প্রশংসা: হার্দিকের পাওয়ারহিটিংয়ে অভিভূত কোহালি। এ ভাবেই চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালি যে কোনও সময় নিজের ব্যাটিংকে প্রথম গিয়ার থেকে চতুর্থ গিয়ারে নিয়ে চলে যেতে পারেন। যে কোনও বোলিং আক্রমণকে চূর্ণ করে দিতে পারেন তিনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলেও নিজের স্ট্রাইক রেট একশোর খুব বেশি বাড়াতে পারেননি কোহালি। কেন এ রকম হল? কোহালি জানাচ্ছেন, এর কারণ হার্দিক পাণ্ড্যের বিধ্বংসী ব্যাটিং। ভারত অধিনায়ক মনে করেন, উল্টো দিকে হার্দিকের মতো ব্যাটসম্যান থাকলে গিয়ার বদলের সে রকম প্রয়োজন হয় না।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৭ বলে ৮২ রান এসেছে কোহালির ব্যাট থেকে। মেরেছেন মাত্র চারটে চার, দুটো ছয়। উল্টো দিকে হার্দিকের ৪৮ এসেছে মাত্র ২৭ বলে। ওই ইনিংস খেলার সময় কখনও কি মনে হয়েছিল এ বার আরও আগ্রাসী ব্যাটিং করা যায়? অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পরে প্রশ্ন করা হয়েছিল কোহালিকে। ভারত অধিনায়ক জবাব দেন, ‘‘এক বার ভেবেছিলাম এ বার অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের আক্রমণ করব। আমার হাফসেঞ্চুরি হয়ে যাওয়ার পরে হার্দিকের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও বলি। কিন্তু ও আমাকে বলে, ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।’’
শুধু তাই নয়, হার্দিক তাঁর অধিনায়ককে আরও বলেন, দেখে শুনে ব্যাট করতে। সে কথা জানিয়েছেন কোহালি নিজেই। তিনি বলেন, ‘‘হার্দিক আমাকে এসে বলল, তুমি এক দিকে থাকলে আমি বড় শট খেলার ঝুঁকি নিতে পারব। যে কারণে আমি একটা দিক ধরে রেখেছিলাম। তবে ঝুঁকি না নিয়েও ছন্দ নষ্ট হতে দিইনি।’’
তাঁর এবং হার্দিকের মধ্যে ম্যাচ চলাকালীন কী কথোপকথন হয়েছে, তার একটা আভাস ম্যাচের পরে এই ভাবে দিয়েছেন কোহালি। হার্দিক নামার পরে ভারতের রান রেটও বাড়তে থাকে। কোহালিই জানাচ্ছেন, এই অলরাউন্ডার দুশো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে চেয়েছিলেন। ‘‘হার্দিক নেমেই বলে, তুমি এক দিকে থাকলে আমি প্রথম বল থেকেই বড় শট খেলার আত্মবিশ্বাস পাব। হার্দিকের পরিকল্পনাই ছিল, দুশো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা। তার পরে এম এস এসে নিজের কাজটা দারুণ ভাবে করে যায়,’’ বলেছেন ভারত অধিনায়ক।
উল্টো দিকে এক জন ব্যাটসম্যান যখন ওই ভাবে মারছেন, তখন নিজেকে গুটিয়ে রাখতে সমস্যা হয়নি? কোহালি বলছেন, ‘‘হার্দিক বা এম এস ধোনি যখন ওই রকম আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে, তখন উল্টো দিকে আমার ধরে খেলতে সমস্যা নেই। আমি তখন সিঙ্গলস নিয়ে ওদের স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টা করে যাই। আবার যখন সুযোগ আসবে, তখন মারব। আমরা এগুলোই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিই।’’ কোহালি আরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘কোনও ব্যাটসম্যান যদি কখনও ভাল স্ট্রাইক রেট রেখে খেলতে থাকে, তখন আপনার কাজ হয় একটা দিক ধরে রেখে খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। কারণ, ওই সময় পরপর কয়েকটা উইকেট পড়ে গেলে রানটা প্রত্যাশা মতো ওঠে না।’’
কোহালি মনে করেন, কার কাছ থেকে দল কখন কী চায়, সেটা সম্পর্কে ক্রিকেটারদের পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডারে বদল নিয়ে কোহালি বলেছেন, ‘‘ঠিক ছিল, আমি আউট হলে ধোনি নেমে ম্যাচটাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আর ধওয়ন আউট হলে হার্দিক নামবে। সে ভাবেই আমরা এগিয়েছি। এই মাঠে আমরা ৩৩০ তুলেও এর আগে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গিয়েছি। তাই ধওয়ন আউট হতেই টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে খবর পাঠানো হয়, এ বার হার্দিক নামছে, যাতে বড় রান তোলার সুযোগটা কাজে লাগানো যায়।’’
তবে কোহালির একটা আফসোস থেকে যাচ্ছে। শেষ দিকে নিয়মিত স্ট্রাইক না পাওয়া। যার ফলে সে ভাবে স্ট্রাইক রেট বাড়াতে পারেননি তিনি। কোহালি বলেছেন, ‘‘শেষ পাঁচ, ছয় ওভারে আমি বোধ হয় গোটা ছয়েক বল খেলতে পেরেছি। তিন ওভার বাদে বাদে একটা বল খেলি আর সেই বলেও সিঙ্গল নিয়ে নিয়েছি। এর জন্য এক জন ব্যাটসম্যানের ছন্দ নষ্ট হয়ে যায়। তবে ওয়ান ডে ক্রিকেটে এ
সব হতেই থাকে।’’