চোটের জন্য লকডাউনকেই দায়ি করছেন জন গ্লস্টার।
খারাপ শট খেলে আউট হওয়ার জন্য রোহিত শর্মাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। তবে তাঁর দিকে আঙ্গুল তোলার আগে আউট হওয়ার মুহূর্তের ভিডিয়ো চালিয়ে দেখতে বলছেন জন গ্লস্টার, যিনি একটা সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম ইন্ডিয়ার ফিজিয়ো ছিলেন। এখন রাজস্থান রয়্যালসের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর মতে, চোটের জন্যই রোহিত ওভাবে আউট হয়েছেন। আর এই চোটের কারণ হিসেবে লকডাউনকেই দায়ি করছেন গ্লস্টার। নেথান লায়নকে তুলে মারতে গিয়ে রোহিতের ডান পায়ে টান ধরে। আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন ‘হিট ম্যান’। গ্লস্টারের মতে চোটের জন্যই আউট হয়েছেন রোহিত।
তবে এই ছবিটা শুধু রোহিতের জন্য বরাদ্দ নয়। চলতি অস্ট্রেলিয়া সফরে একাধিক ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে এমন চোট পাওয়ার ছবি বারবার ধরা পড়েছে। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে দলের ফিজিয়ো নীতিন পটেল ও ট্রেনার নিক ওয়েবকে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। ১) ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের সিরিজের আগে চোট পাওয়া ক্রিকেটাররা ফিট হতে পারবেন তো? ২) দলের ফিজিয়ো এবং টিম ম্যানেজমেন্ট কি সমস্যার জন্য দায়ী নয়? ৩) লকডাউনের সময় ক্রিকেটাররা কি আদৌ ঠিকঠাক রিহ্যাব করতেন? সেই রিহ্যাবের নথিপত্র কি দলের ফিজিয়ো রেখেছেন? ৪) এত চোটের জন্য জাস্টিন ল্যাঙ্গার আইপিএলকে দায়ী করেছেন। সেটা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা।
কিন্তু গ্লস্টার এই দুজনের দোষ দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁর মতে, ‘‘দলের ফিজিও নীতিন পটেল ও ট্রেনার নিক ওয়েবের দিকে আঙ্গুল তুলে লাভ নেই। চলতি অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের চোট পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ, বেশিরভাগ ক্রিকেটাররা তিনটি ফরম্যাটে খেলে। লকডাউনে ঘরে থাকার পর আইপিএল, অস্ট্রেলিয়া সফর। চোট-আঘাত তো বাড়বেই। প্রতিটি ফরম্যাটের জন্য রিহ্যাবের পদ্ধতি আলাদা। সেটা সবাই জানে। কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যে সেই নিয়মগুলো হয়তো মানা হচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন: সচিনের ১০ নম্বর জার্সি ছেড়ে নিজের ৫৪ নম্বর, শার্দুলই এখন মধ্যমণি
একইসঙ্গে তিনি মানসিক চাপে থাকার ব্যাপারটাও যোগ করেন, ‘‘লকডাউনের জন্য প্রায় পাঁচ মাস ঘরবন্দি থাকা। এরপর আইপিএল শুরু হওয়ার আগে ১৪ দিনের নিভৃতবাস। অস্ট্রেলিয়া সফরেও একই অবস্থা। এমন জীবনযাপনে আমরা কেউ অভ্যস্ত নই। পারফরম্যান্স করে নিজের নামের প্রতি সুনাম বজায় রাখার অসম্ভব চাপ থাকে। সেটা অবশ্য বাইরের দুনিয়ার লোকজন বুঝবেন না। এটাও কিন্তু চোট পাওয়ার বড় কারণ।’’
ইশান্ত শর্মা (সিরিজ শুরুর আগে), মহম্মদ শামি (অ্যাডিলেড), উমেশ যাদব (মেলবোর্ন), যশপ্রীত বুমরা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা ও হনুমা বিহারী (সিডনি), নভদীপ সাইনি (ব্রিসবেন)। চোটের তালিকা দীর্ঘ। তবে স্পিরিট কমেনি। মিনি হাসপাতাল হয়ে যাওয়ার পরেও ভারতীয় দল কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করছে।
সুনীল গাওস্কর কয়েকদিন আগে বলছিলেন, ‘‘দুটো কারণে খেলোয়াড়দের চোট-আঘাত বাড়ে। সে বাড়তি ট্রেনিং করলে যেমন চোট বাড়ে, তেমনই প্রয়োজনের তুলনায় কম ট্রেনিং ও ডায়েট করলেও চোট পাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।’’ জন গ্লস্টার চোট-আঘাতের জন্য করোনা পরিস্থিতিকেই দায়ী করছেন। যদিও এতকিছুর পরে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। একই রকম পরিস্থিতির মধ্যেও চোট ছাড়াই খেলে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার চার বোলার। প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজেলউড, নেথান লায়ন ও মিচেল স্টার্ক অনায়াসে পারফরম্যান্স করে চলেছেন। তাই টিম ইন্ডিয়ার চোটের লম্বা তালিকা নিয়ে একরাশ প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। সামনেই আবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে সিরিজ। এমন অবস্থায় তিন ফরম্যাটের জন্য মাঠে দল নামানো নিয়ে চিন্তায় থাকবে টিম ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুন: ১১০ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন ওয়াশিংটন, ব্রিসবেনের মাঠে সপ্তকাণ্ড শার্দুলদের