ফাইনালে কিন্তু কেউ হারেনি, বলে দিলেন উইলিয়ামসন

উইলিয়ামসনের সঙ্গে একমত হওয়ার লোক অবশ্য অনেক পাওয়া যাবে। কেউ কেউ তো এমনও বলেছেন, সুপার ওভারও টাই হওয়ার পরে অবশ্যই ইংল্যান্ড এবং নিউজ়িল্যান্ডকে যুগ্ম ভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেওয়া উচিত ছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৪:১৯
Share:

সম্মান: সচিনের হাত থেকে বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার নিচ্ছেন উইলিয়ামসন। ফাইল চিত্র

অবিশ্বাস্য ভাবে বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছিলেন, ‘‘এই হার লজ্জার। এই ভাবে আর কেউ যেন না হারে।’’ এ বার দেশের এক রেডিয়ো চ্যানেলকে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক বলে দিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনাল কেউ হারেনি।’’

Advertisement

উইলিয়ামসনের সঙ্গে একমত হওয়ার লোক অবশ্য অনেক পাওয়া যাবে। কেউ কেউ তো এমনও বলেছেন, সুপার ওভারও টাই হওয়ার পরে অবশ্যই ইংল্যান্ড এবং নিউজ়িল্যান্ডকে যুগ্ম ভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেওয়া উচিত ছিল। প্রথমে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ম্যাচ এবং পরে সুপার ওভারও টাই হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মারায় বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ইংল্যান্ড। নিউজ়িল্যান্ড যেখানে ৫০ ওভারে ১৬টি বাউন্ডারি মেরেছিল, সেখানে ইংল্যান্ড মারে ২৪টি। কিন্তু বেশি বাউন্ডারি মারার এই নিয়মের সমালোচনাও করেছেন অনেকে। ভারতের রোহিত শর্মা এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার যুবরাজ সিংহ— দু’জনেই প্রশ্ন তুলেছেন এই নিয়ম নিয়ে। দাবি উঠেছে, এই নিয়ম বদলে ফেলার।

এ বার নিউজ়িল্যান্ডের রেডিয়োয় উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘‘দিনের শেষে দু’দলের মধ্যে কোনও তফাত ছিল না। ফাইনালে কেউ হারেনি। কিন্তু এক জন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেটাই হল আসল ব্যাপার।’’

Advertisement

‘অত্যন্ত ভদ্রলোক’ ক্রিকেটার বলে পরিচিত উইলিয়ামসন অবশ্য কোনও ভাবেই কাঠগড়ায় তুলতে রাজি নন আইসিসি-কে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছেন, প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই তাঁরা সব নিয়ম জানতেন। নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উইলিয়ামসন হেসে বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ শেষে এই প্রশ্নটা যে আপনাদের করতে হবে আর আমাকে শুনতে হবে, এটা কেউ কখনও ভাবেনি। কিন্তু কী আর করা যাবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আবেগ যখন টাটকা থাকে, তখন এই ধরনের ফল হজম করা খুব কঠিন হয়ে যায়। দু’দুবার চেষ্টা করেও দু’টো দলকে আলাদা করা যায়নি।’’

নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক এই নিয়ম নিয়ে কিছু না বললেও দলের কোচ গ্যারি স্টিড কিন্তু নিয়ম বদলানোর দাবি তুলেছেন। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘‘দুটো দলই ৫০ ওভার করে খেলল, দুটো দলই সমান রান করল। কিন্তু একটা দলকে হেরে যেতে হল। এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে?’’ তা হলে কি এই নিয়ম বদল করা উচিত? স্টিড বলেন, ‘‘অনেক কিছু নিয়েই ভেবে দেখার দরকার আছে। আমি নিশ্চিত, ওরা যখন নিয়মগুলো লিখতে বসেছিল, তখন ভাবেনি বিশ্বকাপ ফাইনালে এই ফল হবে। আমি নিশ্চিত, এই নিয়ম নিয়ে পর্যালোচনা হবে। এবং আবার এই পরিস্থিতি হলে কী করা দরকার, তাও নতুন করে ভেবে দেখা হবে। সেটাই যুক্তিযুক্ত।’’

শুধু এই নিয়ম নয়। আরও একটা ব্যাপার নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে ক্রিকেট-বিশ্ব। জানা গিয়েছে, বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে যে বল বাউন্ডারিতে পৌঁছেছিল, তাতে আম্পায়ারের ছয়ের বদলে পাঁচ রান দেওয়া উচিত ছিল। আম্পায়ারের এই ভুল নিয়ে অবশ্য বিশেষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন না স্টিড। নিউজ়িল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘‘আমি ব্যাপারটা জানতাম না। দিনের শেষে সিদ্ধান্ত তো আম্পায়ারদেরই নিতে হবে। কিন্তু ক্রিকেটারদের মতো আম্পায়াররাও মানুষ। খেলায় এই ব্যাপারটা থাকবেই।’’

পরপর দু’বার বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে ক্রিকেট-বিশ্বকে চমকে দিয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। বিশ্বকাপ না পেলেও নিউজ়িল্যান্ডকে নিয়ে কম মাতামাতি হচ্ছে না। কিন্তু ক্রিকেটারেরা দেশে ফেরার পরে তাদের নিয়ে আপাতত কোনও উৎসব হবে না। তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ক্রিকেটারেরা কেউ একসঙ্গে দেশে ফিরছেন না। তাঁরা ভাগে ভাগে ফিরছেন। নিউজ়িল্যান্ড ক্রিকেটের চিফ এগজিকিউটিভ ডেভিড হোয়াইট বলেছেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, কোনও কোনও ক্রিকেটার এখন দেশেই ফিরছে না। কেউ কেউ পরে ফিরবে। আর যারা ফিরছে, তারাও কেউ একসঙ্গে ফিরছে না। যার ফলে এই মুহূর্তে ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement