ইংল্যান্ডে দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারা। কিন্তু ক্লাইভ লয়েড, ভিভিয়ান রিচার্ডসদের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ বারের বিশ্বকাপের মূলপর্বে সরাসরি খেলার সুযোগ পায়নি।
নেদারল্যান্ডস, পাপুয়া নিউগিনির সঙ্গে বাছাই পর্বে খেলে উঠে আসতে হয়েছে ক্রিকেটের একদা বিশ্বত্রাস শক্তিকে। তাও আবার বাছাই পর্বের ফাইনালে ক্রিস গেল, জেসন হোল্ডাররা সাত উইকেটে হেরেছিলেন আফগানিস্তানের কাছে!
পনেরো মাসের ব্যবধানে সেই ক্যারিবিয়ানদের খেলা বদলে গিয়েছে। শুক্রবার ট্রেন্ট ব্রিজে ২১৮ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানকে তিন উইকেটে হারিয়ে এ বারের বিশ্বকাপে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আন্দ্রে রাসেল, ওশেন থমাসদের শরীর লক্ষ করে শর্ট বলের পরিকল্পনার সামনে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের এতটাই অসহায় দেখিয়েছে যে, প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার গ্রেম সোয়ান বলেই দিচ্ছেন, এই আগ্রাসী বাউন্সার বৃষ্টির রণনীতি দিয়েই এ বার ঝড় তুলে বিশ্বকাপ নিয়ে যেতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ম্যালকম মার্শাল, মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার, অ্যান্ডি রবার্টসদের সেই বিখ্যাত পেস ব্যাটারির মতোই এই বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই জ্বলজ্বল করেছেন ক্যারিবিয়ানদের চার পেসার আন্দ্রে রাসেল, শেল্ডন কটরেল, ওশেন থমাস ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। যা দেখে গ্রেম সোয়ানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওদের মানসিকতাটাই অসাধারণ। এটা একটা অপ্রত্যাশিত ধাক্কা! সবাই ওয়াইড ইয়র্কার, স্লোয়ার দেখার আশা করেছিলেন। বদলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই চার পেসার ফিরিয়ে আনল সেই শর্ট বল করে বিপক্ষকে কোণঠাসা করে দেওয়ার পুরনো রণনীতিকে।’’
সোয়ান আরও বলছেন, ‘‘কেউ এই রণনীতি আশা করেননি। পাঁজর লক্ষ করে দুর্দান্ত দক্ষতার সঙ্গে কোনও বোলার যদি এক ওভারে চার-পাঁচটা করে শর্ট বল ক্রমাগত করে যেতে থাকে, তাও আবার পাকিস্তানের মতো দলের সঙ্গে, যারা হুক বা কাট শট মারতে ওস্তাদ, সেখানে সাহসের ছাপ থাকে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওদের সেই পুরনো দিনের বোলিং ঘরানাটাই ফিরিয়ে এনেছে। আর ঠিক এই কারণেই বিশ্বকাপটা ওরা নিয়ে যেতে পারে। কারণ, এই বোলিংটাকে সামলানোর জন্য অনেকে দলই কিন্তু তৈরি হতে পারেনি।’’
১৯৮৮ সাল থেকে ২০০০—এই ১২ বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ২২৫ উইকেট পেয়েছিলেন কার্টলি অ্যামব্রোজ। তিনি বলছেন, ‘‘ক্রিকেটের একটা বিশেষ অঙ্গ হল বাউন্সার। বিশ্বাস করি, এই রণনীতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও নিখুঁত ভাবে প্রয়োগ করতে পারে। ক্রিকেটের দৃশ্যসুখ তো পেসার আর বড় ব্যাটসম্যানের লড়াইয়ে। দুঃখের বিষয় সেটা আর দেখা যায় না এখন।’’