কাতার-ম্যাচের নায়ক গুরপ্রীত। — ফাইল চিত্র।
একসময়ে ইস্টবেঙ্গলে সন্দীপ নন্দীর সতীর্থ ছিলেন ভারতের তারকা গোলকিপার গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। সন্দীপ এখন ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের গোলকিপার কোচ। পাঁচ বারের আইলিগ জয়ী গোলকিপার সন্দীপ বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই গুরপ্রীতকে ধৈর্যের পরীক্ষায় বসতে হবে।’’
কাতারের বিরুদ্ধে ভারতের গোলমুখে আছড়ে পড়েছিল কাতার-ঝড়। গুরপ্রীত একা কুম্ভ হয়ে তা রুখে দেন। পঞ্জাবতনয়ের জন্যই কাতারের ঘরের মাঠে গিয়ে ‘সিংহ শিকার’ করে ভারত। এশিয়াসেরা কাতার। তাদের মাঠে খেলতে গিয়ে অপরাজিত থাকা তো সিংহশিকারের মতোই ব্যাপার। কাতার-ম্যাচ এখন অতীত।
চলতি মাসের ১৫ তারিখ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বে বাংলাদেশের মুখোমুখি ইগর স্তিমাচের ভারত। ইতিমধ্যেই শহরে পৌঁছে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের বল গড়ানোর আগে অনুজ গোলকিপারের উদ্দেশে সন্দীপ বলছেন, ‘‘কাতার শক্তিশালী দল। ফিফা র্যাঙ্কিয়ে অনেক এগিয়ে। এ রকম একটা দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামলে সব সময়ে সতর্ক থাকতে হয়। প্রতি মুহূর্তে ওরা আক্রমণ শানাবে এটা জেনেই মাঠে নামতে হয় গোলকিপারকে। গুরপ্রীতও সেটাই ধরে নিয়ে সে দিন খেলতে নেমেছিল। কিন্তু, বাংলাদেশ তো কাতারের মতো মুহুর্মুহু আক্রমণ তুলে আনবে না। ফলে গুরপ্রীতের কাছে অপেক্ষাকৃত কম বল আসবে। সেই কারণেই বলছি, এই ধরনের ম্যাচে এক জন গোলকিপারকে অনেক বেশি সতর্ক হয়ে খেলতে নামতে হয়। অনেক বেশি ধৈর্য, মনোসংযোগের পরীক্ষা দিতে হয়।’’
আরও পড়ুন: ‘ভারত এগিয়ে তো মোটে ১ পয়েন্টে, সুনীলদের জোর টক্কর দেবে আমার ছেলেরা’
কাতারের বিরুদ্ধে খেলে কলকাতায় এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার হোটেলেই সাঁতার, হাল্কা অনুশীলন করেছেন জামাল ভুঁইয়ারা। শনিবার সকাল থেকেই ইংরেজ কোচ জেমি ডে ছেলেদের নিয়ে নেমে পড়বেন অনুশীলনে। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের দিন পদ্মাপারের প্রাক্তন ফুটবলার, ক্লাবকর্তা, সমর্থকরা উপস্থিত থাকবেন যুবভারতীতে।
সন্দীপ নন্দী।
অন্যদিকে স্তিমাচ গুয়াহাটিতে সুনীল-গুরপ্রীতদের নিয়ে অনুশীলনে ব্যস্ত। নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে ভারতের। সেই ম্যাচে চোট পান সন্দেশ ঝিঙ্গান। বাংলাদেশ ম্যাচে তিনি নামতে পারবেন না। সন্দীপ বলছেন, ‘‘সন্দেশের না থাকাটা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। কাতারের বিরুদ্ধে সন্দেশ বেশ ভাল খেলেছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রক্ষণে নতুন এক জনকে নামাতে হবে স্তিমাচকে। নতুন ডিফেন্স নিয়ে খেলতে হবে। তবে নতুন ডিফেন্স নিয়ে প্রথম ম্যাচটাতেই বাংলাদেশকে সামনে পাচ্ছে গুরপ্রীতরা। এটা একটা ভাল দিক। ওমান বা কাতারের বিরুদ্ধে যদি অপেক্ষাকৃত নতুন ডিফেন্স নিয়ে নামতে হতো, তা হলে কিন্তু ভারতই সমস্যায় পড়ত।’’
সন্দীপ অবশ্য খাটো চোখে বাংলাদেশকে দেখতে নিষেধ করছেন। বলছেন, ‘‘কাতার কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল। সেই ম্যাচ ড্র করে ফিরেছে ভারত। বাংলাদেশকে যেন হাল্কা ভাবে না নেয়। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সব দলই সমান। প্রতিটি দলকেই শ্রদ্ধা করা উচিত। মাঠে নেমে এক মুহূর্তের জন্যও যেন ফোকাস না নড়ে।’’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এক সময়ের সতীর্থ গুরপ্রীতের জন্য অভিজ্ঞতার ভান্ডার উজাড় করে দিলেন বহু যুদ্ধের সৈনিক সন্দীপ।