সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বুধবার পথে নামছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন, বুধবার জোড়া কর্মসূচিতে থাকতে পারেন মহারাজ।
সোমবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তাঁর ছবিটি মুছে দেন সৌরভ। মনে করা হচ্ছে, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এমনটা করেছেন তিনি। তার পরেই জানা যায়, বুধবার পথে নামতে পারেন সৌরভ। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে ডোনা জানালেন, বুধবার একটি নয়, দু’টি কর্মসূচিতে থাকতে পারেন তিনি।
বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টে থেকে ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশে জমায়েত করবেন প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়েরা। প্রাক্তন অ্যাথলিট সোমা বিশ্বাসেরা ময়দানে ক্রীড়াবিদদের জড়ো হওয়ার ডাক দিয়েছেন। সেখানে প্রথমে অবস্থান বিক্ষোভ হবে। পরে মিছিলও হতে পারে। সেই সমাবেশে থাকবেন সৌরভ। আনন্দবাজার অনলাইনকে ডোনা বললেন, “আমি যতটুকু জানি, তাতে দাদার ময়দানের কর্মসূচিতে থাকার কথা। ওখান থেকে সময়ে ফিরে এলে আমাদের পদযাত্রাতেও যোগ দিতে পারে। সেটা না হলেও পদযাত্রার শেষে আমরা একটা মোমবাতি জ্বালানোর কর্মসূচি রেখেছি। দেরি করে আসতে পারলেও দাদা সেটায় যোগ দেবে।”
বুধবার সন্ধ্যায় ডোনার নাচের স্কুল দীক্ষা মঞ্জরী থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল করা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হবে মিছিল। ডোনা জানিয়েছেন, স্কুল, কলেজের ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সন্ধ্যায় মিছিলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে ছাত্রীদের বাবা-মায়েরাও থাকবেন। তাঁরা মোমবাতি নিয়ে মিছিল করবেন না। তবে সকলকে কালো পোশাক পরতে বলা হয়েছে। সেই মিছিলেও দেখা যেতে পারে সৌরভকে।
গত শনিবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সস্ত্রীক সৌরভ। সেখানে ডোনা জানিয়েছিলেন, ১৪ অগস্ট রাতে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু মেয়ে সানা অসুস্থ থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। ডোনা বলেছিলেন, ‘‘সে দিন আমরা ঠিক করেছিলাম পথে নামব। কিন্তু সানার হঠাৎ ডিহাইড্রেশন হয়। বমি করতে শুরু করে। তাই আমাদের আর নামা হয়নি।’’ ডোনা জানিয়েছেন, সানা এখন সুস্থ। তাই বেহালার মিছিলে হাঁটবেন তিনিও।
গত ৯ অগস্ট, শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতালের মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনাকে ‘একটি নির্দিষ্ট ঘটনা’ বলে উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সৌরভ। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতকে সাধারণত একটি নিরাপদ দেশ হিসাবেই গোটা বিশ্ব চেনে। বাংলাও নিরাপদ। সেখানে এ ধরনের ঘটনা হওয়া উচিত নয়। তাঁর মতে, কোনও একটি নির্দিষ্ট ঘটনা থেকে সামগ্রিক চিত্র বিচার করা উচিত নয়। গত শনিবার যদিও সৌরভ বলেছিলেন, “এই ঘটনা ভয়ঙ্কর। দোষীদের এমন শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা কেউ ঘটাতে না পারে। সিবিআই তদন্ত করছে। আশা করব দোষী চিহ্নিত হবে।” তার পরেও সমালোচনা কমেনি। এ বার পথে নামছেন তিনি।
অবশ্য সৌরভ গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশে জমায়েতে আসবেন কি না সে বিষয়ে কিছু জানেন না প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ সোমা। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “আমাদের তরফে কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কারওর মনে হলে যোগ দিতে পারেন। কেউ আসবেন কি না সেটা আগে থেকে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।”