সুনীল ছেত্রী। —ফাইল চিত্র
ভারতীয় ফুটবল দল মাঠে নামলেই সবার চোখ থাকে তাঁর দিকে। সমর্থকদের নিরাশ করেন না সুনীল ছেত্রী। গোল করেন। গোল করান। সাফ কাপেও সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে। ৩৮ বছর বয়সেও গোল করার খিদে কমেনি তাঁর। ফুটবলকে এতটাই ভালবাসেন যে এই খেলার জন্য বাবা-মাকে না জানিয়ে নিজের স্কুল পর্যন্ত বদলে ফেলেছিলেন ভারত অধিনায়ক।
সুনীলের বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীতে। তাই আর্মি পাবলিক স্কুলে পড়তেন সুনীল ছেত্রী। সেখানেই তাঁর ফুটবল জীবনের শুরু। স্কুলের ফুটবল দলে খেলতেন তিনি। সেখানে খেলতে খেলতে স্কুল বদলের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। একটি সাক্ষাৎকারে সুনীল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম কোনও বড় প্রতিযোগিতায় বেশি খেলার সুযোগ পেত না। হয় গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিত। বড় জোর কোয়ার্টার ফাইনালে যেত। অন্য স্কুলগুলো আমাদের চেয়েও অনেক ভাল খেলত। তাই বাবা-মাকে না জানিয়েই আমি চটজলদি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি এবং ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের জন্য স্কুলে আবেদন করে দিই।’’ মমতা মডার্ন স্কুলে ভর্তি হয়ে যান সুনীল।
ছেলের এই সিদ্ধান্ত সুনীলের বাবা-মা মানেননি। কিন্তু বাবা-মায়ের কাছে অনেক কিছু প্রমাণ করার ছিল সুনীলের। তিনি বলেন, ‘‘আমি যে একই সঙ্গে পড়াশোনা ও খেলা চালিয়ে যেতে পারি এবং একা একা জীবনযাপনও করতে পারি, এ সব কিছুই প্রমাণ করার ছিল। তাই দিল্লিতে থাকলেও বাড়িতে থাকতাম না। স্কুলের ফুটবলারদের সঙ্গে হস্টেলে থাকতাম। দু’বছর হস্টেলে ছিলাম। আমার এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি ছিলেন না আমার বাবা-মা।”
স্কুলে পড়ার সময় নিজের সব কাজে নিজেই করতেন সুনীল। তিনি বলেন, ‘‘ইউনিফর্ম তৈরি রাখা থেকে শুরু করে পড়াশোনার বই-খাতা জোগাড় সব আমি নিজে করতাম। খেলার পাশাপাশি পড়াশোনায় যখন মন দিতে শুরু করল, তখন বুঝতে পারি ব্যাপারটা এমন কিছু কঠিন নয়। তাই সেই সময়ের কথা ভেবে আমার কখনও আফসোস হয়নি।’’ দায়িত্ব নেওয়ার সেই চেষ্টা থেকেই নেতৃত্ব দেওয়ার একটি মানসিকতা গড়ে উঠেছিল সুনীলের। পরবর্তীতে তিনি সেটা কাজে লাগিয়েছেন ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময়।