উৎসব: রিয়ালের প্রথম গোলের পরে জোসেলু। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
নাটকীয় জয়ে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ। বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বের লড়াইয়ের ফল ছিল ২-২। এই অবস্থায় ঘরের মাঠে নামার সুবিধে ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ৬৮ মিনিটে আলফোন্সো ডেভিসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। দুই জার্মান ক্লাবের ফাইনাল হচ্ছে, এটাই ধরে নিয়েছিলেন যখন
অনেকে, তখনই নাটকীয় ভাবে প্রত্যাবর্তন রিয়ালের। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে চার মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে রিয়ালকে ফাইনালে তোলেন জোসেলু। বায়ার্নের সমর্থকেরা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না, ছিটকে যেতে হল তাঁদের প্রিয় ক্লাবকে। বের্নাবাউ তখন উৎসবে ভাসছে।
ফাইনালে তাদের সামনে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। বুন্দেশলিগায় বরুসিয়া ডর্টমুন্ড মানেই হলুদের প্লাবন সিগন্যাল ইদুনা পার্কে। এই ছবি ফুটবলপ্রেমীদের কাছে অজানা নয়। ম্যাটস হুমেলস থেকে মার্কো রয়েসের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলাররা বলে থাকেন, মাঠে তাঁদের ভাল খেলতে উজ্জীবিত করে গ্যালারির সেই বিশেষ উৎসব।
হলুদ প্রাচীর আসলে কী? বড় বড় পতাকা এবং প্রিয় দলের হলুদ-কালো স্কার্ফ নিয়ে ডর্টমুন্ড সমর্থকেরা এমন ভাবে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে থাকেন, যা দেখে মনে হবে যেন এক বিশাল প্রাচীর তৈরি হয়েছে মাঠের চারপাশে। যা ভেঙে প্রতিপক্ষের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব। গর্ব করে ডর্টমুন্ড সমর্থকেরা বলে থাকেন, ‘‘ইয়েলো ওয়াল।’’ মঙ্গলবার প্যারিস সঁ জরমেঁর মাঠে তেমনই এক প্রাচীর তুলে ফেলেছিলেন হুমেলসরা, যাকে পরাস্ত করে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি লুইস এনরিকের ফুটবলাররা।
মঙ্গলবার ম্যাচের পরে তা নিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল গোলদাতা হুমেলসকে। তিনি বলেন, ‘‘ইদুনা পার্কের ভক্তদের কথা মাথায় রেখেই আমরা খেলতে নামি। ওঁরা যে ভাবে গ্যালারিতে উঁচু প্রাচীরের মতো একটা আকার নিয়ে দলকে সমর্থন করেন, সেই ছবিটা আমরা কখনও ভুলতে পারব না। মাঠে নামার আগে সকলকে বলেছিলাম, সেই হলুদ প্রাচীরের শক্তি কতটা, তা প্রমাণ করার সময় এসে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই রাত আমাদের কাছে স্মরণীয় হয় থাকবে। প্রায় এক দশক পরে আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে ডর্টমুন্ড। আমি মনে করি, এটা শুধু আমাদের কৃতিত্ব নয়। তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জার্মানি ক্লাব ফুটবলের গর্বও। বিশ্বের কাছে এই বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল যে, বুন্দেশলিগা শেষ হয়ে যায়নি। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে তাদের অবস্থান আগের মতোই শক্তপোক্ত রয়েছে। আরও ভাল লাগছে, গোল করে দলকে ফাইনালে তুলতে পেরেছি। তবে কাজ তো এখনও শেষ হয়নি। ওয়েম্বলি থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে এই বৃত্তটা সম্পূর্ণ হবে।’’
এই মরসুমের পরেই ফুটবল থেকে বিদায় নেবেন দলের আর এক অভিজ্ঞ সদস্য রয়েস। মঙ্গলবার ম্যাচের পরে তিনি বলেছেন, ‘‘সতীর্থরা আমাকে শেষবারের জন্য ডর্টমুন্ডের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। তার জন্য সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।’’