Brij Bhushan Sharan Singh

‘চুরি করে অলিম্পিক্সে গিয়েছিলেন’, কংগ্রেসের প্রার্থী হতেই বিনেশকে তোপ নিগ্রহে অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের

হরিয়ানার জুলানা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়বেন বিনেশ ফোগাট। এই ঘোষণার পরের দিনই ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ অভিযোগ করলেন ভারতীয় কুস্তিগির চুরি করে অলিম্পিক্সে গিয়েছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৪৬
Share:

বিনেশ ফোগাট এবং ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। ছবি: পিটিআই।

বিনেশ ফোগাট কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ নেমে পড়লেন তাঁর বিরুদ্ধে। যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা ও ভারতীয় কুস্তি সংস্থার অপসারিত প্রধান ব্রিজভূষণ অভিযোগ করলেন, চুরি করে অলিম্পিক্সে গিয়েছিলেন বিনেশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ব্রিজভূষণ বলেন, “খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভারতের মুকুট হরিয়ানা। সেখানে গত আড়াই বছর ধরে বন্ধ কুস্তি। কোনও ট্রায়াল ছাড়াই বজরং (পুনিয়া) এশিয়ান গেমসে গিয়েছিলেন। এটা কি মিথ্যা? কুস্তি বিশেষজ্ঞদের কাছে আমার প্রশ্ন, বিনেশ ফোগাটকে আমার প্রশ্ন, একই দিনে কেউ দু’টি ভিন্ন বিভাগে ট্রায়াল দিতে পারে? ওজন নেওয়া হয়ে যাওয়ার পর পাঁচ ঘণ্টা ট্রায়াল বন্ধ রাখা যায়? আপনি কুস্তিতে জেতেননি, চুরি করে ওখানে (অলিম্পিক্সে) গিয়েছিলেন। ঈশ্বর আপনাকে তার শাস্তি দিয়েছে।”

ব্রিজভূষণ দেশের প্রাক্তন সাংসদ। বিজেপির এই নেতা ছিলেন ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন কুস্তিগিরদের একাংশ। অভিযোগকারীদের মধ্যে প্রধান মুখ ছিলেন বিনেশ, বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিক। তাঁরা যন্তর মন্তরের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। বিনেশদের অভিযোগের ভিত্তিতেই কুস্তি সংস্থা থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল ব্রিজভূষণকে। বিনেশ এবং বজরং কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। হরিয়ানার জুলানা থেকে ভোটে লড়বেন বিনেশ। সেই সিদ্ধান্তের পরের দিনই তাদের উপর তোপ দাগলেন ব্রিজভূষণ।

Advertisement

অলিম্পিক্সে ৫০ কেজি বিভাগে নেমেছিলেন বিনেশ। ফাইনালেও উঠেছিলেন। কিন্তু ফাইনালে নামার দিন তাঁর ওজন করা হয়। সেখানে দেখা যায় ওজন ১০০ গ্রাম বেশি। সেই কারণে বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁকে। কোনও পদকই পাননি তিনি। সর্বোচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন বিনেশ। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর বাদ যাওয়ার নেপথ্যে ছিল ব্রিজভূষণের হাত। অনেকে এক ধাপ এগিয়ে আঙুল তুলেছিলেন বিজেপির দিকে। সংসদে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী নেতারা।

ব্রিজভূষণের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে বিনেশদের আন্দোলন ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান বলেন, “আমি কোনও মেয়ের সম্মানহানি করিনি। মেয়েদের অসম্মান করার জন্য যদি কাউকে দায়ী করতে হয়, তা হলে সেটা বজরং এবং বিনেশকে করা উচিত। আর এই চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ভূপিন্দর হুডা (হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী)। আমাকে যদি বিজেপি বলে হরিয়ানায় গিয়ে ভোটের প্রচার করতে, আমি যেতে রাজি। কংগ্রেস ভুল করল। ওদের পস্তাতে হবে।”

ব্রিজভূষণের অভিযোগ, কংগ্রেস ষড়যন্ত্র করে তাঁর বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহের অভিযোগ এনেছে। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “দু’বছর আগে ১৮ জানুয়ারি এই সব কুস্তিগির একটা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। যে দিন এই সব শুরু হয়েছিল, সে দিনই বলেছিলাম যে এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। কংগ্রেস এটার সঙ্গে যুক্ত। পুরোটাই সাজানো। কোনও খেলোয়াড় এই কাজের সঙ্গে যুক্ত নন। দু’বছর পর সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল। পুরো নাটকটায় কংগ্রেস জড়িত।”

বিনেশ পদকহীন ভাবে অলিম্পিক্স থেকে ফেরার পর তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রাজনৈতিক নেতারাও। সংসদে যেমন বিরোধীরা বিজেপিকে দুষছিলেন, তেমনই বিনেশের উদাহরণ টেনে বিজেপিকে আক্রমণ করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আরজি কর-কাণ্ডে যখন বাংলার সরকারের দিকে আঙুল উঠছে, সেই সময় মমতা বিধানসভায় বলেছিলেন বিনেশের কথা। ভারতীয় কুস্তিগিরকে হেনস্থার জন্য বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছিলেন তিনিও।

বিনেশ এবং বজরং কংগ্রেসে যোগ দিলেও ব্যতিক্রমী সাক্ষী। অলিম্পিক্স পদকজয়ী সাক্ষী বলেন, “আমার কাছেও রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি রাজি হইনি। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিনেশ এবং বজরংয়ের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি বিশ্বাস করি কিছু কিছু জিনিস ত্যাগ করা উচিত। আমাদের লড়াই মেয়েদের জন্য। সেটার কোনও ক্ষতি যেন না হয়। আমার লড়াই চলবে। আমি লড়াইয়ের শেষ দেখতে চাই। কুস্তি সংস্থাকে পরিষ্কার এবং মেয়েদের নিগ্রহ বন্ধ না করা পর্যন্ত আমার লড়াই চলবে। এই লড়াইটা সৎ, এটা চলবে।” সাক্ষী এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চলবে। কোনও দলের হয়ে ভোটের প্রচারও করবেন না সাক্ষী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement