিরাজকে ধন্যবাদ জানাই। তবে একই সঙ্গে চেন্নাইয়ের দর্শকদেরও ধন্যবাদ জানাব। কারণ ওঁরাও সারাক্ষণ ভরসা জুগিয়ে গিয়েছেন।”
২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ বার শতরান করেছিলেন অশ্বিন। সেই টেস্টে ২৯৭ বলে ১১৮ রান করেন এই অফ স্পিনার। তবে এই টেস্টে শুধু শতরান নয়। প্রথম ইনিংসে ৪৩ রান দিয়ে ৫ উইকেটও নেন। তবে চলতি টেস্টে তিনি দারুণ ছন্দে আছেন। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ইংরেজদের দ্রুত গুটিয়ে দিলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। একই টেস্টে শতরান ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি তিনবার গড়লেন। তবে এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন কিংবদন্তি ইয়ান বথাম, যিনি টেস্টে পাঁচ বার এমন কীর্তি গড়েছেন।
এদিন বিরাট ধীরেসুস্থে খেললেও অশ্বিন শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে ছিলেন। একইসঙ্গে ইনিংসে ছিল একাধিক সুইপ ও স্লগ সুইপ। শতরান গড়তে এই শট ব্যবহার করার কারণও ব্যাখ্যা করলেন। মজা করে বললেন, “শেষবার যখন লাগাতার সুইপ মেরেছিলাম, তখন আমার বয়স মাত্র ১৯। ভুল সুইপ মারার জন্য স্কুলের দল থেকে বাদ পর্যন্ত গিয়েছিলাম। গত ১২-১৩ বছর সুইপ মারার চেষ্টা করিনি। তবে গত কয়েকদিন আবার সুইপ মারা অনুশীলন করি। তবে এই শট আরও ভালভাবে মারার জন্য ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর বিশেষ সাহায্য করেছেন। গত চার-পাঁচ টেস্টে ব্যাট হাতে অনেক উন্নতি করেছি। তাই ওঁর বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য।”