ধোঁয়াশা: দিমিত্রিয়সের খেলা নিয়ে ধন্দ। ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা সাউল ক্রেসপো সপ্তাহ দু’য়েকের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন।
প্রধান স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস চোটের কারণে মঙ্গলবার বিকেলে মাঠে এলেও অনুশীলন না করে ফিরে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে তাঁর খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে।
রক্ষণের ভরসা হেক্টর ইউসতে চোটের কারণে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি। মঙ্গলবার বিকেলেও তিনি রিহ্যাব করলেন ফিজ়িক্যাল ট্রেনারের কাছে। কোচ অস্কার ব্রুসো যখন ম্যাচ অনুশীলন করাচ্ছিলেন, হেক্টর বসেছিলেন মাঠের বাইরে। ওড়িশার বিরুদ্ধে তাঁর খেলা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তারকা ত্রয়ীর চোটের খবরে সমর্থকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও ব্যতিক্রম বাকি ফুটবলাররা। মঙ্গলবার সন্ধেয় যুবভারতী ছেড়ে বেরোনোর সময় মাধি তালালের গলায় হুঙ্কার, ‘‘ওড়িশা বিরুদ্ধে দিয়ামানতাকোস খেলতে না পারলে চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। ক্লেটন সিলভা তো আছে। ও-ই গোল করে জেতাবে আমাদের।’’
চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে ৪৯ মিনিটে দিয়ামানতাকোসের পরিবর্তে ক্লেটন-কে নামিয়েছিলেন অস্কার। গোল না পেলেও ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারের মরিয়া মানসিকতা, বিপক্ষের রক্ষণের প্রহরীদের উপরে চাপ সৃষ্টি করার প্রবণতায় উচ্ছ্বসিত ইস্টবেঙ্গল কোচ। সমর্থকরা যাঁরা ক্লেটন-কে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন, তাঁরাও এখন উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন। বলছেন, ‘‘ক্লেটনের খেলায় সেই পুরনো ঝলক দেখা আবার দেখা যাচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে দিয়ামানতাকোস শেষ পর্যন্ত খেলতে না পারলে ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারই ভরসা। ক্লেটন নিজেও ছটফট করছেন চলতি আইএসএলে প্রথম গোল করার জন্য। অনুশীলনের পরে বললেন, ‘‘দিয়ামানতাকোস না পারলে আমি খেলব। নিজেকে উজাড় করে দেব।’’
আহত সাউলের পরিবর্তে ৫৯ মিনিটে নেমে চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে অসাধারণ গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ এগিয়ে দিয়েছিলেন জিকসন। বলে দিলেন, ‘‘এ রকম গোল আমি আরও করব।’’অস্কার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বদলে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের মানসিকতা। কারণ, স্পেনীয় কোচের প্রধান লক্ষ্যই ছিল টানা ব্যর্থতায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। তাই সমস্যা যত গভীরই হোক না কেন অভিজ্ঞ তালাল, ক্লেটন, সৌভিক চক্রবর্তী, জিকসন সিংহ থেকে পি ভি বিষ্ণু, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তরুণ— ভেঙে পড়ছেন না। সর্বদা লড়াইয়ের জন্য তৈরি সকলে।
আইএসএলে হারের ডাবল হ্যাটট্রিকের পরে ইস্টবেঙ্গলের অতি বড় সমর্থকেরও পয়েন্ট টেবলের প্রথম ছয়ে থেকে নক-আউটে যোগ্যতা অর্জনের স্বপ্ন দেখার সাহস ছিল না। কিন্তু নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড ও চেন্নাইয়িনকে হারিয়ে দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মশালবাহিনী। ন’টি ম্যাচ থেকে সাত পয়েন্ট অর্জন করে মহমেডান স্পোর্টিং ও হায়দরাবাদ এফসি-কে টপকে একাদশতম স্থানে উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার রয় কৃষ্ণ-হীন ওড়িশা-কে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি প্রথম ছয়ে শেষ করার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল করতে
মরিয়া ইস্টবেঙ্গল।