দীপা কর্মকার। —ফাইল চিত্র।
অবসর নিলেন দীপা কর্মকার। সোমবার সমাজমাধ্যমে নিজের অবসরের কথা জানিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা জিমন্যাস্ট। জানিয়েছেন, বছরের শুরু থেকেই অবসরের কথা ভাবছিলেন। ২০১৬-র রিয়ো অলিম্পিক্সে জিমন্যাস্টিক্সে মহিলাদের ভল্ট ইভেন্টে অল্পের জন্য পদক জিততে পারেননি। তাঁর প্রোদুনোভা ভল্ট সে সময় নজর কেড়েছিল। ৩১ বছরের জিমন্যাস্ট প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।
দীপা তাঁর বার্তায় লিখেছেন, ‘‘অনেক সিদ্ধান্ত করে জিমন্যাস্টিক্স থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক দমই সহজ ছিল না সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে এটাই সঠিক সময়। জিমন্যাস্টিক্স আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। কখনও সাফল্য পেয়েছি, কখনও ব্যর্থ হয়েছি।’’
অবসরের সময় দীপার মনে পড়েছে জিমন্যাস্টিক্স শুরু করার সময়ের একটি ঘটনা। তিনি লিখেছেন, ‘‘পাঁচ বছর বয়সে শুরু করার সময় এক জন বলেছিলেন, আমি কখনও জিমন্যাস্ট হতে পারব না। কারণ আমার পায়ের পাতা সমান। যে টুকু সাফল্য পেয়েছি, তার জন্য আমি গর্বিত। বিশ্ব মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা, পদক জেতা এবং ২০১৬ সালের রিয়ো অলিম্পিক্সে প্রোদুনোভা ভল্ট মারতে পারা আমার জিমন্যাস্টজীবনের সব চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা। আমার সেই দীপাকে এখন দেখে গর্ব হয়, যে সাহসের সঙ্গে স্বপ্ন দেখেছিল।’’
দীপা লিখেছেন, ‘‘তাসখন্ডে আয়োজিত এশিয়ান জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ পদক জিতেছি। কখনও মনে হয়েছিল, চেষ্টা চালিয়ে গেলে আরও কিছুটা এগোতে পারব। কিন্তু শরীর আর সঙ্গ দিচ্ছিল না। মাঝে মাঝেই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, এ বার আমার বিশ্রাম নেওয়ার সময়। যদিও আমার মন এখনও মানতে চাইছে না।’’
অবসরের কথা জানানোর সময় দীপা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাঁর কোচদেরও। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী এবং সোমা ম্যামকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ওনারা আমাকে গত ২৫ বছর ধরে সাহায্য করেছেন। তাঁরাই আমার সব চেয়ে বড় শক্তি। সব সময় পাশে থাকার জন্য ত্রিপুরা সরকার, জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন, সাইকে ধন্যবাদ। অবশ্যই আমার পরিবারের কথা বলতে হবে। ভাল সময়, খারাপ সময়, সব সময় পরিবারের সকলে পাশে পেয়েছি। ওদেরও ধন্যবাদ।’’
দীপা জানিয়েছেন, খেলা থেকে অবসর নিলেও জিমন্যাস্টিক্সের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ থাকবে। নিজের প্রিয় খেলাকে কিছু ফিরিয়ে দিতে চান। জানিয়েছেন, মেন্টর বা কোচ হিসাবে আগামী দিনে দেখা যাবে তাঁকে। তিনি সাহায্য করতে চান আগামী দিনের দীপাদের।