উদ্যাপন: ইস্টবেঙ্গলের ১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবসে কোচ কুয়াদ্রাত ও ফুটবলাররা। মঙ্গলবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ইস্টবেঙ্গলের ১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবসে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশ্বাস দিয়ে গেলেন কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। বেঙ্গালুরু এফসিকে একাধিক সাফল্য দেওয়া স্পেনীয় কোচ জানিয়ে দিলেন, অপ্রতিরোধ্য দল হয়ে উঠতে চায় ইস্টবেঙ্গল। একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সোনালি অতীতের কথা শুনিয়ে গেলেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়রা।
অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই ‘‘জয় ইস্টবেঙ্গল’’ ধ্বনিতে গমগম করছিল ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র। কোচ কুয়াদ্রাত তাঁর দল নিয়ে অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করতেই বদলে যায় পরিবেশ। উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে সমর্থকদের মধ্যে। দর্শকের আসন থেকে চিৎকার ধেয়ে আসে, ‘‘১২ অগস্টের ডার্বি থেকেই উজ্জ্বল দিন ফিরিয়ে আনুন।’’ কোচ কুয়াদ্রাতও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের হতাশ করেননি।
বক্তব্য রাখতে উঠে বলে দিলেন, ‘‘অপ্রতিরোধ্য হতে চাই। যে লড়াকু মনোভাব দলের মধ্যে রয়েছে তা যাতে বজায় থাকে, সেটাই লক্ষ্য। কলকাতায় পা দেওয়ার পরেই আমি এই সকলের আবেগ উপলব্ধি করেছি।’’ দরজায় কড়া নাড়ছে ডুরাণ্ড কাপ। চলছে প্রস্তুতি। পাশাপাশি দলকে ঘিরে যে প্রত্যাশার পারদ চড়ছে তা উপলব্ধি করছেন লাল-হলুদ কোচ। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সম্মানঞ্জাপন অনুষ্ঠানে প্রবেশ এবং প্রস্থান পর্যন্ত কার্লোস-ব্রিগেড সদস্য ও সমর্থকদের প্রত্যাশার ভেলায় ভেসে বেড়ালেন।
১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল থেকেই। ক্লাব তাঁবুতে প্রদীপ জ্বালিয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়। এমনকি কুমারটুলি পার্কেও পালিত হয় একটি ছোট অনুষ্ঠান। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সোনালি অতীত ও ভবিষ্যতের তারকাদের সম্মানীত করা হয়। ভারত গৌরব রতন টাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্মারক পৌঁছে দেওয়া হবে তাঁর কাছে। বছরের সেরা ফুটবলার ক্লেটন সিলভাও ভিসা সমস্যায় আটকে গিয়েছেন। তিনিও অনুপস্থিত ছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের উদীয়মান ফুটবলারের সম্মান তুলে দেওয়া হয় মণিপুরের নওরেম মহেশ সিংহের হাতে।
প্রাক্তন গোলকিপার তরুণ বসু ও প্রাক্তন ক্রিকেটার অরূপ ভট্টাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হয় জীবনকৃতি সম্মান। তরুণ বসুর হাতে পুরস্কার তুলে দেন তাঁরই উত্তরসূরি ভাস্কর। তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৫ সালে পাঁচ গোলের ম্যাচে মোহনবাগানের গোলে দাঁড়িয়ে চার গোল খেয়েছিলাম। সেই জায়গা থেকে ইস্টবেঙ্গল তুলে এনে আমাকে প্রতিষ্ঠা দেয়। তরুণদা নিজের জায়গা ছেড়ে আমাকে খেলার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।’’
রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনা করলেন। ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রাক্তন ফুটবলার প্রয়াত মোনেম মুন্নার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় আত্মজন স্মৃতি সম্মান। গোপাল বসু মেমোরিয়াল পুরস্কার পান বছরের সেরা ক্রিকেটার অঙ্কুর পাল। বাংলাদেশের আবাহনী ক্লাব থেকে এ দিন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ স্মারক।