ক্ষুব্ধ: শুটিংকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন হিনা। ফাইল চিত্র
ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার ২০২২ বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমস বয়কট নিয়ে শুরু হল বিতর্ক। আইওসি-র বয়কটের প্রস্তাবকে সমর্থন জানালেন মহিলা শুটার হিনা সিধু। টুইটারে পাল্টা তার বিরোধিতা করে অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রা জানিয়ে দিলেন, তিনি এই প্রস্তাবের সমর্থক নন।
রবিবার এক বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিনা বলেছেন, ‘‘বয়কট শব্দটা খুবই ভারী। এবং আমরা কোনও অবস্থাতেই চাই না, একটা ইভেন্ট না থাকার কারণে জটিলতা তৈরি করে বাকিদের অস্বস্তির মধ্যে ফেলতে।’’ সেখানেই না থেমে হিনা আরও যোগ করেছেন, ‘‘কিন্তু এই মুহূর্তে শুটিং ইভেন্টকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রতিবাদ না করলে ভবিষ্যতে অন্য ইভেন্টের ক্ষেত্রেও একই পরিণতি হতে পারে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গত বছর আমরা জানতে পারি, কমনওয়েলথ গেমসে শুটিং ইভেন্ট আর থাকবে না। সেই সময়েই হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন আইওএ প্রেসিডেন্ট। কমনওয়েলথ গেমসে শুটিংকে ফিরিয়ে আনতে তিনি চেষ্টা করেও সফল হননি।’’
যদিও বয়কটের ভাবনাকে মোটেও সমর্থন করতে পারেননি বিন্দ্রা। রবিবার তিনি টুইট করেন, ‘‘অনেকেই এ বিষয়ে আমার মতামত জানতে চাইছেন। আমার মনে হয়েছে বয়কটের মাধ্যমে নিজস্ব প্রভাব প্রমাণ করা যায় না। এতে আপনি যেমন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবেন, তেমনই এই সিদ্ধান্তের শাস্তি ভোগ করতে হবে অন্য অ্যাথলিটদের।’’ সেখানেই না থেমে বিন্দ্রা টুইটারে লেখেন, ‘‘অন্য সদস্য দেশ এবং তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আইওএ যদি শুটিংকে ফেরাতে ইতিবাচক প্রচারের পথে হাঁটে, তাতে ভবিষ্যতে সকলে উপকৃত হবে।’’
হিনার দাবি, সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরেই বাত্রা অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েন। তার পরে বাধ্য হয়ে আইওএ-র তরফে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয় এবং অনুরোধ করা হয়, এই বিষয়ে তাদের পাশে সরকারকে দাঁড়াতে। সিধুর মন্তব্য, ‘‘প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু আবেগ রয়েছে। আমাদের কাছে এর চেয়ে বিস্ময়কর খবর আর কিছু হতে পারে না।’’
প্রসঙ্গত ২০১৮ গোল্ড কোস্ট কমনওয়েলথ গেমস শুটিং থেকে দু’টি পদক জিতেছিলেন হিনা। ২৯ বছরের ভারতীয় মহিলা শুটারের ধারণা, এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় শুটারদের র্যাঙ্কিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারতই একমাত্র দেশ, যারা শুটিংয়ে সব চেয়ে বড় দল কমনওয়েলথ গেমসে পাঠিয়ে থাকে। এ বার যদি সেই ইভেন্ট বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে নীচের নেমে নেমে যাবে ভারতীয় শুটারদের নাম। সেটা কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই এই প্রতিবাদ।’’
বরং ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসে মহিলাদের ক্রিকেটকে যুক্ত করা নিয়ে হিনার বক্তব্য, ‘‘মহিলাদের ক্রিকেট নিয়ে জনপ্রিয়তা তৈরি হওয়ায় তাকে কমনওয়েলথ গেমসে ফিরিয়ে আনা হল। তা হলে কেন ছেলেদের ক্রিকেট ফেরানো হবে না? আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, ইংল্যান্ড সেই সমস্ত ইভেন্টকে যুক্ত করতে আগ্রহী, যা সে দেশের লোকের টেলিভিশনে দেখতে পছন্দ করেন। ওরা সেই সমস্ত খেলায় অর্থ বিনিয়োগ করতে রাজি নয়, যা থেকে মুনাফা হবে না। এটা খেলাধুলোয় চলতে পারে না।’’
এ দিকে, সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে রবিবার ই-মেল মারফত সিজিএফ-এর মিডিয়া ম্যানেজার টম ডেগুন জানিয়েছেন, তাঁরা চান ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসে ভারত অবশ্যই অংশগ্রহণ করুক। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বিষয় নিয়ে আমরা ভারতীয় অলিম্পিক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাই। আমাদের বিশ্বাস, সেই আলোচনা থেকে সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।’’