Best XI of ISL 2023-24

আনন্দবাজার অনলাইনে আইএসএলের সেরা একাদশ, জায়গা পেলেন বাগানের পাঁচ, বাকি ছয় কারা?

শেষ হয়েছে আইএসএলের দশম মরসুম। আট মাসের ফুটবল লড়াই শেষ হয়েছে শনিবার। ১২টি ক্লাব লড়াই করেছে আইএসএলের লিগ-শিল্ড এবং কাপের জন্য। মরসুম শেষে সেরা একাদশ বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ১৭:৫৪
Share:

দিমিত্রি পেত্রাতোস। — ফাইল চিত্র।

শেষ হয়েছে আইএসএলের দশম মরসুম। আট মাসের ফুটবল লড়াই শেষ হয়েছে শনিবার। ১২টি ক্লাব লড়াই করেছে আইএসএলের লিগ-শিল্ড এবং কাপের জন্য। শেষ পর্যন্ত লিগ-শিল্ড জিতেছে মোহনবাগান। তবে সবুজ-মেরুনকে হারিয়ে বদলা নিয়ে কাপ জিতে নিয়েছে মুম্বই।

Advertisement

এ বারের আইএসএলে ছ’টি দলের কাপ জেতার সম্ভাবনা ছিল। তবে গোটা মরসুম জুড়ে যে দু’টি দল সবচেয়ে ভাল এবং ধারাবাহিক খেলেছে, সেই মোহনবাগান এবং মুম্বই সিটির মধ্যেই লিগ-শিল্ড এবং কাপের লড়াই হয়েছে। মরসুমের শেষে আনন্দবাজার অনলাইন বেছে নিল এ বারের আইএসএলের সেরা একাদশ।

বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিচার করেই এই একাদশ গড়া হয়েছে। শুধু পরিসংখ্যান নয়, দেখা হয়েছে কোন খেলোয়াড় মাঠে প্রভাব ফেলেছেন বেশি। গোল, অ্যাসিস্ট বা ট্যাকলে সবার উপরে না-ই থাকতে পারেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অবদান রাখার ক্ষেত্রে এগিয়ে, এমন ফুটবলারদেরই বেছে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সে কারণেই আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা দিমিত্রি দিয়ামানতাকোসের প্রথম একাদশে জায়গা হয়নি। সুযোগ পেয়েছেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। যে হেতু মোহনবাগান এবং মুম্বই সবচেয়ে ভাল খেলেছে, তাই প্রথম একাদশে তাদের ফুটবলারই বেশি। তবে প্লে-অফে যারা উঠেছে বা তার বাইরে যাঁরা ভাল খেলেছেন, তাঁদেরও ১৮ জনের দলে রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইনের সেরা একাদশ সাজানো হয়েছে ৪-১-৩-২ ছকে। গোলকিপার হিসাবে খেলবেন বিশাল কাইথ। মোহনবাগানের ফুটবলার ২৫টির মধ্যে ৯টি ম্যাচে গোল খাননি। ৫০টি সেভ করেছেন। দু’-একটি ম্যাচে খারাপ খেললেও সার্বিক ভাবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

রক্ষণে দুই সাইডব্যাক হিসাবে থাকবেন মুম্বইয়ের দুই খেলোয়াড় রাহুল ভেকে এবং আকাশ মিশ্র। রাহুল ২৩টি ম্যাচে ২১টি সফল ট্যাকল করেছেন। নিখুঁত পাসিং, ইন্টারসেপশন, বল কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাকিদের থেকে এগিয়ে। দরকারে উপরে উঠে উইংয়ের খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে পারেন। একই কথা প্রযোজ্য আকাশের ক্ষেত্রেও। তিনি কাপ ফাইনালে খেলতে না পারলেও রক্ষণে পারদর্শী। শূন্যে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে বাকিদের থেকে। প্রয়োজনে মিডফিল্ডেও খেলতে পারেন।

দুই সেন্টার ব্যাকে রাখা হয়েছে মোহনবাগানের হেক্টর ইয়ুস্তে এবং আনোয়ার আলিকে। আইএসএলের প্রথম মরসুমেই হেক্টরের পারফরম্যান্স মন জয় করেছে। ব্রেন্ডন হামিলের বদলে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছেন মোহনবাগানের কোচ। আনোয়ার যেমন রক্ষণে ভাল খেলতে পারেন, তেমনই উঠে গিয়ে গোল বা অ্যাসিস্ট করতেও জুড়ি নেই। শক্তিশালী হওয়ায় শারীরিক দ্বৈরথেও টেক্কা দিতে পারেন বাকিদের।

চার ডিফেন্ডারের সামনে ব্লকার হিসাবে থাকবেন আহমেদ জাহু। ওড়িশার ফুটবলার দলের সেমিফাইনালে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। রক্ষণ চাপে পড়লে নেমে এসে যেমন সাহায্য করতে পারেন, তেমনই উঠে গিয়ে বল বাড়াতেও পারেন স্ট্রাইকারদের। নিজেও গোল করতে পারেন। সবচেয়ে নজরকাড়া তাঁর পাস দেওয়ার দক্ষতা। পাসিংয়ের সংখ্যায় বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে।

জাহুর সামনে রাখা হয়েছে তিন মিডফিল্ডার। বাঁ দিক থেকে খেলবেন লিস্টন কোলাসো। মোহনবাগানের ফুটবলারকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। উইং ধরে দৌড়ই হোক, বা ভেতরে ঢুকে এসে গোলে শট, সবেতেই তিনি পারদর্শী। গত বার ফর্মে না থাকলেও এ বার জুয়ান ফেরান্দো এবং আন্তোনিয়ো হাবাস— দু’জনকেই ভরসা দিয়েছেন।

একই রকম ভাবে ডান দিকের উইংয়ে খেলবেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। গোটা মরসুমে খুবই ভাল খেলেছেন। বস্তুত, মুম্বইয়ে যাওয়ার পর তাঁর আসল প্রতিভা বোঝা গিয়েছে। কাপ ফাইনালে শুভাশিস বসুকে বারংবার বিব্রত করেছেন। ভেতরে ঢুকে এসেছেন। দু’বার গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। গোলের সুযোগ তৈরি করা সেট-পিস নেওয়া, সবেতেই তিনি দক্ষ। মাঝখানে রাখা হয়েছে গোয়ার ব্রেন্ডন ফের্নান্দেসকে। সুযোগ তৈরি করায় তিনি সুদক্ষ। গোলও করতে পারেন দলের প্রয়োজনে। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার একটা দক্ষতা রয়েছে।

আইএসএলের সেরা একাদশ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্ট্রাইকার হিসাবে রাখা হয়েছে রয় কৃষ্ণ এবং পেত্রাতোসকে। মোহনবাগানের ফুটবলারকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কোনও জায়গা নেই। গোল যেমন করেছেন, তেমনই সুযোগ তৈরি করেছেন বিস্তর। হাবাস তাঁকে একটু পিছন থেকে খেলানোয় গোলের সংখ্যা হয়তো বাড়েনি। কিন্তু সুযোগ তৈরি করতে সিদ্ধহস্ত অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলার। শারীরিক ভাবে শক্তিশালী হওয়ায় ডিফেন্ডারদের সঙ্গে দ্বৈরথে জিততে পারেন অনায়াসেই।

কৃষ্ণকে রাখা হয়েছে স্রেফ তাঁর পরিশ্রম করার ক্ষমতার কথা ভেবে। দিয়ামানতাকোস মূলত বক্স স্ট্রাইকার। কিন্তু কৃষ্ণ গোলের খোঁজে নীচে নেমে আসতে পারেন। মাঝমাঠ থেকে একক দক্ষতায় বল টেনে নিয়ে গিয়ে গোল করতে পারেন। পায়ের কাজও বাকিদের থেকে অনেক ভাল। এ বার ১৩টি গোল করেছেন।

নিয়ম মেনেই সাত জন ফুটবলার রাখা হয়েছে পরিবর্ত হিসাবে। দুই বিকল্প গোলকিপার মুম্বইয়ের ফুর্বা লাচেনপা এবং ওড়িশার অমরিন্দর সিংহ। স্ট্রাইকার হিসাবে দিয়ামানতাকোসের সঙ্গে রাখা হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের ক্লেটন সিলভাকে। মিডফিল্ডারদের বিকল্প হিসাবে রাখা হয়েছে মোহনবাগানের মনবীর সিংহ এবং ইস্টবেঙ্গলের নাওরেম মহেশকে। ডিফেন্ডার হিসাবে থাকবেন মুম্বইয়ের মেহতাব সিংহ।

এই দলের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement