(বাঁ দিক থেকে) বিনেশ ফোগাট, বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিক। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় কুস্তিতে নতুন সমস্যা। বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক এবং বিনেশ ফোগাটের বিরুদ্ধে এ বার প্রতিবাদে সামিল দেশের শতাধিক তরুণ কুস্তিগির। নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে নতুন প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তাঁরা। শতাধিক কুস্তিগিরের দাবি বজরং, সাক্ষী এবং বিনেশদের আন্দোলনের জন্য অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ভারতীয় কুস্তিতে। এর ফলে গত এক বছরে তাঁরা বেশ কিছু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ হারিয়েছেন। অন্য দিকে, সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে নতুন করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন সাক্ষী।
দিল্লি, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অংশ থেকে শতাধিক তরুণ কুস্তিগির বুধবার যন্তর মন্তরে জমায়েত করেন। পুলিশকে না জানিয়েই তাঁরা জমায়েত করেন। তাঁদের বক্তব্য, বজরংদের আন্দোলনের ফলে তাঁদের কুস্তিজীবনের এক বছর নষ্ট হয়েছে। তিন রাজ্যের বিভিন্ন কুস্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তাঁরা বাসে করে প্রতিবাদ স্থলে আসেন। ‘তিন কুস্তিগিরের হাত থেকে কুস্তিকে রক্ষা করুন’ বলে স্লোগান দেন তাঁরা। বজরং, সাক্ষী এবং বিনেশের বিরুদ্ধেও স্লোগান প্রতিবাদী শতাধিক কুস্তিগির। উল্লেখ্য, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রধান মুখ ছিলেন বজরং, সাক্ষী এবং বিনেশ।
দেশের তরুণ কুস্তিগিরদের একাংশ তাঁদের বিরুদ্ধে যখন সোচ্চার, সে সময় মুখ খুললেন সাক্ষী। তাঁর বক্তব্য, ব্রিজভূষণ-ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহকে সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থা থেকে বাদ দিতে হবে। অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগির বলেছেন, ‘‘এক জন বাদে ফেডারেশনের নতুন কর্তাদের নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। সঞ্জয় সিংহকে বাদ দিয়ে কমিটি তৈরি করা হলেই আমরা খুশি। আমাদের নতুন কোনও দাবি নেই। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের তৈরি করে দেওয়া অ্যাড হক কমিটিকে নিয়েও সমস্যা নেই আমাদের।’’
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধেও নতুন করে সরব হয়েছেন সাক্ষী। তিনি বলেছেন, ‘‘গত দু-তিন দিন ধরে ব্রিজভূষণের আশ্রিত গুন্ডারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমার মাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার পরিবারের কাউকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমাজমাধ্যমেও আমাদের অনেকে সমালোচনা করছেন। তাঁদের মনে রাখা উচিত, তাঁদেরও বোন বা কন্যাসন্তান রয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের কাছে তাঁর আর্জি, ব্রিজভূষণ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা কুস্তি সংস্থার ক্ষমতায় থাকবেন না, এটুকু আশ্বাস দেওয়া হোক। সাক্ষী বলেছেন, ‘‘ব্রিজভূষণ ক্ষমতার কতটা অপব্যবহার করতে পারেন, তা সকলে দেখেছেন।’’
তরুণ কুস্তিগিরদের একাংশের আন্দোলনের পিছনেও ব্রিজভূষণের মদত দেখছেন সাক্ষী। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা জানি ব্রিজভূষণ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাঁর ক্ষমতা ঠিক কতটা, তা আমরা এখনও জানি না। তরুণদের কুস্তিজীবন নষ্ট করার অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমি আগেই অবসর ঘোষণা করেছি। আমি চাই ছোট ছোট মেয়েরা সেই সাফল্য পাক, যা আমি পাইনি। আমি চাই ওরা অলিম্পিক্সে রুপো বা সোনা জিতুক দেশের জন্য। আমাদের জন্য কোনও তরুণ কুস্তিগিরের ক্ষতি হোক চাই না।’’ সব মিলিয়ে ভারতীয় কুস্তিতে সমস্যা মেটার বদলে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে।