Mohun Bagan

রুদ্ধদ্বার অনুশীলনে দিমিত্রিদের নিয়ে সেট-পিসে জোর হাবাসের

আইএসএল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষাতের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে মোহনবাগান শিবিরে যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। যুবভারতীর অনুশীলন মাঠ পুরোটাই কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩২
Share:

নির্দেশ: ওড়িশা-দ্বৈরথের প্রস্তুতিতে হাবাস। মোহনবাগান এক্স।

ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে শেষ চারের প্রথম পর্বের দ্বৈরথে তিন মিনিটের মধ্যে দিমিত্রি পেত্রাতসের কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে মনবীর সিংহ এগিয়ে দিয়েছিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে। আবার ১১ মিনিটে আহমেদ জাহুর কর্নার গোলরক্ষক বিশাল কেইথ ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় হেড করে সমতা ফিরিয়েছিলেন কার্লোস দেলগাদো। সেট-পিস এক দিকে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের অন্যতম সেরা অস্ত্র, পাশাপাশি অস্বস্তিও বাড়াচ্ছে!

Advertisement

আইএসএল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষাতের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে মোহনবাগান শিবিরে যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। যুবভারতীর অনুশীলন মাঠ পুরোটাই কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা। রণকৌশল ফাঁসের আশঙ্কায় মাঠের অন্তত পাঁচশো মিটার আগে আটকে দেওয়া হল সমর্থক ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের। ছাড় পেলেন শুধু সালকিয়া থেকে আসা নীলাঞ্জন সামন্ত। তাঁর বোন অপর্ণা আশিস রাইয়ের ছবি এঁকেছেন। অনুশীলনের পরে সবুজ-মেরুন তারকার হাতে তা তুলে দিলেন নীলাঞ্জন।

চরম গোপনীয়তার মধ্যে শুক্রবার সন্ধেয় হাবাস সবচেয়ে বেশি জোর দিলেন সেট-পিস মহড়ায়। রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে স্পেনীয় কোচের ভাবনায় প্রথম একাদশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে মাঠের এক প্রান্তে চলে গেলেন ম্যাচ অনুশীলন শেষ করেই। এ বার শুরু হল সেট-পিস। দুই প্রান্ত দিয়ে মনবীর সিংহ, লিস্টন কোলাসো-রা বল নিয়ে উঠে পেনাল্টি বক্সে সেন্টার করছেন, গোল করার জন্য ঝাঁপাচ্ছেন জেসন কামিংস, দিমিত্রি-রা।

Advertisement

গোল হলে হাবাস খুশি হচ্ছিলেন, আবার রেগেও যাচ্ছিলেন! কারণ, গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডার-রা গোল আটকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। অনুশীলন থামিয়ে হাবাস কখনও বিশালকে ডেকে নিয়ে বোঝাচ্ছিলেন কর্নার বা ফ্রি-কিকের সময় কোথায় দাঁড়ানো উচিত। কখনও আবার হেক্তর ইউতসে, আনোয়ার আলি, শুভাশিস বসুদের পরামর্শ দিচ্ছিলেন।

ভুবনেশ্বরে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দেলগাদো গোল করেছিলেন বিশালের ভুলে। রয় কৃষ্ণের গোলের জন্য দায়ী ছিলেন হেক্তর। যদিও সবুজ-মেরুন কোচ তা মনে করেন না। তাঁর মতে, হেক্তরকে যদি এক জন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার সাহায্য করতেন, তা হলে কৃষ্ণ গোল করতে পারতেন না। শুক্রবারের অনুশীলনে হাবাসকে বারবারই দেখা গিয়েছে, বিপক্ষের আক্রমণের সময় ডিফেন্ডার-রা কোথায় এবং কী ভাবে দাঁড়াবেন তা দেখিয়ে দিচ্ছেন।

ভুল-ত্রুটি শুধরে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হেক্তর নিজেও। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই ওড়িশা স্ট্রাইকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যুবভারতীতে কৃষ্ণ গোল করতে পারবে না। আমিই ওকে আটকাব।’’ শুক্রবারের অনুশীলনে বাড়তি পরিশ্রম করলেন মোহনবাগান রক্ষণের অন্যতম প্রধান ভরসা। সতীর্থদের ভুলও শুধরে দিচ্ছিলেন হেক্তর। প্রথম পর্বের দ্বৈরথে লাল কার্ড দেখায় রবিবার খেলতে পারবেন না আর্মান্দো সাদিকু। তাঁর জায়গায় শুরু করার সম্ভাবনা প্রবল কামিংসের। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার অনুশীলনে যে ভাবে নিজেকে উজাড় করে দিলেন, হাবাসের দুশ্চিন্তা অনেকটাই দূর হবে প্রথম একাদশ বাছার ক্ষেত্রে। দলে ফিরতে মরিয়া সাহাল আব্দুল সামাদও। ভুবনেশ্বরে দলের সঙ্গে গেলেও তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নেননি সবুজ-মেরুনের কোচ। যুবভারতীতে মরণ-বাঁচন ম্যাচে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে সাহালকে ফেরাতে পারেন হাবাস।

সবুজ-মেরুনের আরও এক তারকা মুখিয়ে রয়েছেন যুবভারতীতে জবাব দেওয়ার জন্য। তিনি, দিমিত্রি। বৃহস্পতিবার তিনি দাবি করেছিলেন, এই ম্যাচে এগিয়ে থাকবে মোহনবাগান। এ দিন অনুশীলন শেষ করে দিমিত্রি বললেন, ‘‘ওড়িশাকে হারানোর ব্যাপারে আমরা প্রবল ভাবেই আত্মবিশ্বাসী। এই ম্যাচে নিজেকে উজাড় করে দেওয়াই লক্ষ্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement