আজকে জিততে মরিয়া টাইগাররা। ছবি: এএফপি।
ইদ মানে আনন্দ উৎসব। আর সেই ইদের দিন রাতে বিশ্বকাপের যুদ্ধে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩৩০ রান তুলে জেতার পর উৎসবের দিন দ্বিতীয় বিজয় দেখার জন্য অপেক্ষায় লাল সবুজ পতাকার দেশটি। আর সে আশায় আরও উৎসাহ দিয়েছে সৌম্য সরকারের বক্তব্য।
আরও পড়ুন: সাদা বলের লড়াইয়ে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা
আরও পড়ুন: আজ মেঘলা আকাশ থাকলে ভারত নামুক চার পেসারে
কাল দুপুরে দলের প্রতিনিধি হয়ে লন্ডনে হোটেলের লবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রত্যয়ী সৌম্য মনে করিয়ে দিলেন, এটা ডানেডিন, ক্রাইস্টচার্চ বা নেপিয়ার না-এটা ওভাল। মাঠটি নিউজিল্যান্ড অথবা বাংলাদেশ কারও ঘরের মাঠ নয়। সৌম্য সরকারের ভাষ্য, ‘‘ওদের মাটিতে যেটা খেলে এসেছি, ওটা ছিল ওদের কন্ডিশন, এটা ভিন্ন মাঠ। যত ভাল দল হোক, অন্য মাঠে খেলতে গেলে সেটা কিছুটা কঠিন মনে হবে। দিনের শেষে যারা ভাল খেলবে ম্যাচের ফল তাদের পক্ষে যাবে।’’ বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য আরও বলেছেন, ‘‘লড়াইটা নিউজিল্যান্ডে নয়, ইংল্যান্ডে। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড কারও হোম গ্রাউন্ড নয় এটি’’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার সেই স্মৃতি এখনও দগদগে থাকলেও এ বারের বিশ্বকাপের শুরুর ম্যাচ অনেকটাই প্রত্যয়ী করেছে টাইগার্সদের- টাটকা সেই স্মৃতি ধূসর হয়েছে অনেকটাই— প্রথম জয়ের আনন্দে।
এই উপমহাদেশের শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়ার পর নিউজিল্যান্ডর মনোযোগ বাংলাদেশের দিকেই। তবে দেশের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেওয়া আর ওভালের টক্করের মধ্যে ফারাক অনেকটাই। এর মাঝে ত্রিদেশীয় কাপ জয়, প্রথম ম্যাচে ৩৩০ রানের পাহাড় গড়ায় এখন বাংলাদেশ দলের চোখে সামনে এগোনোর প্রত্যয়। সে কারণেই ক্রিকেট বোদ্ধাদের মনেও প্রশ্ন- ওভাল কি নিউজিল্যান্ডের জন্য? কারণ— এবারের আসরে শ্রীলঙ্কাকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দুর্দান্ত জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশও ৩৩০ রান করে ২১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে প্রথম ম্যাচে।
লন্ডনের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়ার মিল এবং ওই দলের জনপ্রিয়তা নিয়েও সৌম্য কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মাঠ দুই দলেরই ভিন্ন। আবহাওয়ায় মিল থাকতে পারে। তবে কেউ বলতে পারবে না এটা আমার হোম। এটা বড় টুর্নামেন্টে। এই টুর্নামেন্টের একটা চাপ থাকে। যারা বলবে নিউজিল্যান্ড বড় দল ওদের ওপর চাপ থাকবে, কারণ ওদের নিয়ে তখন প্রত্যাশা বেশি থাকবে। আমরা যদি এটা কাজে লাগাতে পারি, অনেক ভালো হবে। আমরা জিতব, মানসিক ভাবে শক্ত থেকে এই বিশ্বাস নিয়েই নামব।’’
নিউজিল্যান্ড এ বছরে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমে বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও- সাউথ আফ্রিকার বাংলাদেশের কাছে হারের পর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের আগের সেই দলের সাথে এখনকার দলটির বেশ মধ্যে ফারাকও দেখছে দেশটি। সে সময়ে সিরিজে না থাকা সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপ মাঠে রয়েছেন- বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডারের উপস্থিতিতে বাংলাদেশকে বিপজ্জনক ভাবছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান টম ল্যাথাম। সাকিবের মোকাবিলায় নেটে একজন বাঁহাতি স্পিনারকে খেলছেন তারা।
কয়েকমাস আগে টানা তিন ম্যাচ হারলেও মাত্র দুই বছর আগেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডের মাঠেই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। সে কারণেই বাংলাদেশ দল যেমন আজ আশাবাদী- তেমনই আশাবাদী দেশটির প্রতিটি নাগরিক। ওভালে শেষ পর্যন্ত উৎসবে উড়বে– সবুজ জমিনে লাল বৃত্তের বাংলাদেশের পতাকাটিই।