আবার বিদায় নকআউট পর্বে। ২০১৪ সাল থেকে নকআউটের জুজু যেন তাড়া করছে ভারতকে। গ্রুপ পর্বে দাপিয়ে খেলে মেন ইন ব্লু ছন্দ হারাচ্ছে নকআউটে। যেন সেই পুরনো দক্ষিণ আফ্রিকা। দেখে নেওয়া যাক এ বারের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে কোন কোন নকআউট থেকে ছিটকে গিয়েছিল ভারত।
২০১৪ সালে ধোনির ভারত যখন টি২০ বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ গেল, অনেক বিশেষজ্ঞ ধরেই নিয়েছিলেন ধোনির হাতেই উঠবে ট্রফি। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে দাপটের সঙ্গে হারাল সেমিফাইনালেও।
কিন্তু তারপরেই বিপর্যয়। ফাইনালে মালিঙ্গার শ্রীলঙ্কার হাতে পর্যুদস্ত হতে হল ভারতকে। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৩০ রানে আটকে গেল ভারত। সঙ্গকারা-জয়বর্ধনের শ্রীলঙ্কা সেই রান টপকে গেল অনায়াসে। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের ফাইনালে এই ব্যর্থতা মানতে পারেননি ক্রিকেট ফ্যানেরা।
২০১৫ বিশ্বকাপ। এ বার লড়াই আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। হার না মানা অস্ট্রেলীয় জেদের কাছে আত্মসমর্পণ সেমিফাইনালে। এ বারেও গ্রুপ পর্বে অপ্রতিরোধ্য ছিল ভারত। জয় এসেছিল সবকটি ম্যাচেই। কিন্তু সেমিফাইনালে স্টিভ স্মিথের শতরানে ভর করে ৩২৮ রানের বড় টার্গেট দিল অস্ট্রেলিয়া।
রোহিত-শিখর জুটি ভাল শুরু করলেও ব্যর্থ হন কোহালি। রাহানে-ধোনি চেষ্টা করলেও ম্যাচ শেষ করতে পারেননি। সে বারেও রান আউট হয়ে ফিরতে হয় ধোনিকে। অস্ট্রেলিয়ার সামনে থমকে যায় পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।
২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপে আয়োজক দেশ ভারত। এশিয়া কাপ জিতে দারুন ফর্মে থাকা ভারতের কাছে আদর্শ পরিস্থিতি বিশ্বজয়ের। কিন্তু শুরুতেই কিউয়িদের বিরুদ্ধে মাত্র ১২৭ রান করতে ব্যর্থ হন কোহালিরা। যদিও তারপর ফিরে আসে দাপটের সঙ্গে।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সে বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ভারত হেরে যায় সেমিফাইনালে। প্রথমে ব্যাট করে ভারত ১৯২ রানের স্কোর খাড়া করে। কিন্তু ক্যারিবিয়ান দৈত্যরা সেই রান টপকে যায় দুই বল বাকি থাকতে। ব্যর্থ হয় ভারতীয় বোলিং।
২০১৭-র ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হার এখনও বোধহয় দগদগে হয়ে আছে ভারতীয় সমর্থকদের মনে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করুণ আত্মসমর্পণ। প্রথমে ব্যাট করে ফখর জামানের শতরানে ভর করে ৩৩৮ রান তোলে পাকিস্তান।
সে বারের শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং-এর সামনে ওই রানও ছিল খুব সহজ। কিন্তু কোনও ব্যাটসম্যানের কাছেই উত্তর ছিল না আমির, হাসানদের পেস আক্রমণের। মাত্র ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ব্যাটিং। এ বারের বিশ্বকাপের হার যেন ভারতকে ঠেলে দিচ্ছে চোকার্স তকমার দিকে।