নরেশের (বাঁ দিকে) সঙ্গে জয়দীপ। মাঝে আখতার আলি। ফাইল ছবি
বুধবার দুপুরে প্রয়াত হয়েছেন নরেশ কুমার। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর ৯৩ বছর বয়সে প্রয়াত হন। ভারতের প্রাক্তন ডেভিস কাপার এবং অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের প্রয়াণে শোকগ্রস্ত বাংলা তথা দেশের ক্রীড়ামহল। দুঃখিত ভারতের আর এক বিখ্যাত খেলোয়াড় জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও।
নরেশের সঙ্গে অনেক স্মৃতিই রয়েছে জয়দীপের। পুরনো সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে জয়দীপ বললেন, “১৯৬০ সালে নরেশের অধিনায়কত্বেই আমার ডেভিস কাপে অভিষেক হয়। তার পর থেকে আমার মেন্টর হিসেবেই ছিলেন তিনি। ওঁর সঙ্গে অজস্র স্মরণীয় মুহূর্ত রয়েছে। তবে সেই বছরের একটা ঘটনাই সবার আগে আমার মনে পড়ছে। পাকিস্তানে একটা প্রতিযোগিতায় খেলতে গিয়েছি। তখন ভারতের ডেভিস কাপের ম্যাচ পড়েছে তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ককে। প্রেমজিৎ লাল সে বার নির্বাসিত ছিল। রমানাথন কৃষ্ণণের চিকেন পক্স ধরা পড়ে। ওর ঘরে কেউ ঢোকার সাহস পাচ্ছিল না।”
জয়দীপের সংযোজন, “তখন আমার ডাক পড়ে। আমি বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ থেকে ব্যাঙ্ককে পৌঁছে শুক্রবারই খেলতে নেমে পড়ি। কোনও অনুশীলন, কোনও ধরনের শারীরিক বা মানসিক প্রস্তুতি ছিল না। শুধু মাত্র নরেশ কুমার ছিল বলেই নামার সাহস পেয়েছিলাম। আমরা দু’জন ছাড়া আর কেউ ছিল না। মানুষ হিসেবে অত্যন্ত ভাল ছিলেন। দানধ্যান করতেন। যুক্ত ছিলেন মাদার টেরিজার সংস্থার সঙ্গেও। ডাবলসে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। শক্তপোক্ত চেহারা ছিল। ওঁর মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ খেলোয়াড় খুব কমই পাওয়া গিয়েছে।”
পরে সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নরেশকে নিজের ‘গুরু’ বলে সম্বোধন করেছেন জয়দীপ। বলেছেন, “আসল শিক্ষকরা বই থেকে নয়, মন থেকে শিক্ষা দেন। আমার জীবনে উনি তেমনই এক উজ্জ্বল আলোর রেখা। যখন আমরা খেলা শুরু করি ১২-১৩ বছর বয়সে, তত দিনে উনি প্রতিষ্ঠিত। ছোটবেলায় নরেশকে আদর্শ রেখেই খেলা শিখেছি। টেনিস খেলা ছাড়া, টেনিস নিয়ে লিখতে এবং দারুণ ধারাভাষ্য দিতে পারতেন।”