নাম না করে ধোনির মন্থর ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করলেন সৌরভ।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও কেদার যাদবের মন্থর ব্যাটিং দেখে বিস্মিত ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ইংল্যান্ডের ৩৩৭ রানের জবাব দিতে নেমে ইনিংসের শেষের দিকে ধোনি ও কেদার বড় শট না খেলে সিঙ্গলসের উপরে জোর দেন। ধোনি-কেদারের এরকম ব্যাটিং দেখে বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের।
বিশ্বক্রিকেটে ধোনি এখনও অবিসংবাদি ‘ফিনিশার’ হিসেবে বিখ্যাত। অথচ সেই ধোনিই মন্থর খেলছেন। ভারতের ইনিংসের শেষের দিকে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন সৌরভ ও ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন। সৌরভ বলছিলেন, “অন সাইডে ইংল্যান্ড যত জন ফিল্ডারই রাখুক না কেন, ধোনি অন সাইডে মারলে কেউই ওই বল থামাতে পারবে না।” ম্যাচের শেষ পর্যায়ে ধোনির কাছ থেকে ঝোড়ো ব্যাটিং আশা করেছিলেন সৌরভ। প্রাক্তন অধিনায়কের আশা পূর্ণ হয়নি। ম্যাচের শেষ পর্যায়ে বড় শট খেলা তো দূর অসত্! ধোনি কেমন যেন গুটিয়ে গেলেন। সৌরভ বলেন, “এরকম মন্থর ব্যাটিংয়ের কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছি না। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কেন সিঙ্গলস নিচ্ছে, তার উত্তর সত্যিই আমার জানা নেই। বাউন্স এবং লেন্থ হয়তো ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ঠিকমতো পড়তে পারছে না। তাই বলে ৩৩৭ রান তাড়া করতে নেমে শেষমেশ হাতে পাঁচ উইকেট থেকে যাওয়ার কোনও যুক্তি দেখি না। বার্তাটা খুব পরিষ্কার হওয়া উচিত। কী ভাবে বল মারছ বা কোথায় মারছ, সেটা বড় ব্যাপার নয়। যে ভাবেই হোক বাউন্ডারি মারতে হবে। ম্যাচের এই পরিস্থিতিতে এসে সিঙ্গলস!’’
অবাক সৌরভ। তিনি ধোনি বা কেদার যাদবের নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু, সৌরভ-সহ অন্যান্য প্রাক্তনদের নিশানায় যে ধোনি, তা বলাই বাহুল্য। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মন্থর ব্যাটিং করার জন্য সচিন তেন্ডুলকর প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন ধোনির। এ বার সৌরভও তাঁর প্রাক্তন ওপেনিং পার্টনারের রাস্তা নিলেন। মহারাজ আরও বলেন, প্রথম ১০ ওভারে ভারত এক উইকেট হারিয়ে ২৮ রান করে। শেষের ১০ ওভারেও দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারেনি ভারত। শেষের ১০ ওভারে ব্যাট করছিলেন ধোনি। হার্দিক পাণ্ড্য তাও একটা মরিয়া চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ধোনি ক্রিজে আসার পরে পাণ্ড্যর মধ্যেও তাগিদ দেখা যায়নি। সৌরভ বলেন, “আশা করি এই ম্যাচের পরে ওরা নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। বিশ্বকাপে এখন দারুণ ফর্মে রয়েছে ভারত। ভারতীয়দের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে খেলা উচিত ছিল। ভারত যদি ৩০০ রানে অল আউটও হয়ে যেত, তা হলে আমি খুশি হতাম। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ফের পড়তে হতে পারে ভারতকে। প্রথম ও শেষ দশ ওভারে সাফল্যের রাস্তা খুঁজতে হবে।”
আরও পড়ুন: এর পরেও কেন খেলানো হবে কেদারকে, দলে আসুক জাডেজা
আরও পড়ুন: শেষ কয়েক ওভার নিয়ে বিস্মিত লিনেকারও
ভারতীয়দের ব্যাটিং দেখে অবাক ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেনও। তিনি বলেন, ‘‘আমি সত্যিই অবাক। ভারতের দরকার ছিল রান। কী করল ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা? বেশ কয়েক জন ভারতীয় সমর্থক মাঠ ছেড়ে চলে গেলেন। ভারত-সমর্থকদের হতাশ হওয়ারই কথা। ওঁরা দেখতে চেয়েছিলেন ধোনি বড় শট খেলবে। বিশ্বের অন্যতম সেরা দুটো দল খেলছে। অথচ সেই তাগিদটাই দেখা গেল না।”
ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে বলছেন, “অত্যন্ত নিরাশাজনক সমাপ্তি। এই পরিস্থিতিতে রান-আ-বল পার্টনারশিপ ম্যাচ জেতাতে পারে না। পাণ্ড্য যতক্ষণ ছিল তত ক্ষণ ম্যাচে টানটান উত্তেজনা ছিল।’’ পাণ্ড্য ফিরে যাওয়ার পরেই সব শেষ।