প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাসের জেরে ক্রিকেটে একাধিক নতুন সতর্কতা আনার প্রস্তাব দিল আইসিসি। প্রত্যেকটি দেশের বোর্ডকে তারা এক জন চিফ মেডিক্যাল অফিসার রাখার কথা বলেছে। যাতে ক্রিকেটে ফেরার সময়ে সমস্ত দেশের সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে পারেন ক্রিকেটারেরা। আইসিসির মতে, এই সব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা সহজ হবে এক জন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে থাকলে।
তবে নানা যে সব পরিবর্তন আনার কথা বলেছে ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা, তার মধ্যে সব চেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে, আম্পায়ারদের জন্য গ্লাভস পরার ব্যবস্থা। খেলার মধ্যে বারবারই বল ধরতে হয় আম্পায়ারদের। বিশেষ করে ওয়ান ডে ক্রিকেটে দু’দিক থেকে দু’টি বল ব্যবহার করা হয় বলে একটি ওভার শেষে সেই বলটি তুলে দিতে হয় আম্পায়ারের হাতে। ক্রিকেটে বল-বিকৃতি রুখতে আইসিসি এমন নিয়মও করে দিয়েছে যে, ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলটি তুলে দিতে হবে আম্পায়ারের হাতে। যাতে নতুন ব্যাটসম্যান আসার মধ্যবর্তী সময়ে ফিল্ডিং দল বল নিয়ে কোনও কারসাজি না-করতে পারে। এমনকি, ফিল্ডিং দল ডিআরএস চাইলেও বলটি দিয়ে দিতে হয় আম্পায়ারকে। সেই কারণে আম্পায়ারকে সর্বক্ষণ গ্লাভস ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আইসিসি জানিয়েছে, ম্যাচের আগে চোদ্দো দিনের নিভৃতবাস পর্বও চালু করতে।
ম্যাচের আগে নিভৃতবাস পর্বে নিয়মিত ভাবে শরীরের তাপমাত্রা মাপা এবং কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। ফুটবলবিশ্বে যে জিনিস চালু করে দেওয়া হয়েছে। জুভেন্টাসে যেমন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-সহ সব ফুটবলারের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। স্পেনে লিয়োনেল মেসিদের বার্সেলোনা বা জ়িনেদিন জ়িদানের রিয়াল মাদ্রিদ থেকে শুরু করে সব লা লিগা ক্লাবে একই নিয়ম মানা হচ্ছে। জার্মানির বুন্দেশলিগাতেও প্রচুর পরীক্ষা করা হয়েছে। আইসিসি বলছে, প্র্যাক্টিস এবং ম্যাচের মধ্যেও যতটা সম্ভব করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে। তারা আরও বলেছে, ক্রিকেটারেরা যেন সোয়েটার, টুপি বা তোয়ালে আম্পায়ারদের হাতে তুলে না-দেন। খেলার মাঝে বল ধরতে হবে, সেটাও যেন আম্পায়ারেরা গ্লাভস পরে ধরেন। ক্রিকেটারদের মধ্যে সারাক্ষণ দেড় মিটারের দূরত্ব রাখার কথাও বলে হয়েছে আইসিসি নির্দেশিকায়। যদিও ফিল্ডিং সাজানোর ক্ষেত্রে সব সময় তা রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে। সব চেয়ে অসুবিধা হবে স্লিপ ফিল্ডিং সাজাতে গিয়ে। অন্যান্য ফিল্ডিং পোজিশনের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হলেও প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্লিপকে কী করে দেড় মিটারের তফাত মেনে দাঁড় করানো সম্ভব, সেই তর্ক থাকছে। ট্রেনিংয়ে দূরত্ব রাখার জন্য ছোট ছোট গ্রুপে অনুশীলনের কথা বলা হয়েছে। ট্রেনিংয়ের মধ্যে শৌচালয়েও যাওয়া যাবে না।
ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের মধ্যে স্যানিটাইজ়ার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং সব সময় তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। বোলারদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে আইসিসি। বলেছে, দীর্ঘ বিরতির পরে মাঠে ফিরে বোলারদের চোট-আঘাতের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ম্যাচে ফেরার আগে বোলারদের পাঁচ-ছয় সপ্তাহের পুরোদস্তুর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয় বলেও তারা জানিয়েছে। এ ছাড়া ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত বয়স্ক সদস্যদের দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।