হাবাসের সুখের দিনেও ‘চোখের বালি’ ফিকরু

টিমের অন্দরে তাঁকে নিয়ে প্রবল অসন্তোষের আঁচ আগেই পাওয়া যাচ্ছিল। এ বার সেটা বিস্ফোরণের আকার নিল। মঙ্গলবার তার প্রভাব এতটাই তীব্র যে, আটলেটিকো কোচ আন্তোনিও হাবাস টানা চার ম্যাচ অপেক্ষার পর জয়ের সরণিতে উঠেও নিজের বিরক্তি চেপে রাখতে পারলেন না। আইএসএলের শুরুতে কলকাতার আটলেটিকোর ‘চোখের মণি’ যে এখন ‘চোখের বালি’ হয়ে উঠেছেন! সেই ফিকরু তেফেরার নাম না করে ঘুরিয়ে হাবাসের মন্তব্য, “আমার টিমে আরও এক জন স্ট্রাইকার দরকার।

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share:

মাঠে হতাশ ফিকরু।

টিমের অন্দরে তাঁকে নিয়ে প্রবল অসন্তোষের আঁচ আগেই পাওয়া যাচ্ছিল। এ বার সেটা বিস্ফোরণের আকার নিল। মঙ্গলবার তার প্রভাব এতটাই তীব্র যে, আটলেটিকো কোচ আন্তোনিও হাবাস টানা চার ম্যাচ অপেক্ষার পর জয়ের সরণিতে উঠেও নিজের বিরক্তি চেপে রাখতে পারলেন না।

Advertisement

আইএসএলের শুরুতে কলকাতার আটলেটিকোর ‘চোখের মণি’ যে এখন ‘চোখের বালি’ হয়ে উঠেছেন! সেই ফিকরু তেফেরার নাম না করে ঘুরিয়ে হাবাসের মন্তব্য, “আমার টিমে আরও এক জন স্ট্রাইকার দরকার। দুর্ভাগ্য, এখন আর সেটা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা আজ ভাল খেলতে পারিনি। তাও জিতেছি। কিন্তু এটা বারবার হবে না।” একটু থেমে আরও যোগ করেন, “অ্যাটাকিং থার্ডে লোক বাড়াতে না পারলে, পরের ম্যাচগুলোয় সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আমার সমস্যা হল, রোগটা জানলেও তার ওষুধ হাতে নেই।”

জন আব্রাহামের নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে হারিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে যখন ঝড় তুলছেন গার্সিয়াদের কোচ, তখন আটলেটিকোর গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসের ঢেউ। যেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তো বটেই, এখনও পর্যন্ত একটাও হোম ম্যাচ মিস না করা ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ও দারুণ উচ্ছ্বসিত। “ক্রিকেট ম্যাচ কখনও কখনও বোরিং লাগলেও, ফুটবলে সে রকম অনুভুতি হয় না। নব্বই মিনিটের ম্যাচে একটা মিনিটও বসে থাকার উপায় নেই,” মেয়ে সানাকে পাশে নিয়ে বলছিলেন তিনি।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়। ডোনা আরও জানালেন, শুরুতে মেয়ে সানার জন্যই নাকি তাঁর স্টেডিয়ামে আসা। কিন্তু ধীরে ধীরে মাঠের উত্তেজনা সৌরভ-পত্নীকে এতটাই প্রভাবিত করে ফেলেছে যে, এখন ম্যাচ থাকলে আর বাড়িতে বসে থাকতে পারেন না। তাঁর কথায়, “ফুটবল ম্যাচ দেখতে আগে কখনও আসিনি। হয়তো আসতামও না। কিন্তু আইএসএল আমাকে টেনে নিয়ে এসেছে। সানার কাল ভূগোল পরীক্ষা। কিন্তু ওভারটাইম পড়ে মাঠে এসেছে।”


গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস ডোনা ও সানার।

বিপক্ষ শিবির স্বভাবতই নিস্তব্ধ। নর্থইস্টের অভিনেতা-মালিক জন আব্রাহাম ম্যাচ শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগেই স্টেডিয়াম ছেড়ে কার্যত পালিয়ে গেলেন। যদিও তার প্রস্তুতি আরও পাঁচ মিনিট আগে থেকেই নেওয়া শুরু করেছিলেন। যখন বুঝলেন গোল শোধের আর কোনও সম্ভাবনা নেই তাঁর দলের। হসপিটালিটি বক্সের সিঁড়ি দিয়ে এত জোরে দৌড়লেন, দেখে মনে হল ‘ধুম’ সিনেমার সেই বাইকটা এ দিন সঙ্গে থাকলে উড়ে চলে যেতেন!

উল্টো শিবিরে সৌরভ তখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত। ম্যাচের শেষ বাঁশি পড়তেই টিমের অন্যতম মালিক উত্‌সব পারেখকে নিয়ে চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠলেন। তার পর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাঁর মন্তব্য, “এক গোল, দু’গোলে কিছু যায়-আসে না। আমরা তিন পয়েন্ট পেয়েছি, এটাই আসল। এই জয়টা টিমের জন্য খুব দরকারি ছিল। পরের চারটেই অ্যাওয়ে ম্যাচ। তার জন্য ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস নিশ্চয়ই বেড়ে যাবে।” তবে সৌরভ মুখে কিছু না বললেও উচ্ছ্বাসের মধ্যেও ফিকরুর নিম্মমুখী ফর্ম যে চিন্তায় রেখেছে তাঁকেও, সেটা তাঁর হাবভাবে পরিষ্কার।

অবশ্য সৌরভের না বলা কথাটা তো হাবাস-ই এ দিন বলে দিয়েছেন!

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস ও নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement