ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে চোখধাঁধানো গোল করেছিলেন চামোরো।
বাবার নামেই এখন পরিচিত ছেলে। স্পেনেও, কলকাতাতেও। সালভাদর পেরেজ মার্টিনেজ বললে কেউ চিনবেন না তাঁকে। কিন্তু যদি বলা যায় চামোরো, তা হলে এক ডাকে সবাই চিনতে পারবেন মোহনবাগানের স্পেনীয় স্ট্রাইকারকে।
সবুজ-মেরুনের দীর্ঘদেহী স্ট্রাইকার বলছেন, “আমি আমার বাবার নামেই এখন পরিচিত হয়ে গিয়েছি। আমাকে কেউ পেরেজ বা মার্টিনেজ বলে চেনেই না। সবাই আমাকে চামোরো নামেই ডাকে।’’
ছেলে স্ট্রাইকার। বাবা এক সময়ে খেলতেন উইংয়ে। সিনিয়র চামোরো প্রসঙ্গে গর্বিত শোনায় ছেলেকে, ‘‘আমার বাবা উইংগার ছিলেন। বল পায়ে দারুণ গতিতে দৌড়তেন। ৩০ বছর আগে স্পেনের তৃতীয় ডিভিশনের ক্লাব এফসি কারতাহেনায় খেলতেন।’’ এখন অবশ্য বয়স থাবা বসিয়েছে সিনিয়র চামোরোর শরীরে।
আরও পড়ুন: ডুরান্ড জিতবই, বলছেন সুহের
সালভাদর পেরেজ মার্টিনেজ থেকে কী ভাবে তিনি হয়ে গেলেন চামোরো? কী ভাবে বদলে গেল তাঁর নাম? বাগানের চামোরো বলছেন, ‘‘আমার বাবার নাম সালভাদোর চামোরো। বাবার দ্বিতীয় নামেই এখন আমার পরিচয়।’’
ডুরান্ড-সেমিফাইনালে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে দুরন্ত ভলিতে চামোরো প্রথমে এগিয়ে দেন সবুজ-মেরুনকে। শনিবার ফাইনালে মোহনবাগানের সামনে গোকুলম। স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চামোরো আগে বলেছিলেন, “আমি লম্বা স্ট্রাইকার। তাই হেডে গোল করতেই পছন্দ করি।” রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে তাঁর পা কথা বলে। ডুরান্ড-ফাইনালের আগে চামোরো বলছেন, ‘‘সেমিফাইনাল ম্যাচটা খুব কঠিন ছিল। ওরা শেষ লগ্নে ম্যাচে ফিরে আসে। অতিরিক্ত সময়ে আমরা ম্যাচ বের করে নিই। ওদের থেকে অনেক ভাল খেলি। সেমিফাইনাল ম্যাচ এখন আমাদের কাছে অতীত। আমরা ফাইনাল নিয়ে ভাবছি। ফাইনালের জন্য তৈরি হচ্ছি। মরসুমের প্রথম ফাইনাল। ট্রফি জিততে তো সবাই চায়।’’
ডুরান্ড কাপ ফাইনালের আবহ তৈরি। কলকাতা লিগের প্রথম দুটো ম্যাচে মোহনবাগান হোঁচট খাওয়ায় সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। ডুরান্ডের ফাইনালে প্রিয় দল ওঠায় সমর্থকরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল বিদায় নেওয়ায় কলকাতার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে মোহনবাগান। আজ, শুক্রবার বিকেলেই কলকাতা পৌঁছে যাচ্ছেন মোহনবাগানের প্রাক্তন কোচ চাত্তুনি। শনিবার যুবভারতীতে বসে পুরনো ক্লাবের খেলা দেখবেন কেরলের বর্ষীয়ান কোচ। চামোরোর বাবা অবশ্য ছেলের মুখে শুনেই ম্যাচের ছবি আঁকবেন নিজের মনে। প্রতিটি ম্যাচের আগে এবং পরে চামোরো তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন। কেমন খেলেছেন তিনি, কী ভাবে করেছেন গোল, তার বিবরণ দেন বাবাকে। ফাইনালের আগেও এই নিয়মের কোনও ব্যতিক্রম হবে না। চামোরো বলছিলেন, “আমার সঙ্গে বাবার সব সময়ই কথা হয়। সেমিফাইনাল ম্যাচের পরে বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। ফাইনালের আগেও বাবার সঙ্গে কথা হবে। ওঁর কাছ থেকে টিপস চাইব।”
ডুরান্ড-ফাইনাল জিতে মাঠ ছাড়ুক ছেলে, স্পেনে বসে এই প্রার্থনাই করবেন বাবা। স্পেনে বসে থাকলেও তাঁর যে মন পড়ে থাকবে কলকাতাতেই, তা বলাই বাহুল্য।