মোহনবাগানের পেত্রাতোস (বাঁ দিকে) এবং কামিংস। ছবি: আইএসএল
শনিবার আইএসএলের ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হেরে গেলেও মোহনবাগান শিবির পুরোপুরি হতাশায় ডুবে যায়নি। এখনও তাঁরা মেতে লিগ-শিল্ড জয়ের আনন্দে। তবে দুঃখের কারণ একটাই, আইএসএল ফাইনালে জিতে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে না পারার। আপাতত সব কিছুই ভুলে মোহনবাগানের ফুটবলারেরা চাইছেন এশীয় মঞ্চে ক্লাবের নাম উজ্জ্বল করতে। লিগ-শিল্ড জয়ের সুবাদে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সারিতে খেলবে মোহনবাগান। ফুটবলারেরা চান, সেখানে ভাল খেলে ক্লাব তথা দেশের নাম উজ্জ্বল করতে।
হারের পর ফাইনালের গোলদাতা জেসন কামিংস আইএসএলের ওয়েবসাইটে বলেছেন, “ফাইনালে যারা ভাল খেলেছে তারাই জিতেছে। আমার মতে, জেতার তাগিদটা ওদেরই বেশি ছিল। তাই ওরাই ভাল খেলেছে। ফুটবলে এ রকমই হয়। কখনও জয় আসে, কখনও হার। জীবনও এ রকমই।”
ফাইনালে হেরে যাওয়ায় যে ভেঙে পড়েননি সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলারেরা, কামিংসের কথায় সেই ইঙ্গিতই স্পষ্ট। বলেছেন, “ইতিবাচক দিকগুলোই মনে রাখতে হবে। এই মরসুম আমাদের ভালই কেটেছে। শিল্ড জয় মনে থাকবে। ফাইনালটা সমর্থকদের জন্য জিততে চেয়েছিলাম। ওঁরা সারা মরশুম আমাদের পাশে ছিলেন। আমাদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন। ফাইনালেও প্রচুর সমর্থক এসেছিলেন। কী আর করা যাবে, দিনটা আমাদের ছিল না।”
আইএসএল শেষ হতেই অবশ্য আগামী মরসুমের ভাবনা শুরু হয়েছে মোহনবাগানে। পরের বার অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছে তারা। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলবে। এই প্রতিযোগিতায় মোহনবাগানের অভিযান শুরু হওয়ার কথা আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে।
কামিংস পরের মরসুম নিয়ে আগ্রহী। এই মরসুমে ১২টি গোল করা ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড বলেছেন, “পরের মরসুমের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে মাঠে ফিরব। সেই দিনের অপেক্ষাতেই আছি। এএফসি-তে (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২) আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের সেই ক্ষমতা অবশ্যই আছে। অনেক কিছু শিখতে হবে। তার আগে ছুটিটা উপভোগ করে নিই। লম্বা মরসুম পেরিয়ে এসেছি। এখন দেশে ফিরে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাব।”
কামিংসের সতীর্থ দিমিত্রি পেত্রাতোস ফাইনালে হার নিয়ে বলেছেন, “ফাইনালের দিনটা আমাদের ছিল না। ভাল খেলেছি ঠিকই। সব ম্যাচ তো আর জেতা যায় না। সতীর্থদের নিয়ে গর্বিত। সারা মরসুমে প্রত্যেকে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। শুধু ফাইনালের দিনই তা হয়নি।”
এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। একই অঞ্চলে কাতারের আল ঘারাতা, উজবেকিস্তানের নাসাফ এফসি, তাজিকিস্তানের ইস্তিকলল এফসি ইতিমধ্যেই রয়েছে। এ ছাড়া সৌদি আরব, ইরাক, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, জর্ডন ও বাহরিনের ভাল ক্লাবগুলিরও খেলার কথা। তাদের বিরুদ্ধে ভাল ফল করতে হলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে দলে আরও কয়েকজন ভাল ফুটবলার দলে এনে পারফরম্যান্সেও অনেক উন্নতি করতে হবে।
ফাইনালের পর দেশে ফেরার আগে মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস বলেছিলেন, “পরের মরসুমে আরও শক্তিশালী দল গড়ব আমরা। কাদের ছাড়া হবে সেই সিদ্ধান্ত ফুটবলারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করার পরই নেওয়া হবে।” শোনা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই নতুন দল গঠন নিয়ে কোচের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।