—ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের হারের পরে কেন সবাই মিলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দিকে তোপ দাগছেন তা মাথায় ঢুকছে না ভারতের প্রাক্তন তারকা সঞ্জয় মঞ্জরেকরের। ধোনির জন্য এই প্রবল অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়েও বরং তাঁর মনে হচ্ছে, জবাবদিহির সামনে পড়া উচিত এই ভারতীয় দলের কে এল রাহুলের মতো তরুণদেরও।
ইংরেজদের বিরুদ্ধে রবিবার ধোনি করেন ৪২ বলে ৩১ রান। শেষের দিকে রানের গতি তিনি বাড়াতে পারেননি। সঞ্জয়ের মনে হচ্ছে, এ হেন ইনিংসের সমালোচনা হতেই পারে কিন্তু শুধু তাঁকেই দোষারোপ করাটা অর্থহীন। বরং তিনি রাহুলদেরই কাঠগড়ায় তুলে বলতে চেয়েছেন যে দায়িত্বটা একা ধোনির ছিল না।
সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘হারের কারণ খুঁজতে বসে একা ধোনির ব্যর্থতা নিয়ে হইচই করাটা খুবই অন্যায়। বিশেষ করে ওর বয়সের কথা মাথায় রাখলে। আমাদের তো অন্য ব্যাটসম্যানেরাও ছিল। তারা কেন দেশকে জেতানোর কাজটা করে যেতে পারল না। এই ধরনের সমালোচনা বা পরিস্থিতি মোটেই ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয় বলে আমি মনে করি।’’
সঞ্জয় বরং কে এল রাহুলদেরই সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথা, ‘‘ধোনিকে নিয়ে এতটা হইচই করার কোনও মানে হয় না। জানি বেশি করে এটা করছে প্রচারমাধ্যম। যদি আমি ভারতীয় ক্রিকেটের সত্যিকারের একজন শুভাকাঙ্খী হই, তা হলে লোকেশ রাহুলের কথা বলতেই হবে। সঙ্গে তুলতে হবে অন্য ব্যাটসম্যানদের প্রসঙ্গও। ওদেরও তো উচিত ছিল এমন এমন ইনিংস খেলে যাওয়া যাতে কোনওভাবে ধোনির মতো সিনিয়র ক্রিকেটারকে এতটা চাপের মধ্যে পড়তে না হয়।’’
ধোনির পাশে দাঁড়ালেও প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে নিয়ে সঞ্জয়ের কিঞ্চিৎ অনুযোগও অবশ্য আছে। তাঁর কথা, ‘‘ওয়ার্মআপ ম্যাচে তো ধোনির খেলা দেখেছি। আমার কিন্তু বেশ ভাল লেগেছে। একটা ম্যাচে ৩০ বলে ৩০ রান করার পরে দিব্যি বড় শট মারা শুরু করল। তাই আমি চাইব, টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে বলুক, আসল ম্যাচগুলোতেও যেন অন্তত প্রতি বলে একটা করে রান নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা করলে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বুঝতে হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘স্কোর বোর্ডে ১২ রানে ২ উইকেট চলে গেলে অবশ্যই ধোনির রক্ষণটা দলের ভালর জন্য প্রয়োজন। কিন্তু ২২ থেকে ২৫ ওভারের মাথায় নামলে ওর উচিত অন্তত প্রতি বলে সিঙ্গলস নিয়ে স্কোরকে সচল রাখার।’’
সঞ্জয় নিজে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের খুবই ভক্ত। কর্নাটকের এই ওপেনারকে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া বিজয় শঙ্করের জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে। যেটা সঞ্জয়ের কাছে চমকপ্রদ একটা সিদ্ধান্ত এবং ঘটনা। বলেছেন, ‘‘বিজয় শঙ্কর খুবই ভাল ক্রিকেটার। চোট পেয়ে ওর ছিটকে যাওয়াটা অবশ্যই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের ব্যাপার। তবে মায়াঙ্ককে টিম ম্যানেজমেন্ট ডেকে নেওয়ায় সত্যিই দারুণ আনন্দ পেয়েছি।’’ ভারতের হয়ে ৩৭টি টেস্ট খেলা সঞ্জয়ের আরও কথা, ‘‘মায়াঙ্কের খেলা আমি দেখেছি। নিঃসন্দেহে খুব ভাল ক্রিকেটার। দারুণ সম্ভাবনাময়ও। এই সে দিন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ছেলেটার টেস্টে অভিষেক হয়েছে। ও আসায় বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে শক্তি বাড়তে বাধ্য। এই সিদ্ধান্তটা অন্তত খুব যুক্তিযুক্ত। হতে পারে ছেলেটার টেস্ট খেলার মানসিকতা বেশি ভাল। কিন্তু এ বার ইংল্যান্ডে যে পরিবেশে খেলা হচ্ছে এবং যে পিচে টুর্নামেন্ট চলছে তাতে টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে ওয়ান ডে-র আমি অন্তত বিশেষ ফারাক দেখছি না। তাই আবার বলছি যে মায়াঙ্ককে ডেকে টিম ম্যানেজমেন্ট একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদেরYouTube Channel - এ।