উচ্ছ্বাস: শনিবার কার্ডিফে সেঞ্চুরি করে উল্লসিত জেসন রয়। ইংল্যান্ডও জিতল ১০৬ রানে। ছবি: এএফপি
জেসন রয়ের সেঞ্চুরিতেই ছিল জয়ের বার্তা। প্রত্যাশিত পথেই কার্ডিফে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়ে স্বমেজাজে ফিরল ইংল্যান্ড। তারই মধ্যে লড়াই করলেন একা শাকিব আল হাসান। অভিজ্ঞ বাংলাদেশ অলরাউন্ডার উপহার দিলেন ১১৯ বলে ১২১ রানের ইনিংস। তাতে ম্যাচের ছবিটা পাল্টাল না। রেকর্ড গড়ে জিতল ইংল্যান্ড।
টানা সাত ইনিংসে ৩০০ রানের বেশি করল ইংল্যান্ড। তার আগে এই রেকর্ড ধরে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২০০৭ সালে টানা ছয় ইনিংসে ৩০০ রানের বেশি করেছিল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানেরা দাপট দেখাচ্ছেন। অথচ অন্য ম্যাচগুলোতে বোলাররা কিছুটা হলেও সাহায্য পাচ্ছেন। ইংল্যান্ড ম্যাচের পিচ তাঁদের নির্দেশ মতো বানানো হচ্ছে কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এ দিকে শনিবার সেঞ্চুরি করার পরে শাকিবকে নিয়েও উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। চলতি বিশ্বকাপে তিন নম্বরে খেলতে নামছেন শাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৭৫ রান। শেষ ম্যাচে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬৪। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শাকিবের ব্যাট থেকে শনিবার বেরিয়ে এল ১২১ রানের লড়াকু ইনিংস। কিন্তু তাঁকে কেউ যোগ্য সঙ্গতই দিতে পারলেন না। ৩২ বছরের শাকিবের লড়াই থেকে গেল অসম্পূর্ণই। ম্যাচের শেষে হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজাও মেনে নিলেন, শাকিবকে কেউ যোগ্য সহায়তা করতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করল শাকিব। তবে কেউ ওকে সাহায্য করতে পারেনি। ’’
লড়াই: শাকিবের ১২১ রানের ইনিংস সত্ত্বেও হার বাংলাদেশের। ছবি: রয়টার্স।
শনিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জেসন রয়ের ১২১ বলে ১৫৩ রানই ইংল্যান্ডের জয়ের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিল। বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরির পরেই জেসন রয় ভারসাম্য হারিয়ে যে ভাবে আম্পায়ার জোয়েল উইলসনের ঘাড়ের উপর গিয়ে পড়লেন, তা নিয়ে হাসাহাসি শুরু হয়ে যায় মাঠে। ম্যাচের সেরা জেসন রয় বলেছেন, ‘‘দলকে সাহায্য করতে পেরে আমি গর্বিত। কয়েক বছর ধরে এ ভাবেই খেলছি।’’
জেসনের ইনিংস বাংলাদেশকে শিবিরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ম্যাচের বিরতিতে এসে যে প্রসঙ্গে এসে প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেন, ‘‘অনেক দিন পরে ইংল্যান্ড ক্রিকেট জেসনের মতো পরিপূর্ণ ওপেনার পেয়েছে। ’’
জেসন রয়কে যোগ্য সঙ্গত দিলেন জনি বেয়ারস্টো (৫০ বলে ৫১), জস বাটলার (৪৪ বলে ৬৪) এবং শেষের দিকে লায়াম প্লাঙ্কেটের মাত্র ন’বলে অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসে। ডেল স্টেন চোটের কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক আঙুল তুলেছিলেন আইপিএলের দিকে। শনিবার দেখা গেল, সেই আইপিএলের মেজাজই ধরে রেখেছেন বেয়ারস্টো এবং জস বাটলার। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক অইম মর্গ্যানের (৩৩ বলে ৩৫) সঙ্গে জুটি বেঁধে বাটলার যোগ করে গেলেন মূল্যবান ৯৫ রান।
স্কোরকার্ড
ইংল্যান্ড ৩৮৬-৬ (৫০)
বাংলাদেশ ২৮০ (৪৮.৫)
ইংল্যান্ড
রয় ক মর্তুজা বো মেহেদি ১৫৩ • ১২১
বেয়ারস্টো ক মেহেদি বো মর্তুজা ৫১ • ৫০
রুট বো সইফুদ্দিন ২১ • ২৯
বাটলার ক সৌম্য বো সইফুদ্দিন ৬৪ • ৪৪
মর্গ্যান ক সৌম্য বো মেহেদি ৩৫ • ৩৩
স্টোকস ক মর্তুজা বো মুস্তাফিজ়ুর ৬ • ৭
ওকস ন. আ. ১৮ • ৮
প্লাঙ্কেট ন. আ. ২৭ • ৯
অতিরিক্ত ১১
মোট ৩৮৬-৬ (৫০)
পতন: ১-১২৮ (বেয়ারস্টো, ১৯.১), ২-২০৫ (রুট, ৩১.৩), ৩-২৩৫ (রয়, ৩৪.৪), ৪-৩৩০ (বাটলার, ৪৫.২), ৫-৩৪০ (মর্গ্যান, ৪৬.৫), ৬-৩৪১ (স্টোকস, ৪৭.১)।
বোলিং: শাকিব আল হাসান ১০-০-৭১-০, মাশরাফি মর্তুজা ১০-০-৬৮-১, মহম্মদ সইফুদ্দিন ৯-০-৭৮-২, মুস্তাফিজ়ুর রহমান ৯-০-৭৫-১, মেহেদি হাসান মিরাজ় ১০-০-৬৭-২, মোসাদ্দেক হোসেন ২-০-২৪-০।
বাংলাদেশ
তামিম ক মর্গ্যান বো উড ১৯ • ২৯
সৌম্য বো আর্চার ২ • ৮
শাকিব বো স্টোকস ১২১ • ১১৯
মুশফিকুর ক রয় বো প্লাঙ্কেট ৪৪ • ৫০
মিঠুন ক বেয়ারস্টো বো রশিদ ০ • ২
মাহমুদল্লা ক বেয়ারস্টো বো উড ২৮ • ৪১
মোসাদ্দেক ক আর্চার বো স্টোকস ২৬ • ১৬
সইফুদ্দিন বো স্টোকস ৫ • ৮
মেহেদি ক বেয়ারস্টো বো আর্চার ১২ • ৮
মর্তুজা ন. আ. ৪ • ৯
মুস্তাফিজ়ুর ক বেয়ারস্টো বো আর্চার ০ • ৩
অতিরিক্ত ১৯ মোট ২৮০ (৪৮.৫)
পতন: ১-৮ (সৌম্য, ৩.২), ২-৬৩ (তামিম, ১১.৬), ৩-১৬৯ (মুশফিকুর, ২৮.৬), ৪-১৭০ (মিঠুন, ২৯.৩), ৫-২১৯ (শাকিব, ৩৯.৩), ৬-২৫৪ (মোসাদ্দেক, ৪৩.১), ৭-২৬১ (মাহমুদুল্লা, ৪৪.৬), ৮-২৬৪ (সইফুদ্দিন, ৪৫.৪), ৯-২৮০ (মেহেদি, ৪৮.২), ১০-২৮০ (মুস্তাফিজ়ুর, ৪৮.৫)।
বোলিং: ক্রিস ওকস ৮-০-৬৭-০, জোফ্রা আর্চার ৮.৫-২-২৯-৩, লায়াম প্লাঙ্কেট ৮-০-৩৬-১, মার্ক উড ৮-০-৫২-২, আদিল রশিদ ১০-০-৬৪-১, বেন স্টোকস ৬-১-২৩-৩।
১০৬ রানে জয়ী ইংল্যান্ড
ম্যাচের সেরা জেসন রয়