—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
খাবারে কি কৃত্রিম রং মেশানো! খাবারে যে সস ব্যবহৃত হয়েছে সেটার মেয়াদ কি ফুরিয়েছে? মেলায় খাবারের স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে রসনা তৃপ্তির আগে খাবারের গুণগত মান নিয়ে এমন সংশয় থাকেই। সেটা যদি জয়দেব কেঁদুলির মতো বিশাল মাপের মেলা হয়, তাহলে গুণগত মান ঠিক না থাকলে অনেকের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে। তা যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী স্বাস্থ্য দফতর।
পৌষ মেলার মতো জয়দেব মেলায় খাবারের দোকান বা স্টল থেকে বিক্রিত খাবারই হোক বা কোনও আখড়া—গুণমান কেমন, তার নজরদারির ব্যবস্থা করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার বিকেল থেকে তিন দিন এই যাচাই পর্বের দায়িত্বে থাকছেন চার জন ফুড সেফটি অফিসার। এ কথা জানান বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) হিমাদ্রি আড়ি।
সিএমওএইচ জানান, মেলায় ঘুরে শুধু খাবারের গুণগত মান যাচাই করাই নয়, দোকান বা স্টলগুলির আদৌ লাইসেন্স আছে কি না, খাবারের গুণগত মান বাজায় রাখতে গেলে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেগুলি আদৌ করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারেও সচেতনতা প্রচার চালানো হবে। এ ছাড়া মেলায় ২৪ ঘণ্টার একটি মেডিক্যাল ক্যাম্পও থাকছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল, ভোজ্য তেল, দুগ্ধজাত খাবার থেকে মাছ বা মাংস কিংবা জাঙ্ক ফুড— যা আমরা খাচ্ছি সেগুলির গুণগত মান ঠিক রয়েছে কি না তা যাচাই করে থাকেন ফুড সেফটি অফিসাররই। পুরসভা এবং গ্রামাঞ্চলে খাবার সংক্রান্ত যে কোনও অভাব অভিযোগ সামলানো থেকে ফুড লাইসেন্স দেওয়ার কাজ করেন স্বাস্থ্য দফতরের ফুড সেফটি অফিসারেরাই। জয়দেব মেলার মতো একটি বিশাল মেলা, যেখানে একবার ঢুকে পড়তে পারলে থাকা খাওয়ার চিন্তাই থাকে না, সেখানে ফুড সেফটি অফিসারদের এই নজরদারি ভীষণ প্রয়োজনীয় মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর।
ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলাতেও নজরদারি করেন চার জন ফুড সেফটি অফিসার। তাঁরা সঞ্জু আরা খাতুন, শেখ হানিফুল, রাখি মাতদার, রণিত সরকার। পালা করে শতাধিক খাবারের স্টল পরিদর্শন করেছিলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, যা দেখা হয়েছে সেটা হল, কৃত্রিম রং মেশানো হচ্ছে কি না, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার রয়েছে কি না। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের সস বাজেয়াপ্ত এবং নষ্ট করা হয়েছে। খাবার ঢেকে রাখা হচ্ছে কি না, বাসন যেখানে ধোয়া হচ্ছে, সেগুলি ঠিক মতো পরিষ্কার হচ্ছে কি না সে সবেও কড়া নজর ছিল তাঁদের। ঠিক সেভাবেই জয়দেব মেলা ঘুরবেন ওঁরা।
প্রশ্ন হল, যেখানে এত সংখ্যক খাবার দোকান, প্রতিটি আখড়াতে রান্নার ব্যবস্থা সেখানে, গোটা মেলা ঘুরে ওই কাজটি করা চার জন ফুড সেফটি অফিসারের পক্ষে সম্ভব কি না। সিএমওএইচ বলছেন, ‘‘কাজটা সহজ নয়, তবে তাঁরা সাধ্য মতো চেষ্টা করবেন। সব দোকান সব খাবার খতিয়ে দেখবেন এমনটাও নয়। সেখানে সন্দেহ রয়েছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার, সেটা দেখবেন।’’ সঙ্গে সচেতনতা প্রচারের কাজও করবেন।