আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ফাইল চিত্র।
আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের পদত্যাগ গ্রহণ করছেন না সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জয়দীপের সঙ্গে আলোচনা করবেন, তাঁকে থেকে যাওয়ার জন্য বোঝাবেন।
জয়দীপ নিজে কিছু না বললেও মনে করা হচ্ছে, সভাপতির জন্যই তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু সচিবের পদত্যাগ নিয়ে সভাপতি বলছেন, ‘‘আমি অত্যন্ত ব্যথিত। ওর পদত্যাগ গ্রহণ করিনি। ও আমার ভাইয়ের মতো। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আলোচনা করব, ওকে থেকে যাওয়ার জন্য বোঝাব।’’
শনিবার সকালে আইএফএ সচিবের হঠাৎ পদত্যাগের পেছনে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নাম জড়িয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রোজেক্ট কন্যাশ্রী কাপের দুটি ম্যাচে তারা অবৈধভাবে ভিন রাজ্যের তিন ফুটবলারকে খেলিয়েছে। এর শাস্তি হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের সেমিফাইনাল ম্যাচ (যে ম্যাচে অবৈধ ফুটবলার খেলানোর অভিযোগ) বতিল করা হয়েছে, এবং তাদের দ্বিতীয়বার খেলতে বলা হয়েছে। সচিব চেয়েছিলেন, ইস্টবেঙ্গলকে বরখাস্ত করে তাদের সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ পুলিশ এসি-কে ফাইনালে তোলা হোক। কিন্তু সভাপতি নাকি চাপ দিয়ে তা করতে দেননি। তাতেই পদত্যাগ করেছেন সচিব।
অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই, তাঁর বক্তব্য, ‘‘কীসের চাপ? এর মধ্যে চাপের কোনও ব্যাপার নেই। জয়দীপের কোথাও বুঝতে ভুল হয়েছে। সেটাই ওকে বোঝাব। আমি সেই কারণেই ওর পদত্যাগ গ্রহণ করিনি।’’
এদিকে, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘আমাদের কোনও ভুলই নেই। ভুলটা আইএফএ-র। যে তিন ফুটবলারকে খেলানো নিয়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, আইএফএ-র রেজিস্ট্রেশন ফর্মে তাদের ‘নিউ’ হিসেবে দেখানো আছে। অর্থাৎ তারা আগে কোথাও খেলেনি। আমরা তার ভিত্তিতেই খেলিয়েছি। এর পরেও যখন শাস্তির কথা বলা হল, আমরা প্রথমে মামলা করব ভেবেছিলাম। কিন্তু এই প্রথম কন্যাশ্রী কাপ হচ্ছে, এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, এখানে মহিলা ফুটবলের প্রসার এবং প্রচারের প্রশ্ন। এসব ভেবে আমরা অপরাধ না করেও শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছি।’’
আইএফএ-র প্লেয়ার রেজিস্ট্রেশন ফর্ম। নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: সপ্তম ম্যাচেও জয় অধরা, স্টেনম্যানের জোড়া গোলে ড্র ইস্টবেঙ্গলের
আইএফএ-র সেই রেজিস্ট্রেশন ফর্মের প্রতিলিপি রয়েছে এবিপি ডিজিটাল-এর কাছে। তাতে দেখা যাচ্ছে মিনা খাতুনের (তিনজনের একজন) রেজিস্ট্রেশন ফর্মের সংশ্লিষ্ট জায়গা প্রথমে সাদা কালি দিয়ে মোছা হয়েছে। সেখানে পরে অন্য কালিতে ‘নিউ’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ, সত্যিই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোনও দোষ নেই। পুরোটাই আইএফএ-র গাফিলতি।
আরও পড়ুন: ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেকই জীবনের সবথেকে বড় ঘটনা, বললেন সিরাজ
এই দোষের কথা মেনে নিলেন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘অবশ্যই দোষটা আমাদের। আমাদের কোনও ক্লার্কের ভুল এটা। এর জন্য ভবিষ্যতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সবসময় সচিব বা সভাপতির পক্ষে এগুলো খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয় না। কিন্তু অবশ্যই দায়টা আমাদের ওপরই এসে পড়ে। কিন্তু এর জন্য সচিব পদত্যাগ করবে, এটা হয় না। তাই আবারও বলছি, ওকে বোঝাব। আশা করছি, ও থাকবে।’’