চেষ্টা করেও গোলের মুখ খুলতে পারলেন না গ্রেগ স্টুয়ার্টরা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
আরও এক ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করল মোহনবাগান। পর পর দু’ম্যাচ ড্র করল তারা। জামশেদপুরের পর এ বার চেন্নাইয়িনও আটকে দিল সবুজ-মেরুনকে। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল বাগানকে। আক্রমণের পর আক্রমণ করেও গোল এল না। তবে প্রশ্ন উঠছে মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনার পরিকল্পনা নিয়েও। এই ম্যাচের শুরুতে মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগের চার ফুটবলার বদলে দেন তিনি। মোলিনা হয়তো ভেবেছিলেন, পরিকল্পনা বদলে ফল আসবে। কিন্তু যে দল কয়েক দিন আগেও তরতর করে এগোচ্ছিল, সেই দলকেই অনেক বেশি মন্থর দেখাচ্ছে। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকলেও লিগের এমন পরিস্থিতিতে পয়েন্ট নষ্টের খেসারত দিতে হতে পারে বাগানকে। চিন্তা বাড়ছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদেরও।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশে বড় বদল
চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে মোহনবাগানের প্রথম একাদশে অনেক বদল করেছিলেন কোচ মোলিনা। শুরু থেকে খেলেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট ও দিমিত্রি পেত্রাতোস। সুহেল ভট্ট, অভিষেক সূর্যবংশীকেও প্রথম একাদশে রাখেন কোচ। বাদ পড়েন জেমি ম্যাকলারেন, জেসন কামিন্স, লিস্টন কোলাসো ও মনবীর সিংহ। খেলার ছকই বদলে দিয়েছিলেন মোলিনা। তাতেও কাজ হল না।
বাগান চাপ বাড়ালেও জমাট রক্ষণ চেন্নাইয়িনের
খেলার শুরু থেকেই চাপ বাড়াতে থাকে মোহনবাগান। স্টুয়ার্ট খেলা তৈরি করছিলেন। পেত্রাতোস অনেকটা সামনের দিকে খেলছিলেন। দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠছিলেন আশিস রাই ও শুভাশিস বসু। বাগানের আক্রমণের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়িনের কোচ ওয়েন কয়েল জমাট রক্ষণের পরিকল্পনা করেছিলেন। আক্রমণ করলেও ফাঁক পাচ্ছিলেন না বাগান ফুটবলারেরা। চেন্নাইয়িনের রক্ষণ ভাঙতে পারছিলেন না স্টুয়ার্টরা। তাই গোল আসছিল না। বেশির ভাগ খেলাটাই মাঝমাঠে হচ্ছিল।
প্রতি-আক্রমণ থেকে জর্ডনের শট পোস্টে
চেন্নাইয়িনের খেলার কৌশল ছিল প্রতি-আক্রমণ নির্ভর। সেই কৌশলের গোল করার সহজতম সুযোগ পেয়েছিলেন উইলমার জর্ডন। কোনর শিল্ডের ক্রস নামিয়ে রক্ষণকে বোকা বানিয়ে গোলের সামনে পৌঁছে যান তিনি। শটও মারেন। তা পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। ৩০ মিনিটের পর থেকে আক্রমণের চাপ বাড়ায় চেন্নাইয়িন। বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে তারা। কিন্তু সবুজ-মেরুন রক্ষণও জমাট ছিল। ফলে গোল করতে পারেনি অভিষেক বচ্চনের দল।
সুযোগ নষ্ট সুহেলের
প্রথমার্ধে বাগানের হয়ে সবচেয়ে ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন সুহেল। বক্সের মধ্যে ঢুকে নিজেই শট মারতে যান। বল পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। অথচ বক্সের মধ্যে অরক্ষিত অবস্থায় ছিলেন স্টুয়ার্ট। সুহেল তাঁকে পাস দিলে এগিয়ে যেতে পারত বাগান। গোলশূন্য শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বাধ্য হয়ে তিন বদল বাগান কোচের
আক্রমণ থেকে ফসল তুলতে পারছিল না বাগান। দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছবি দেখা যাচ্ছিল। কয়েকটি ম্যাচ না খেলায় পেত্রাতোসের দূর থেকে শট মারার প্রবণতা বেড়েছে এই ম্যাচে। যেখানে বল পেয়েছেন শট মেরেছেন। ফলে বেশ কয়েকটি আক্রমণ মাঠে মারা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনটি বদল করেন বাগান কোচ মোলিনা। সুহেল, দীপক টাংরি ও পেত্রাতোসকে তুলে মনবীর, লিস্টন ও ম্যাকলারেনকে নামিয়ে দেন তিনি। তাতে বাগানের আক্রমণ আরও বেড়ে যায়। দুই প্রান্ত ধরে লিস্টন ও মনবীর সুযোগ তৈরি করতে থাকেন। কিন্তু গোল আসছিল না।
সময় নষ্টের খেলা চেন্নাইয়িনের
ঘরের মাঠেও হয়তো ১ পয়েন্টের জন্যই নেমেছিল চেন্নাইয়িন। দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলল তারা। সময় নষ্ট করলেন ফুটবলারেরা। বাগানের আক্রমণের ছন্দ নষ্ট করার চেষ্টা করলেন। তাতে সফলও হল চেন্নাই। রক্ষণে লোক বাড়িয়ে ঝাঁপ বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন কোচ কয়েল। বাধ্য হয়ে জেসন কামিংসকেও নামিয়ে দেন বাগান কোচ। ৩ পয়েন্টের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১ পয়েন্ট নিয়েই ফিরতে হচ্ছে তাঁকে।