ক্রিকেটে পথ চলা শুরু করেছিলেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান এবং উইকেটকিপার হিসেবে। পরে পাল্টে যায় লক্ষ্য। তিনি হয়ে উঠেছিলেন ডানহাতি সিম বোলার এবং লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যান। তার পরেও ক্রিকেটজীবন সংক্ষিপ্তই রয়ে গিয়েছে ডোডা গণেশের। অবসরের পরে তিনি সরে গিয়েছেন রাজনীতি ও অভিনয়ে।
প্রাক্তন ক্রিকেটার ডোডা গণেশের পুরো নাম ডোড্ডানরসিয়াহ গণেশ। তাঁর জন্ম ১৯৭৩ সালের ৩০ জুন, মহীশূরে। শৈশবে তাঁর আইডল ছিলেন কেরলের প্রাক্তন উইকেটকিপার কে এন পদ্মনাভন এবং ৮৩-র বিশ্বজয়ী ভারকীয় ক্রিকেট দলের উইকেটকিপার সৈয়দ কিরমানি।
গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের চোখে পড়েন ডোডা গণেশ। তাঁর পরামর্শেই কিপিং থেকে বোলিংয়ে মনোনিবেশ করেন গণেশ। বিশ্বনাথের উদ্যোগে প্রথম ক্লাবে খেলার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু সেখানে ম্যাচ খেলার সুযোগ বিশেষ না পাওয়ায় তিনি ক্লাব পরিবর্তন করেন। তবে বোলিং-এর কক্ষপথ থেকে আর সরে আসেননি।
বাড়িতে আর্থিক সচ্ছলতা ছিল না। প্রতিকূলতার মধ্যেও ক্রিকেট অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছিলেন গণেশ। কিন্তু সে সময় কর্নাটক ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ। শ্রীনাথ-কুম্বলে-সুনীল যোশির দাপটে কিছুটা পিছনের সারিতেই ছিলেন তিনি।
১৯৯৪-৯৫ মরসুমে তাঁর অভিষেক হয় কর্নাটক দলের হয়ে। কিন্তু তারপরেও দলে নিয়মিত হতে সময় লেগেছে। যে টুকু সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগিয়েছেন গণেশ। সংসারের অনটন দূর করতে ভরসা ছিল সতীর্থ এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্য। ১৯৯৬-৯৭ মরসুমে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে ১১টি উইকেট পান। এই পারফরম্যান্সই তাঁকে জাতীয় পরিচিতি এনে দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য নির্বাচিত হন গণেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে কেপটাউনের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ডোডা গণেশের। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে গণেশ জীবনের প্রথম টেস্ট উইকেট পান। তাঁর বলে এলবিডব্লিউ হন গ্যারি কার্স্টেন। সেই ম্যাচে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় ভারত। দ্বিতীয় টেস্টেও দলে জায়গা পান গণেশ। তবে অমীমাংসিত সেই টেস্টে মাত্র ন’ওভার বোলিং করেছিলেন তিনি।
নজরকাড়া পারফরম্যান্স না করলেও ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য নির্বাচিত হন ডোডা গণেশ। বার্বেডোজ টেস্টে চার উইকেট পান গণেশ। দু’ ইনিংসেই আউট করেন কার্ল হুপারকে। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২০ রান তাড়া করেত গিয়ে মাত্র ৮১ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। এর পর গায়ানা টেস্টেও খেলেছিলেন গণেশ।
এর পর আর টেস্ট দলে ডাক পাননি গণেশ। কেরিয়ারের চারটি টেস্টে তাঁর সংগ্রহ পাঁচটি উইকেট। ওয়ান ডে খেলেছেন মাত্র একটি। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। উইকেট পেয়েছিলেন একটি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডাক না পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেট অনেকদিন খেলেছেন তিনি। ১৯৯৪-৯৫ থেকে ২০০৫-০৬ অবধি দীর্ঘ সময়ে তিনি মোট ৩৬৫ টি উইকেট নিয়েছিলেন। সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়েছিল তাঁর ব্যাটিংও। ঘরোয়া ক্রিকেটে একমাত্র শতরান করেছিলেন বিদর্ভের বিরুদ্ধে।
ক্রিকেট থেকে অবসরের পরে ডোডা গণেশ রাজনীতিতে যোগ দেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার দল জনতা দল (সেকুলার)-এ যোগ দেন তিনি। ২০১৬ সালে প্রতিযোগী ছিলেন বিগ বস-এর কন্নড় সংস্করণে। বিগ বস-এর হাউজে ছিলেন দু’সপ্তাহ। জাতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তিনি। (ছবি: ফেসবুক)