ক্লাস: প্র্যাক্টিসে বুমরাদের ব্যাটিংয়ের বিশেষ পাঠ দিচ্ছেন বিরাট কোহালি। শুক্রবার হেডিংলেতে। গেটি ইমেজেস। ইনসেটে কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত।
এখনকার ভারতীয় দলটা যে প্রচণ্ড শক্তিশালী তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই দলটাকে প্রায় অপ্রতিরোধ্য করে তোলায় ওপেনার রোহিত শর্মারও প্রচুর অবদান রয়েছে। গত তিনটে মরসুমে আমরা দেখেছি, কী ভাবে মুম্বইয়ের এই ব্যাটসম্যান সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ক্রমশ উন্নতি করে চলেছে।
আমি পরিসংখ্যান ঘাঁটতে খুব একটা পছন্দ করি না। তবে এটা কিন্তু মানতেই হবে, পরিসংখ্যান মিথ্যে বলে না। গত ১০ বারের মধ্যে ছ’বারই হাফসেঞ্চুরি করার পরে সেটা সেঞ্চুরিতে পরিণত করার দুরন্ত অভ্যাস গড়ে তুলেছে রোহিত। বেশ কয়েকটা শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ভারত যে রকম দাপট দেখিয়ে জিতেছে তার মূল কারণ রোহিতের এই সাফল্য। রোহিতের মতো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি যোগ করুন বিরাট কোহালির অনবদ্য ধারাবাহিকতাকে। এই দুই সেরা ব্যাটসম্যানকে টপ অর্ডারে পাওয়াটা ভারতীয় দলের কাছে মস্ত বড় প্রাপ্তি।
এর পাশাপাশি রোহিতের আরও একটা জিনিস আমার দারুণ লাগে। সেটা হল, ব্যাটিং করার সময় ওর খুব সহজে গিয়ার পাল্টানো। যে দিন রোহিত শুরুটা খুব ভাল করতে পারে না (চলতি বিশ্বকাপে এ রকম কয়েকটা ইনিংস দেখা গিয়েছে) সে দিন হয়তো সময় নেয় থিতু হতে। কিন্তু এক বার ও ছন্দে চলে আসলে রান উঠতে শুরু করে মসৃণ গতিতে। সেখানেই শেষ হয় না ব্যাপারটা। এক বার ১০০ রানে পৌঁছে গেলে ও আরও এক বার গিয়ার পাল্টে ফেলে।
আমার মতে, ৫০-৬০টা বল খেলে ফেললে রোহিত সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠে। তখন কত রান করেছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, হয়তো তখন ও কিছুটা কম রান তুলল। কিন্তু ওর মতো ব্যাটসম্যান শেষের দিকে ঠিক সেই রানটা পুষিয়ে দেয়। একটা বিশ্বকাপে চারটে সেঞ্চুরি করা মুখের কথা নয়। কুমার সঙ্গকারার মতো কিংবদন্তিকে সম্মান জানিয়েই বলছি, এর আগের বিশ্বকাপের থেকে এ বার পরিবেশ কিন্তু অনেক বেশি কঠিন ছিল।
গোটা দেশের সমর্থকদের এখন একটাই প্রার্থনা, রোহিতের এই দুরন্ত ফর্ম যেন নক আউট পর্বেও বজায় থাকে। যে ভাবে ও কঠিন পরিস্থিতিতেও রান তুলে গিয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে এই বিশ্বকাপে রোহিতের থেকে আরও পাওয়ার বাকি রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শনিবারের ম্যাচটা স্রেফ নিয়মরক্ষার। এই ম্যাচের ফলাফলে দুটো দলের পয়েন্ট টেবলে অবস্থানে খুব একটা হেরফের হবে না। একই সঙ্গে ভারত সেমিফাইনালের আদর্শ দল কী হবে, সেটা পরীক্ষা করে নিতে চাইবে এই ম্যাচে। লিডসের চেয়ে দুই সেমিফাইনাল ম্যাচের মাঠের পরিবেশে খুব পার্থক্য না থাকলে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙা উচিত হবে না। কোহালিকে যত দূর চিনি, এই ম্যাচে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ভারতীয় দল কোনও ফাঁক রাখবে না। নক আউটে যে ধারাবাহিকতা নিয়ে ওঠাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।