সুনীলের মতে, প্রস্তুতি শিবিরে তাঁদের উচিত জুনিয়রদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, তাঁদের আরও সাহসী করে তোলা। ছবি: সংগৃহীত
আগেই বলে দিয়েছিলেন, এশিয়ান কাপই হয়তো ভারতের হয়ে তাঁর শেষ প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের কাজ মোটেই সহজ নয়। গ্রুপে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, সিরিয়া এবং উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী দেশ। সুনীল ছেত্রী মেনে নিলেন, গত বারের থেকে এ বার ভারতের লড়াই অনেকটাই কঠিন। তাঁর আশা, ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ, সাফ কাপ-সহ আগামী দিনে যে প্রতিযোগিতাগুলিতে ভারত খেলবে, তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবেন তাঁরা। পাশাপাশি, উদাহরণ হিসাবে নিজেদের সামনে মরক্কোকে রাখছেন তাঁরা।
শনিবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে সুনীল বলেন, “ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে লেবানন এবং কুয়েতের বিরুদ্ধে আমরা খেলব। সেখান থেকেই বুঝতে পারব এখন সিরিয়া কেমন খেলছে। উজবেকিস্তান বা লেবাননের খেলা সাম্প্রতিককালে দেখিনি। উজবেকরা একটু এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু বাকি দুই দলের সঙ্গে খেললে ওদের সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। তবে সিরিয়া খুবই ভাল দল। বব হাউটনের যুগে ওদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছি। উজবেকিস্তান তার থেকেও ভাল। আর অস্ট্রেলিয়া তো মহাদেশের সেরা।”
সুনীলের সংযোজন, “গত বারের থেকে এ বারের লড়াই অনেক কঠিন। গত বার বাহরিন, তাইল্যান্ডের মতো দেশ ছিল। তবে এশিয়ান কাপের মতো প্রতিযোগিতা কঠিন তো হবেই। গত বারও যাদের সঙ্গে খেলেছি তারাও কঠিন। ভাল কিছু মুহূর্ত পেয়েছি ওদের বিরুদ্ধে খেলে। তবে এখন আমরা নিজেদের আরও শক্তিশালী বানাতে তাই। শক্তিশালী বিপক্ষ হতে চাই। আধুনিক যুগে কোনও দলকে আন্ডারডগ বলা যায়। মরক্কোকে দেখুন। ওরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে, যদি আপনি শক্তিশালী হন তা হলে অনেক কিছুই করতে পারেন।”
এত শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে খেলার আগে কতটা কাজে লাগবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের মতো প্রতিযোগিতা? সুনীলের মতে, এশিয়ান কাপের মতো প্রতিযোগিতার প্রথম একাদশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো সাহায্য করবে। সুনীলের কথায়, “ধীরে ধীরে আমরা একটা নির্দিষ্ট প্রথম একাদশ বা প্রথম ১৪ জন ফুটবলার বেছে নেওয়ার দিকে এগিয়ে যাব। যদি আমার নয়, সেটা কোচের মাথাব্যথা। তিনি যে দিন বুঝবেন তবেই শক্তিশালী প্রথম একাদশ বেছে নেবেন। আপাতত সেরা ফুটবলারদের চিহ্নিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”
অনেক দিন ধরেই একটা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। সুনীলের অবসরের পর কে নেবেন ভারতীয় দলে গোল করার দায়িত্ব? প্রশ্ন শুনেই সামান্য হেসে সুনীল বলেছেন, “খুব কঠিন ব্যাপার। ক্লাবগুলোকে ভারতীয় ফুটবলারদের উপর আস্থা রাখতে হবে। অন্য দিকে, ফুটবলারদের চেষ্টা করতে হবে কী ভাবে বিদেশিদের ভিড়ে নিজের জায়গা পাকা করা যায়। বেঙ্গালুরুর গত মরসুম দেখুন। কিছু ম্যাচে আমি বসেছি। কিছু ম্যাচে রয় কৃষ্ণকে বসানো হয়েছে। কিন্তু শিবশক্তি নারায়ণন সব ম্যাচে খেলেছে। ও সেই জায়গাটা আদায় করে নিয়েছে। তাই ভারতীয়দের আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। শুনেছি নিচের ডিভিশনগুলোতে বিদেশিহীন লিগ আয়োজন করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। সেখান থেকেও আগামী দিনে অনেকে উঠে আসবে।”
সুনীলের মতে, দায়িত্ব নেওয়া উচিত অভিজ্ঞ ফুটবলারদেরও। প্রস্তুতি শিবিরে তাঁদের উচিত জুনিয়রদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, তাঁদের আরও সাহসী করে তোলা। মাঠে নেমে যাতে তরুণরা আত্মবিশ্বাস পান, সেটা নিশ্চিত করার কাজ অভিজ্ঞদেরও।