নোভাক জোকোভিচ। —ফাইল চিত্র।
রজার ফেডেরার অবসর নিয়েছেন। চোট আঘাতে জর্জরিত রাফায়েল নাদালও অবসর নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। নোভাক জোকোভিচও একই পথে হাঁটবেন? ৩৬ বছরের টেনিস খেলোয়াড়ের বাবার কথায় শুরু হয়েছে জল্পনা। জোকোভিচের বাবার মতে, নতুনদের জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত এ বার।
সার্জান জোকোভিচ মনে করছেন, ২০২৪ সালের শেষে টেনিসকে বিদায় জানাতে পারেন তাঁর বিখ্যাত ছেলে। আগামী বছর মে মাসে ৩৭ বছর পূর্ণ করবেন ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের মালিক। গত উইম্বলডনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে হারলেও সর্বোচ্চ পর্যায়ের টেনিসে এখনও সাবলীল জোকোভিচ। চলতি বছরে চেনা ফর্মেই দেখা যাচ্ছে জোকোভিচকে। তিনি নিজে অবসর নিয়ে কোনও কথা বলেননি। বরং আরও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কথা বলেছেন। যদিও জোকোভিচের বাবা মনে করছেন, তিনি এখন টেনিসজীবনের শেষ পর্যায় রয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে সার্জান বলেছেন, ‘‘আমার মতে সাত-আট বছর আগেই টেনিসের সব কিছু অর্জন করা হয়ে গিয়েছে নোভাকের। পরেরগুলো অতিরিক্ত পাওনা। নোভাকের খেলা এখনও শেষ হয়নি। তবে নিশ্চিত ভাবেই ও ধীরে ধীরে টেনিসজীবনের শেষ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাবা হিসাবে আমার মনে হয়, আর এক-দেড় বছর খেলবে। আমার মতে, আগেই প্রতি দিনের এই কঠিন পরিশ্রম থামানো উচিত ছিল নোভাকের। টেনিস শারিরিক এবং মানসিক ভাবে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এই খেলাটা অনেক কিছু দাবি করে। ৩০ বছর ধরে ওর সঙ্গে ঘুরছি আমি। কখনও মাটিতে থেকে পা সরাতে দিইনি ওকে। কিন্তু জীবনের বাকি কাজগুলো করার আর বেশি সময় পাবে না।’’ কেন এমন মনে করছেন আপনি? সার্জান বলেছেন, ‘‘টেনিস ওর জীবনের এক মাত্র পর্যায় হতে পারে না। এখন নতুন খেলোয়াড়দের মঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার সময়।’’
উইম্বলডন ফাইনালে ২০ বছরের আলকারাজের কাছে ছেলের হারেই কি অশনি সঙ্কেত দেখছেন? জোকোভিচের বাবা বলেছেন, ‘‘দেখুন টেনিস আমার ছেলের জীবনের একটা অংশ। সম্পূর্ণ জীবন হতে পারে না। আমার মনে হয় টেনিস ছাড়ার পর যে কাজ করবে, তার জন্যও নোভাক সমাদৃত হবে। অবসর নেওয়ার পরেও অনেক কাজ করার আছে। আশা করছি আগামী বছরের পর সেগুলো শুরু করবে।’’
সার্জান ছেলেকে ২০২৪ সালের টেনিস কোর্টে আর দেখতে চান না। যদিও সার্ব তারকার মা ডিয়ানা কোনও সিদ্ধান্ত ছেলের উপর চাপিয়ে দিতে চান না। তিনি বলেছেন, ‘‘মনে হয় আরও এক বা দু’বছর খেলবে নোভাক। কবে শেষ করবে, সেই সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে। চাইলে আরও খেলতে পারে। আবার অবসরও নিতে পারে। সব কিছুই নির্ভর করবে ওর উপর। আমার মতে, এখনই অবসর নিতে পারে নোভাক। সব কিছুই তো জেতা হয়ে গিয়েছে।’’
২০২৪ সালে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে কোর্টে ফেরার কথা বলেছেন নাদাল। টেনিসপ্রেমীরা চান তত দিন কোর্টে থাকুন জোকোভিচও। ফেডেরারের অবসরের পর তো তাঁরাই আছেন। বেঁচে আছে টেনিসের মহাকাব্যিক লড়াই দেখার আশাও। জোকোভিচ-নাদাল আরও কয়েক বার কোর্টে মুখোমুখি হলে ক্ষতি কী?