হুঙ্কার: জয়ের রান নেওয়ার পথে অধিনায়ক অইন মর্গ্যান। রয়টার্স
ইংল্যান্ডের পয়া মাঠ এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়াকে আট উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার পরে উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড অধিনায়ক অইন মর্গ্যান। বিশ্বকাপে এর আগে ১৯৯২ সালে শেষ বার ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। ২৭ বছর পরে সেই বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড শিবির।
ম্যাচের পরেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক অইন মর্গ্যান বলেন, ‘‘দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। যে সমর্থকরা আজ মাঠে আমাদের সমর্থন করতে এসেছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ। এজবাস্টন এমনিতেই আমাদের পয়া মাঠ। সেই মাঠে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জেতাটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভারতকে এই মাঠেই হারিয়েছিলাম। তাই আত্মবিশ্বাসটা আজ দুর্দান্ত ছিল।’’ ইংল্যান্ড অধিনায়ক সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ফাইনালে যাওয়ার জন্য প্রতি ম্যাচে আত্মবিশ্বাসটা ধীরে ধীরে সংগ্রহ করেছিলাম আমরা।’’
এর পরেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ ক্রিস ওকসের প্রশংসা করে মর্গ্যান বলেন, ‘‘ওকস ঠান্ডা মাথার বোলার। আজ দুরন্ত ছন্দে বল করেছে। ও আর জোফ্রার বোলিং জুটিটা এই বিশ্বকাপে আমাদের অন্যতম শক্তি। আর ওপেনিংয়ে জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো-তো জীবনের সেরা ছন্দে রয়েছে। ২০১৫ সালে যে অবস্থায় দল ছিল তার চেয়ে অনেক উন্নতি করেছি আমরা। এই সাফল্য গোটা দলের।’’ ইংল্যান্ড অধিনায়ক আরও বলেন, ‘‘১৯৯২ সালে যখন আমরা ফাইনাল খেলেছিলাম তখন আমার বয়স ছিল ছয়। তাই সে দিনের কথা মনে নেই। তবে সেই ফাইনালের হাইলাইটস যে কতবার দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই। ফের আমাদের সামনে বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ আসতে চলেছে রবিবার। এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।’’
ম্যাচ সেরা ক্রিস ওকসও ফাইনালে ওঠার আনন্দে বলছেন, ‘‘সেমিফাইনাল ম্যাচ খেলতে নামছি বলে সকালে একটু নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। তার পরে উইকেট দেখে আস্থা ফিরে পাই। মনে হয়েছিল ঠিক লাইনে বল করে যেতে পারলে সাফল্য আসবে। মাঠে নেমে সেটাই করেছি। ১৯৯২ সালে বয়স ছিল তিন। রবিবার বিশ্বকাপের ফেভারিট দেশ হিসেবে কাপ জিতে আনন্দে ভাসতে চাই।’’
অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের গলায় তখন হতাশা। ম্যাচ হেরে তিনি বলে গেলেন, ‘‘ইংল্যান্ডের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছি আমরা। প্রথম দশ ওভারে সাতাশ রানে তিন উইকেট চলে যাওয়াতেই ম্যাচটা অনেকটাই চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের দখলে। লেংথ আঁটসাঁট রেখে দুর্দান্ত বলও করল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ জেতার জন্য যে অভিযান শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের মাটিতে। সেই কাপের খুব কাছ থেকে ফিরে গেলাম আমরা।’’
বৃহস্পতিবার আবার বিতর্ক ওঠে আম্পায়ারিং নিয়েও। সেঞ্চুরির কাছাকাছি এসে পড়া ইংল্যান্ড ওপেনার জেসন রয়ের আউট ঘিরেই যত নাটক বার্মিংহামে। দুরন্ত ফর্মে থাকা রয় তখন ব্যাট করছেন ৮৫ রানে। প্যাট কামিন্সের একটা বল পুল করতে যান তিনি। বল চলে যায় উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তোলেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে, বল রয়ের ব্যাটে বা গ্লাভসে— কোনওটাতেই লাগেনি। এর পরে উত্তেজিত রয়ের সঙ্গে কথা বলেন অন্য আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস। প্যাভিলিয়নে পৌঁছনোর পরে দেখা যায় উত্তেজিত ইংল্যান্ড ওপেনার গ্লাভস খুলে ছুড়ে ফেলছেন। এজবাস্টনের যে পিচে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে রীতিমতো অসহায় দেখিয়েছে, সেখানে কিন্তু ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি আবার সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ করল।