পাক-ভক্তদের মুখে স্লোগান: ভারত জিন্দাবাদ

নাটকীয় জয়ে স্বপ্ন বেঁচে রইল সরফরাজ়দের

অঙ্ক বলছে, রবিবার ইংল্যান্ডকে বিরাট কোহালির দল হারালে সেমিফাইনালের পথ আরও পরিষ্কার হবে পাকিস্তানের। তবে শেষ ম্যাচে সরফরাজ়দের হারাতে হবে বাংলাদেশকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০৩:৪৬
Share:

রুদ্ধশ্বাস: আফগানিস্তানকে হারিয়ে আমিরদের উচ্ছ্বাস। শনিবার। রয়টার্স

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতিয়ে ইমাদ ওয়াসিমরা ছুটলেন প্যাভিলিয়নের দিকে। আর গ্যালারিতে ‘জিবে জিবে পাকিস্তান’-এর সঙ্গে স্লোগান উঠল ‘ইন্ডিয়া জ়িন্দাবাদ’।

Advertisement

এমন অভাবনীয় দৃশ্যই শনিবার লিডসে দেখা গেল আফগানিস্তান বনাম পাকিস্তান দ্বৈরথে। অঙ্ক বলছে, রবিবার ইংল্যান্ডকে বিরাট কোহালির দল হারালে সেমিফাইনালের পথ আরও পরিষ্কার হবে পাকিস্তানের। তবে শেষ ম্যাচে সরফরাজ়দের হারাতে হবে বাংলাদেশকে।

আফগানিস্তানের ২২৭ রান তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ছয় রান। হাতে তিন উইকেট। ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন প্রতিষ্ঠিত সব ব্যাটসম্যানই। আফগান বোলারদের সামনে তখন ক্রিজে ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতাতে মরিয়া পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার ইমাদ ওয়াসিম ও ওয়াহাব রিয়াজ়।

Advertisement

গুলবাদিন নইবের সেই ওভারের চতুর্থ বলে চার মেরে পাকিস্তানকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত জয় এনে দিলেন ইমাদ। নিজেও অপরাজিত থেকে গেলেন ৪৯ রানে। সঙ্গী রিয়াজ়কে (অপরাজিত ১৫) নিয়ে ইমাদ ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিতেই মাঠের ভিতরে ঢুকে উৎসব শুরু করে দিল গোটা পাকিস্তান দল।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের ইনিংস শেষ হয়েছিল ২২৭ রানে। জবাবে দু’বল বাকি থাকতেই তিন উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। তাদের ইনিংস শেষ হয় ২৩০-৭।

জিতে পাক অধিনায়ক সরফরাজ় আহমেদও বলে গেলেন, ‘‘ম্যাচটা হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। জেতাল ইমাদ। ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে অবশ্যই চোখ রাখব। আশা করছি সেরা দলই জিতবে সে ম্যাচে।’’

৩৯ ওভারে পাক অধিনায়ক সরফরাজ় আহমেদ যখন রান আউট হয়ে ফিরছেন তখন স্কোরবোর্ডে পাকিস্তানের রান ছিল ১৫৬-৬। তাই এই রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে মাঠের মধ্যেই উৎসব শুরু করে দেন ইমাদরা। এর আগে আফগানিস্তান ব্যাট করার সময় ১০ ওভার বল করে ৪৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন ইমাদ। স্বভাবতই ম্যাচের সেরাও তিনি। ম্যাচ শেষে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পরিকল্পনা মতোই বল করে সফল ভাবে আফগানিস্তানকে আটকে রাখা গিয়েছে। আর্দ্র পরিবেশে বুদ্ধি করে বল করেছি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যখন ব্যাট করতে নেমেছিলাম, তখন রশিদ খান দুর্দান্ত বল করছিল। ওকে মারা যাচ্ছিল না। তাই পঞ্চাশ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিই। পরিকল্পনা ছিল পরের দিকে পেসাররা এলে ওদের আক্রমণ করা যাবে। সেই পরিকল্পনা সফল। এ বার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে পারব। সেই ম্যাচও জিততে হবে। জানি না তার পরে কী হবে। তবে মন বলছে, এই জায়গা থেকে আমরা কাপ জিততেই পারি।’’

এ দিন আফগানদের হারানোয় বেঁচে থাকল পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন। আট ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান উঠে এল চার নম্বরে। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারালে তাদের সুযোগ থাকবে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বল হাতে এ দিনও ঝলসে উঠলেন পাকিস্তানের তরুণ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৪৭ রানে চার উইকেট নিলেন তিনি।

টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক নইব। কিন্তু পাক বোলিংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেননি আফগানরা। পাঁচ ওভারের মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, অধিনায়ক গুলবাদিন ও হাশমাতুল্লাহ। এর পরে আফগানদের হয়ে পাক বোলিংয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই করেন ওপেনার রহমত শাহ (৩৫) ও মাঝের সারির ব্যাটসম্যান— ইকরাম আলিখিল (২৪), আসগর আফগান (৪২)।

স্কোরকার্ড
আফগানিস্তান ২২৭-৯ (৫০)
পাকিস্তান ২৩০-৭ (৪৯.৪)

আফগানিস্তান
রহমত ক বাবর বো ইমাদ ৩৫•৪৩
নইব ক সরফরাজ় বো আফ্রিদি ১৫•১২
শাহিদি ক ইমাদ বো আফ্রিদি ০•১
ইক্রম ক হাফিজ় বো ইমাদ ২৪•৬৬
অসগর বো শাদাব ৪২•৩৫
নবি ক আমির বো রিয়াজ় ১৬•৩৩
নাজিবুল্লা বো আফ্রিদি ৪২•৫৪
সামিউল্লা ন. আ. ১৯•৩২
রশিদ ক ফখর বো আফ্রিদি ৮•১২
হামিদ বো রিয়াজ় ১•৩
মুজিব ন. আ. ৭•৯
অতিরিক্ত ১৮
মোট ২২৭-৯(৫০)
পতন: ১-২৭ (নইব, ৪.৪), ২-২৭ (শাহিদি, ৪.৫), ৩-৫৭ (রহমত, ১১.৬), ৪-১২১ (অসগর, ২৫.২), ৫-১২৫ (ইক্রম, ২৬.৬), ৬-১৬৭ (নবি, ৩৬.৪), ৭- ২০২ (নাজিবুল্লা, ৪৪.৪), ৮-২১০ (রশিদ, ৪৬.৪), ৯-২১৯ (হামিদ, ৪৮.২)।
বোলিং: ইমাদ ওয়াসিম ১০-০-৪৮-২, মহম্মদ আমির ১০-১-৪১-০, শাহিন শাহ আফ্রিদি ১০-০-৪৭-৪, মহম্মদ হাফিজ় ২-০-১০-০, ওয়াহাব রিয়াজ় ৮-০-২৯-২, শাদাব খান ১০-০-৪৪-১।
পাকিস্তান
ফখর এলবিডব্লিউ বো মুজিব ০•২
ইমাম স্টাঃ ইক্রম বো নবি ৩৬•৫১
বাবর বো নবি ৪৫•৫১
হাফিজ় ক শাহিদি বো মুজিব ১৯•৩৫
সোহেল এলবিডব্লিউ বো রশিদ ২৭•৫৭
সরফরাজ় রান আউট নাজিব ১৮•২২
ইমাদ ওয়াসিম ন. আ. ৪৯•৫৪
শাদাব রান আউট গুলবাদিন ১১•১৭
ওয়াহাব রিয়াজ় ন. আ. ১৫•৯
অতিরিক্ত ১০ মোট ২৩০-৭ (৪৯.৪)
পতন: ১-০ (ফখর, ০.২), ২-৭২ (ইমাম, ১৫.৬), ৩- ৮১ (বাবর, ১৭.২), ৪-১২১ (হাফিজ় ২৯.১), ৫-১৪২ (হ্যারিস ৩৪.৬), ৬-১৫৬ (সরফরাজ়, ৩৮.৬), ৭-২০৬ (শাদাব, ৪৬.৪)।
বোলিং: মুজিব উর রহমান ১০-১-৩৪-২, হামিদ হাসান ২-০-১৩-০, গুলবদিন নইব ৯.৪-০-৭৩-০, মহম্মদ নবি ১০-০-২৩-২, রশিদ খান ১০-০-৫০-১, সামিউল্লাহ শিনওয়ারি ৮-০-৩২-০।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement